Ajker Patrika

পুঁজিবাজারে টানা দরপতন: তিন বছরের মধ্যে সূচক সর্বনিম্নে

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
পুঁজিবাজারে টানা দরপতন: তিন বছরের মধ্যে সূচক সর্বনিম্নে

পতন থামছে না দেশের পুঁজিবাজারে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার প্রায় ৭০ পয়েন্ট পতনে সূচক প্রায় তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা দিন দিন ভারী হচ্ছে।

পুঁজিবাজারের পতনের পেছনে সুদের হার বেশি হওয়ায় তারল্যসংকট, বড় বিনিয়োগকারীদের সাইডলাইনে থাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার হুটহাট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অপ্রয়োজনীয় ঘোষণা, ভালো কোম্পানির অভাব, গুজব, মার্জিন ঋণের ফোর্সড সেল ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় আসছে। তবে সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৩ কর্মদিবসের মধ্যে তিন দিন উত্থান দেখা গেছে। দরপতন ও মূল্যবৃদ্ধির অনুপাত কাছাকাছি হলে বিষয়টি পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক ঘটনা হতো। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় দরপতন বহুগুণ বেশি।

২৩ কর্মদিবস আগে ১১ ফেব্রুয়ারি সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। গতকাল সেটি নেমে এসেছে ৫ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে। সূচকের এই অবস্থান ২০২১ সালের ২৫ মের পর সর্বনিম্ন। ওই দিন সূচক ছিল ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্ট। এরপর সূচকটি আর এত নিচে নামেনি।

এদিকে লেনদেন নেমে এসেছে ৪৮৬ কোটির ঘরে। সর্বশেষ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে ১৯ কর্মদিবস আগে, ১৫ ফেব্রুয়ারি। বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অনেক দিন শেয়ার ফ্লোর প্রাইস আটকে ছিল, লেনদেন হয়নি। অনেকের টাকার প্রয়োজন ছিল, সেটা তুলে নিচ্ছে। কেউ হয়তো ভয় পেয়ে বিক্রি করছে। সরকারি ট্রেজারি বিলের সুদের হার সাড়ে ১১ শতাংশ। সুদের হার উচ্চ হলে শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ হয়।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ভালো কোম্পানির অভাব রয়েছে। তা ছাড়া সবাই অল্প সময়ে মুনাফা তুলতে চায়। বাজারে কোনো বিনিয়োগকারী নেই, সবাই ট্রেডার।

ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে বড় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সাইডলাইনে রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন আরিফ খান। তিনি বলেন, ‘যাঁরা বড় বিনিয়োগকারী, আমি চিনি যাঁদেরকে, তাঁদের সবাই বিনিয়োগ করে রেখেছেন। অধিকাংশের হাতে টাকা নেই।’

আরিফ খান যোগ করেন, যাঁদের কাছে টাকা আছে, তাঁদের বোর্ড অনুমোদন দিচ্ছে না। বেশির ভাগ ব্যাংকের বিনিয়োগের টাকা আছে, কিন্তু বিনিয়োগ করছে না। সব ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ট্রেজারি বন্ডে।

ডিএসইর সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, মার্জিন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে যাঁরা যোগ্য, ইক্যুইটি কমে গেলে নগদ টাকা দিতে সক্ষম হবেন, তাঁদেরই ঋণ দিতে হবে। তাহলে ফোর্সড সেল বন্ধ করা যাবে।

এদিকে বিএসইসির নির্দেশনায় ঘোষণা দিয়ে ২২টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত গুজব ছড়ানো হয়। এতে আতঙ্ক ছড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

এ বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ নির্বাহী মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ঘোষণা দিয়ে জেড ক্যাটাগরিতে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। আইন অনুযায়ী যেটা যাওয়ার, সেটা এমনিতেই নেওয়া যেত।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সাইবার স্পেসে যারা গুজব বা অসত্য তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করবে, তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত