রাজশাহী সিটি করপোরেশন: বাতিল হচ্ছে ৪০০ কোটির ‘অপ্রয়োজনীয়’ কাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ২৬
ফাইল ছবি

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) উন্নয়ন প্রকল্প থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ‘অপ্রয়োজনীয়’ কাজ বাতিল হচ্ছে। বরাদ্দের এই অর্থ প্রান্তিক নগর উন্নয়নে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। এরপরই মূল প্রকল্প থেকে কিছু প্রকল্প বাতিলের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে নগর সংস্থা। 

আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন ২০১৮ সালে দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরের বছর একনেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়। এটিই এখন পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

এই ৩ হাজার কোটি টাকার ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর উন্নয়ন’ নামের এই প্রকল্পের অধীনে চলছে নানা কাজ। এর মধ্যে সাতটি উন্নয়নকাজ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রেলক্রসিংয়ের ওপর দুটি উড়ালসেতু, ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে খায়রুজ্জামান লিটনের বাবা জাতীয় নেতা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের সমাধিস্থলে স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ, ৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরের হড়গ্রামে কাঁচাবাজার নির্মাণ, সিটিহাট সড়কের পাশে ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকায় শেখ জামাল কনভেনশন হল নির্মাণ, চারটি ফুটওভার ব্রিজ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলের কার্যালয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পই সিটি করপোরেশন গ্রহণ করেছিল। প্রান্তিক পর্যায়ে এখনো রাস্তা ভাঙা। পাড়া-মহল্লায় সড়কবাতি নেই অনেক জায়গায়, আবার শহরে আলোর ঝলকানি। তাই অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন বন্ধ করে সুষম উন্নয়নটা খুবই জরুরি।

‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ শুরুর পর প্রশস্ত সড়ক, সবুজায়ন আর আলোকায়ন করে সারা দেশে হইচই ফেলে দেয় রাজশাহী। তবে নাগরিক সমাজে আপত্তি ওঠে প্রকল্পের অধীনে থাকা কিছু কাজ নিয়ে। সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে রেলক্রসিংয়ের ওপর মোট কয়েকটি উড়ালসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। প্রশ্ন ওঠার কারণে দুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দরপত্র সম্পন্ন হয়ে কাজ শুরু হওয়া অন্য চারটি উড়ালসেতুর কাজ চলমান। কাজ শুরু হয়ে যাওয়া আরেকটি উড়ালসেতুর নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাসিক। 

রাসিক সূত্রে জানা যায়, জনমুখী নয় বিবেচনায় বাতিল হচ্ছে নগরের কোর্ট স্টেশন রেলক্রসিংয়ের ওপর উড়ালসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা। ১১৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় এটি নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। নগরের ভদ্রা এলাকায় ১১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা করে রাসিক। প্রয়োজন নেই বিবেচনায় এই কাজও প্রকল্প থেকে বাতিলের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আর নকশা পরিবর্তন করা হবে নগরের রেলগেট থেকে নিউমার্কেট এলাকায় নির্মাণাধীন উড়ালসেতুর। 

এদিকে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ও নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ২৮ কোটি টাকায় আরও চারটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এগুলো নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছে সিটি করপোরেশন। সব মিলিয়ে ৩৯৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার কাজ বাতিল করার সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। 

সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বলেন, জনমুখী নয় এমন কাজগুলো প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এখানে যে অর্থ সাশ্রয় হবে,তা দিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে উন্নয়নকাজ বাস্তবায়িত হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত