আলু–পেঁয়াজের দাম কমেছে, ভোজ্যতেলে অস্বস্তি

  • নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি
  • দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০-১১০ টাকা
  • দাম বাড়ানোর পরও সরবরাহ কম ভোজ্যতেলের
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০: ৪২
ফাইল ছবি

বাজারে নতুন আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে, এতে দামও কিছুটা কমেছে। রাজধানীর বাজারগুলোয় নতুন আলুর দাম গত এক সপ্তাহে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এ ছাড়া পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২০ টাকা। তবে পুরোনো আলু ও পেঁয়াজের দাম আগের মতোই রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মানিকনগর, সেগুনবাগিচা, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে তিন ধরনের আলু বিক্রি হতে দেখা যায়—দেশি ও আমদানি করা পুরোনো আলু এবং নতুন দেশি আলু।

এর মধ্যে পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে নতুন আলু কিনতে হয়েছে কেজিপ্রতি ১২০-১৩০ টাকায়।

এ ছাড়া চার ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায় বাজারে। এগুলোর মধ্যে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ১০০-১২০ টাকা ছিল। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা কেজি, এক সপ্তাহ আগে যা ১২০-১৩০ টাকা কেজি ছিল। এ ছাড়া বাছাই করা কিছু দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি। বাজারে পাতাসহ মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে, এগুলোর দাম কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকা রাখছেন বিক্রেতারা।

পাইকারি বাজারগুলোয় এসব পণ্যের সরবরাহ বেড়েছে। গতকাল শ্যামবাজারে পাইকারিতে নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৭০-৭২ টাকা কেজি। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৭৬ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি।

দেশে মূলত আলু ও পেঁয়াজের মূল মৌসুম শুরু হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। তবে এর মধ্যে আগাম জাতের কিছু আলু ও পেঁয়াজ চাষ করেন উত্তরাঞ্চলের চাষিরা। এগুলো পরিমাণে অল্প হলেও বাজারে দামের উত্তাপকে কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

রাজধানীর রামপুরা বাজারের সবজি ও পেঁয়াজ বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাজারে আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ গত এক সপ্তাহে দ্বিগুণ বেড়েছে। কারণ, আমদানির সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় আগাম জাতের পণ্যও বাজারে আসছে। এই আগাম আলু-পেঁয়াজ শেষ হলেই মূল মৌসুমের পণ্য চলে আসবে। তাই এখন আর আলু-পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে কতটা কমবে, তা কৃষকের উৎপাদন খরচের ওপর নির্ভর করবে।

আলু ও পেঁয়াজের দাম দ্রুত কমলেও সবজির দাম কমছে খুবই ধীরগতিতে।

বাজারে টমেটোর কেজি এখনো ১৩০-১৫০ টাকা কেজি। অথচ শীতের অন্যান্য সবজির মতো দেশি টমেটোর সরবরাহও বেড়েছে।

রাজধানীর মানিকনগর বাজারের ক্রেতা একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, সরকার বাজার ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে। একটার দাম কমলে আরেকটা বেড়ে যাচ্ছে। যেসব পণ্যের দাম কমছে, তাতে সরকারের তেমন কোনো কৃতিত্ব নেই। সরবরাহ বাড়তে থাকায় কমছে। কিন্তু দাম কমার এই স্বস্তি ক্রেতা ভোগ করতে পারছে না। যথাযথ সরকারি উদ্যোগের কারণে কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে, কিছু পণ্যের ঘাটতি হচ্ছে।

বাজার তথ্য বলছে, দু-একটি ব্যতীত এখনো ৮০ টাকা কেজির নিজে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে শিম বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, শালগম ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, উচ্ছে ১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, ক্ষীরা ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা ও লাউ ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে এসব সবজির মধ্যে বেগুন, কাঁচা টমেটো, ক্ষীরা, বাঁধাকপি ও ফুলকপির মতো গুটিকয়েক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমলেও বাকিগুলো আগের মতোই রয়েছে।

বাজারের বিক্রেতা নূর আলম বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোয় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ট্রাক ঢুকতে না দেওয়া। বিশেষ করে কারওয়ান বাজারে সবজির ট্রাক ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তাঘাট ভাঙা থাকায় যাতায়াতের ভাড়াও বেশি লাগছে। এসব খরচ সবজির সঙ্গে সমন্বয় করছেন বিক্রেতারা। তাই দাম কিছুটা বাড়তি।

এদিকে দাম বাড়ার তিন দিন পরও ভোজ্যতেলের সরবরাহ না বাড়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন বিক্রেতারা। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোয় এখনো ভোজ্যতেলের সরবরাহ দেননি ব্র্যান্ড কোম্পানির প্রতিনিধিরা। অথচ গত সোমবার প্রতি লিটার তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের পাঁচটি মুদিদোকানের একটিতেও সয়াবিন তেল নেই। শুধু একটা দোকানে ৫ লিটারের পাম তেলের বোতল পাওয়া গেল।

গতকাল দুপুরে রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক বিক্রেতা রিকশায় করে ৫ লিটারের চার কার্টন তেল নিয়ে এসেছেন। মো. তৌহিদ নামের ওই বিক্রেতা বলেন, ‘কোম্পানির লোকজন তেলের সরবরাহ না দেওয়ায় ঠাটারিবাজার থেকে রিকশায় করে এই তেলগুলো কিনে আনলাম। গায়ের মূল্য ৮৫০ টাকা আর আমি কিনে আনলাম ৮৪০ টাকায়। লিটারে যে ২ টাকা কম রেখেছে, তা রিকশাভাড়াতেই চলে গেছে। এখন এই তেল বিক্রি করে আমার কোনো লাভ থাকবে না। তারপরও ক্রেতা ধরে রাখতে এই পরিশ্রম করতে হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলের ‘হৃৎপিণ্ড’ তেল আবিবে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

সাগরে নিম্নচাপ, কত দিন বৃষ্টি হতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর

শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমান যার যার স্থানে শ্রেষ্ঠ: গয়েশ্বর

র‌্যাব বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি: নূর খান লিটন

হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়াল টিউলিপের নামও

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত