নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় যুবলীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম আজাদ শেখ (৩২)। তিনি উত্তরপাড়ার সালাম শেখের ছেলে এবং পেড়লী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদ শেখের ছোট ভাই। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের পেড়লী গ্রামের মোহসিন চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পেড়লী গ্রামের আনিসুল ইসলাম বাবু শেখের সঙ্গে স্থানীয় শহীদুল মোল্লা ও লাভলু ভূঁইয়ার দ্বন্দ্ব চলছিল। নিহত আজাদ শেখ চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বাবু শেখের অনুসারী ছিলেন। গত চার-পাঁচ দিন আগে লাভলু ভূঁইয়ার লোকজনকে পেড়লী বাজার থেকে ধাওয়া দেয় বাবু চেয়ারম্যানের লোকজন। ওই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। 

বৃহস্পতিবার যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আজাদ শেখ পেড়লী গ্রামের মোহসিন চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ শহীদুল মোল্লা ও লাভলু ভূঁইয়ার লোকজন হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে তাঁকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আজাদকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার রাতে শহীদুল মোল্লা, আলীম মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা, জিন্নাহ মোল্লা, রেজাউল ইসলাম, মিটুল মোল্লা, খোকন, ওহিদুল, রাসেল, লাভলু ভূঁইয়া, আলমগীর ভূঁইয়া, অপু ভূঁইয়া, ফজলু ভূঁইয়ার বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আজাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পেড়লী গ্রামে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি। 

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমাদের পক্ষের আজাদ শেখকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। হত্যাকাণ্ডের পর একশ্রেণির সুযোগসন্ধানী লোক বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটাতে পারে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ 

শহীদুল ও লাভলু ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রতিপক্ষ বাবু চেয়ারম্যানের লোকজন চার-পাঁচ দিন আগে পেড়লী বাজারে আমাদের অপমান-অপদস্থ করে তাড়িয়ে দেয়। চেয়ারম্যান বাবুর দল বড় হওয়ায় আমরা চুপচাপ বাড়িতে থাকি। প্রতিপক্ষের ভয়ে পেড়লী বাজারে তেমন একটা যাই না। আজাদ শেখ হত্যাকাণ্ডে আমাদের লোকজন জড়িত নেই। এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা আমাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’