ইসলামপুরে গণপিটুনিতে নিহত ১, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
Thumbnail image
উদ্ধার করা অস্ত্র, গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার যমুনার দুর্গম জিগাতলা গ্রামে গণপিটুনিতে সেতাব আলী (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ডাকাতি এবং অস্ত্র মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরাও মারধরের শিকার হয়েছেন। এছাড়া একাধিক মামলার আসামি যমুনা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পলাতক রয়েছেন।

আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ইসলামপুর থানা কম্পাউন্ডে ঘটনার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ইসলামপুর থানা-পুলিশ যমুনার দুর্গম জিগাতলা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায়। স্থানীয়দের সহায়তায় সাত্তার ডাকাতের ছেলে ইসমাইল (৩২) এবং দেলবার আলীর ছেলে সুরমান আলীকে (৩৫) আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুটার গান, আট রাউন্ড গুলি এবং একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।

আটক করার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আটক দুই ব্যক্তি আহত হন। পরে তাঁদের ইসলামপুর থানায় নেওয়ার সময় খবর আসে, স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ডাকাত সন্দেহে সেতাব আলী নামে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।

আহত সেতাব আলী ও আটককৃত ইসমাইলকে প্রথমে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেতাব আলীকে পাঠানো হয়। গভীর রাতে সেতাব আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইসমাইলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামছুজ্জামান বাদী হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি অভিযোগে এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুইটি মামলা করেছেন।

মামলার বাদী এসআই শামছুজ্জামান বলেন, ইসমাইল এবং সুরমান আলীর বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির অভিযোগ মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অস্ত্র আইনের মামলা করা হয়েছে ইসমাইলের বিরুদ্ধে।

নিহত সেতাব আলীর ছেলে সুজন মিয়া অভিযোগ করেন, ‘বাবাকে পুলিশের উপস্থিতিতেই প্রতিপক্ষের লোকজন মারধর করেছে। ডাকাতদের বিরুদ্ধে অন্যায় প্রতিবাদ করায় তাকে মারা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করেনি বলেও আমাদের সন্দেহ।’

সেতাব আলীর জেঠাতো ভাই আজিজুল হক দাবি করেন, ‘ডাকাত সর্দার ইদ্রিস আলীর লোকজন শত্রুতার জের ধরে সেতাব আলীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

ইসলামপুর থানার ওসি মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। যথাসময়ে না পৌঁছতে পারলে, আরও অনেকেই গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটার শঙ্কা ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘যমুনার দুর্গম জিগাতল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি দখল, খুন, ডাকাতি এবং বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুই ডাকাতকে আটক করা হলেও একাধিক মামলার আসামি নবী যমুনা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়।’

ইসলামপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাস বলেন, ‘এলাকার দুর্গম অবস্থানের কারণে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। সেতাব আলীকে যথাসম্ভব দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামছুজ্জামান ডাকাতির প্রস্তুতি এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। আটক সুরমান আলীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং ইসমাইল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত