বসে থাকলে কেউ কি আজ খাবার দেবে?

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ মে ২০২৩, ১২: ০৬
Thumbnail image

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া গ্রামের বাসিন্দ মো. ইনসান আলী। বয়স প্রায় ৭০ বছর। তিনি কামারের কাজ করেন বালাসী রোডের কঞ্চিপাড়া এলাকায়। যে সময় গাইবান্ধাসহ দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শ্রমজীবী সংগঠন তাদের দাবি আদায়ে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা করছে। সেই সময় আহারের জন্য কাজ করছেন ইনসান আলী। কেননা, তাঁর রোজগারের টাকায় চলে সংসার। প্রতিদিন যে টাকা আয় করেন, সেই টাকায় চলে আট সদস্যের সংসার।  

ইনসান আলী জানেন না আজ পয়েলা মে। দিনটি সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণাও নেই। এই দিন সম্পর্কে কথা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্ধের দিন হলেই হবে? কাজ না করলে খামু কী? বসে থাকলে কেউ কি আজ খাবার দেবে? পাকিস্তান আমল থেকেই এই কামারির কাজ করি।’ এই সময়টা বসে থাকার সময় নয়। এখন ধান কাটার সময়। এই সময় কাঁচির কাজ বেশি হয়। এখন একটু বেশি টাকা ইনকাম হয়। সেই দিনের টাকা দিয়ে চাল, ডাল তরকারিসহ সংসারের অন্যান্য দায় মেটান। তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে জিনিসের যে দাম, তা তো কেউ কমবার পায় না। ছুটি ভোগ করলে হামার মতো কামলারা এই দিন কী খায়ে বাঁচবে?’ 

শহরে মোটরসাইকেলের গ্যারেজে কাজ করছেন রাজু মিয়া। তিনি বলেন, ‘কিসের ছুটি! এক দিন অসুখ হয়ে ঘরে পড়ে থাকলেই খাবার জোটে না। যে আকালের দেশ, তাতে আবার বসে থাকা আছে? দিনের আয় দিয়ে দিনেই সংসার চলে না!’ 

শহরের কাপড়ের দোকানের কর্মচারী হেলাল মিয়া বলেন, ‘ঈদের দিন থেকে লম্বা ছুটি কাটিয়েছি। সেই সময় পুষিয়ে দিতে আজও কাজে আসা তাঁর। তিনি আরও বলেন, ছেলেমেয়ে নিয়ে নিজের বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চলে না। তার পরও বেড়েছে ছেলেমেয়ের বই খাতার দাম আর স্কুলের বেতন। তাই ঘরে বসে থাকার সময় নেই।’ 

চায়ের দোকানদার বেলাল মিয়া বলেন, ‘দেশের অবস্থা অতটা ভালো নয়। লোকজন চায়ের দোকানে আগের মতো আড্ডা দিয়ে আর চা খায় না। এখন ট্যাকা পয়সার দরকার। তার পরও ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো নয়। এ জন্যই ছুটির দিনও দোকানদারি করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত