Ajker Patrika

পাবনায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, মামলা না করতে হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯: ৪৬
পাবনায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, মামলা না করতে হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের

নাকে খত আর হাজার টাকা জরিমানা করে পাবনার বেড়ায় ধর্ষণের ঘটনা মিমাংসার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তবে ভুক্তভোগীর অভিযোগে গত শনিবার অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগে জানা যায়, ওই দিন (বুধবার) উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শফিক ওই গৃহবধূর (৩০) ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসলে অভিযুক্ত পালিয়ে যান। 

ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে এক সালিসি বৈঠক হয়। সেখানে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদারের নেতৃত্বে অভিযুক্তকে নাকে খত, জুতাপেটার পাশাপাশি এক হাজার টাকা জরিমানা করে ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়। 

এ সময় ভুক্তভোগীকে এ নিয়ে কোনো মামলা বা ঝামেলা না করতেও হুমকি দেন ইউপি চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর অভিযোগে গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযুক্ত শফিককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। 

ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমার স্ত্রীর ইজ্জতের মূল্য কি এক হাজার টাকা? সেখানে আমাকে অনেক ভয় দেখানো হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেছে-‘তুই যদি মামলা-মোকদ্দমায় যাস, তাহলে আমি বলে দেব তুই তোর স্ত্রীকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করাস’, এ জন্য আমি প্রথমে পুলিশের কাছে যাইনি। আমি আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও তামাসার বিচারের বিচার চাই।’ 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার বলেন, ‘আমার কাছে উভয় পক্ষ আসলে আমি স্থানীয় মেম্বরদের সহযোগিতায় একটি সালিসে বৈঠক করেছি। সেখানে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ ছিল না। তারপরও যেহেতু একজন নারীর ঘরে বিনা অনুমতিতে ঢুকেছিল এ জন্য আমার তাকে (অভিযুক্ত) কান ধরে ওঠবস করানো হয়েছে। কিন্তু কোনো জরিমানা করা হয়নি। যে এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে সেটা জরিমানা নয়, ওটা গ্রাম্য পুলিশদের খরচ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। তখন উভয় পক্ষ আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। এখন তারা মানছে না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল ও প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। যেহেতু তারা সিদ্ধান্ত না মেনে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন আইনের মাধ্যমে যা হয়, তা হবে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’ 

এ বিষয়ে বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত