পরাগ মাঝি, ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের নাম করা আইনজীবী মেলভিন বেল্লির বসার ঘরে রাখা ফোনটি বেজেই চলেছে। এক-দুবার নয়, অনেকবার। কিন্তু আইনজীবী বাড়িতে নেই। তিনি ছিলেন ইউরোপ সফরে।
এতবার ফোন বাজার পর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোন ধরলেন এক গৃহকর্মী। ফোনের ওপারে থাকা লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমার জন্মদিন।’ গৃহকর্মী শুনে বললেন, ‘হ্যাপি বার্থ ডে।’ এবার লোকটি বললেন, ‘জানো আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’ গৃহকর্মী আর কী বলবেন, ভাবতে পারছিলেন না। শুধু জানতে চাইলেন, ‘কে তুমি?’ লোকটি বললেন, ‘জোডিয়াক।’ এরপর ফোন রেখে দিলেন।
এ ঘটনা ছিল ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বরের সন্ধ্যার। আর ফোন করা সেই লোকটি হলেন, বলে কয়ে খুন করে বেড়ানো পৃথিবীর দুর্ধর্ষতম সিরিয়াল কিলার জোডিয়াক। গত শতকের ’৬০ ও ’৭০-এর দশকে নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই খুনি।
শুধু আইনজীবী বেল্লির বাসাই নয়, তখনকার দিনের প্রভাবশালী সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলসহ সব পত্রিকায় তিনি খুন করার বার্তা দিয়ে একের পর এক চিঠি লিখতেন। আবার নিজের নাম-পরিচয় এবং ধরা পড়ার সূত্র উল্লেখ করে চিঠি লিখতেন পুলিশের কাছেও। তবে এসব সূত্র লিখতেন ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক ভাষায়, যার কোড আজ অবধি কেউ ভাঙতে পারেনি। তাই খুনিও অধরাই থেকে গেছেন।
জোডিয়াক কিলার তাঁর চিঠিতে নিজ হাতে ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। যদিও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাতটি নৃশংস খুনের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। আর এই বিষয়ে তদন্ত সংস্থাগুলোর লুকোছাপা করারও প্রবণতা ছিল। কারণ, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা যত বাড়ছিল, জোডিয়াক কিলারকে ধরার জন্য তাদের ওপর চাপও তত বাড়ছিল।
বেল্লির বাসায় ‘বার্থডে কল’ করা সেদিনের সেই জোডিয়াক তত দিনে বেশ কয়েকটি খুন করে ফেলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আবিষ্কার করেছিল, বেল্লির বাসায় ফোন করার ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মদিনের দিনটিতেই প্রথম স্বীকৃত হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছিলেন জোডিয়াক। সেদিন রাতে তাঁর শিকার ছিলেন দুই কিশোর-কিশোরী। এর মধ্যে ছেলেটির বয়স ছিল ১৭ বছর আর ১৬-তে পা রেখেছিল মেয়েটি। তবে এই বয়সেই তারা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দুই-তিন সপ্তাহ আগেই একটি চার্চে পরিচয় হয়েছিল তাদের। সেই থেকে শুরু।
ঘটনার দিন প্রথমবারের মতো ডেটিংয়ে বেরিয়েছিলেন ডেভিড আর বেটি। মায়ের র্যাম্বলার মডেলের স্টেশন ওয়াগন গাড়িটি সঙ্গে নিয়েছিলেন ডেভিড। গাড়ি যেহেতু আছে, প্রেমিকাকে নিয়ে শহরে আর থাকে কে? ডেভিডও তাই বেটিকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যালেজো শহরের বাইরে লেক হারম্যান রোডের লাভারস লেনে গিয়েছিল চুটিয়ে প্রেম করতে। প্রথম দিন বলেই হয়তো তাদের উত্তেজনা ছিল অনেক বেশি। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না একে অপরকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছিল লাভারস লেনে।
রাত ১১টা পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকাটিতে তাদের দেখতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ততক্ষণে নিরিবিলি হয়ে এসেছিল চারপাশ। তারপরই ঘটে সেই ঘটনাটি। গাড়ির ভেতরে ডেভিড আর বেটি যখন প্রেমে মত্ত তখনই তাদের দিকে এগিয়ে আসেন গাট্টাগোট্টা শরীরের এক ব্যক্তি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানালা দিয়ে খুব কাছ থেকে ডেভিডের মাথায় একটি গুলি ঢুকিয়ে দেন লোকটি। ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেটি অবশ্য গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেছন থেকে পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেন সেই আততায়ী।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডটি যে জোডিয়াক করেছিলেন, সেই খবর জানা ছিল না কারও। হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত করেও খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে এই ঘটনার সাত মাস পর ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট একটি রহস্যময় চিঠি পায় সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল। এই চিঠিতে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় আগের একটি খুনের দায় স্বীকার করেন খুনি নিজেই। চিঠিতে তিনি সাত মাস আগে সংঘটিত ডেভিড ও বেটির হত্যাকাণ্ডেরও সুনিপুণ বিবরণ দেন।
যে খুনের বর্ণনা দিয়ে জোডিয়াক প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে চিঠি লিখেছিলেন, সেটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালের ৪ জুলাই। সেদিনও তাঁর শিকার ছিলেন এক প্রেমিক যুগল। তবে তাঁদের সম্পর্কটি ছিল পরকীয়ার। ২২ বছরের বিবাহিত ডারলিন আর তাঁর প্রেমিক ছিলেন ১৯ বছরের মাইকেল ম্যাগিউ। সাত মাস আগে যেখানে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল, তার মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরেই ভ্যালেজোর ব্লু রক স্প্রিং পার্কে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। এই জুটিও গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছিলেন এবং যথারীতি রাত গভীর হয়ে আসছিল। এমনই একসময় তাঁদের গাড়িটির পেছনে এসে দাঁড়ায় আরেকটি গাড়ি। হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায়ই ওই গাড়ি থেকে একটি ফ্ল্যাশ লাইট নিয়ে বেরিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। প্রেমিক যুগল ভেবেছিলেন, হয়তো কোনো পুলিশ অফিসার এগিয়ে আসছেন তাঁদের দিকে। তাই পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু লোকটি কাছে এসেই সোজা গুলি করে বসেন ম্যাগিউকে। পাশে বসা ডারলিনকেও পরপর কয়েকটি গুলি করেন তিনি। পরে নিজের গাড়িতে গিয়ে ম্যাগিউয়ের গোঙানোর আওয়াজ শুনে আবারও তাঁদের দিকে ফিরে আসেন লোকটি এবং দুজনকে আরও কয়েকটি গুলি করে চলে যান। এই ঘটনায় ডারলিন মারা গেলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন ম্যাগিউ। তাঁর কাছ থেকেই খুনির বাহ্যিক শরীর নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিল পুলিশ। খুনির কল পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিল পুলিশ সদস্যরা। ম্যাগিউয়ে বর্ণনা অনুযায়ী, খুনি ছিলেন ছয় ফুটের কাছাকাছি লম্বা। আর ভারী স্বাস্থ্যের অধিকারী, তাঁর বয়স ৩০-এর মতো হবে।
জোডিয়াকের অপরাধকে শুধু তাঁর নৃশংসতা দিয়েই চিহ্নিত করা হয় না। এসব খুনের বিষয়ে গণমাধ্যম আর পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের ঘটনাগুলোও ব্যাপকভাবে আলোচিত। ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল, ভ্যালেজো টাইমস-হেরাল্ড এবং সান ফ্রান্সিসকো অ্যাক্সামিনার পত্রিকাকে পাঠানো তাঁর চিঠিগুলো ছিল প্রায় অভিন্ন। চিঠিগুলোতে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি সাংকেতিক অক্ষর ব্যবহার করে তিনি যে নোট পাঠিয়েছিলেন, তার পাঠোদ্ধারের দাবি করেছিলেন এক অধ্যাপক দম্পতি। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাংকেতিক ভাষায় খুনি লিখেছিলেন, ‘আমি মানুষকে হত্যা করতে পছন্দ করি। কারণ, এটি অনেক মজার খেলা। এটি বনে শিকারের চেয়েও বেশি মজার। কারণ, মানুষ সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী।’
চিঠির শেষে বন্দুকের নিশানার একটি চিহ্নও এঁকে দিয়েছিলেন খুনি। এই চিহ্নটিকে জোডিয়াকের সাংকেতিক স্বাক্ষর হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের নথি অনুযায়ী, জোডিয়াক তাঁর তৃতীয় হত্যাকাণ্ডটি ঘটান ১৯৬৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ব্যারিয়েসা লেকের পাড়ে শান্তিপূর্ণ বিকেল উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তরুণ দম্পতি ব্রায়ান হার্টনেল এবং সেসেলিয়া শেপার্ড। কিন্তু জনবিরল সেই স্থানটিতে তাঁদের সামনে কালো হুডিযুক্ত পোশাক পরা এক লোক হাজির হন। হাতে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তিনি দুজনকে বেঁধে ফেলেছিলেন। পরে ওই দম্পতিকে নির্মমভাবে একের পর এক ছুরিকাঘাত শুরু করেন ব্যক্তিটি। সেই যাত্রায়ও বেঁচে যান শুধু পুরুষটি, প্রাণ হারান তাঁর সঙ্গী সেসেলিয়া। ঘটনার পর তাঁদের গাড়িতে একটি বার্তা লিখে রেখে যান হত্যাকারী। সেই বার্তার নিচেই বন্দুকের নিশানার মতো সেই জোডিয়াক স্বাক্ষরও করেন।
এই ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় জোডিয়াক আরও একজনকে খুন করেন। তাঁর এবারের শিকার ছিলেন সান ফ্রান্সিসকোর ট্যাক্সিচালক পল স্টাইন। বলা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের সময়ই জোডিয়াককে ধরার খুব কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ। সেদিন শহরের প্রেসিডিয়ো হাইটের ম্যাপল স্ট্রিটে যাত্রীবেশে থাকা জোডিয়াক ট্যাক্সিচালক পল স্টাইনকে গুলি করে মানিব্যাগ, চাবি এবং শার্টের একটি অংশ ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলসংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে সেদিন তিন কিশোর এই খুনের বিষয়টি পুলিশকে ফোন করে জানায়। তবে তাদের দেওয়া তথ্য নথিভুক্ত করতে গিয়ে একটি ছোট্ট ভুল করে বসেন ফোন অপারেটর পুলিশ। অপরাধীর বাহ্যিক বর্ণনার তথ্যে তিনি শ্বেতাঙ্গর স্থানে কৃষ্ণাঙ্গ লিখে ফেলেন। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে খুনির বিষয়ে যখন তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, ধারণা করা হয় তখন তাঁর সামনে দিয়েই যাচ্ছিলেন সন্দেহভাজন। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় তাঁর প্রতি কোনো মনোযোগই দেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিন দিন পর ১৪ অক্টোবর জোডিয়াকের আরও একটি চিঠি পাওয়া যায়। এই চিঠিতে তিনি জানান, ট্যাক্সিচালককে নিজের হাতেই খুন করেছেন। প্রমাণ হিসেবে রক্তমাখা শার্টের ছেঁড়া অংশও পাঠান তিনি।
ঘটনার এই পর্যায়ে এসে নিজের শ্রেষ্ঠত্বও দাবি করেন জোডিয়াক। পত্রিকায় পাঠানো চিঠির মাধ্যমে শহরের সব মানুষকে জোডিয়াক শব্দের আদ্যক্ষর ‘জেড’ চিহ্নিত বোতাম ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন, এবার তাঁর শিকার হবে স্কুলের শিশুরা। বোমা মেরে স্কুল বাস উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এই হুমকিগুলো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও জোডিয়াক অধরাই থেকে যান। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী তাঁর অনুসন্ধান করতে গিয়ে অসংখ্য সূত্রকে অনুসরণ করেছে। শত শত সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু কাউকেই নিশ্চিতভাবে জোডিয়াক হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন খুনের সূত্র দিয়ে তাঁর সর্বশেষ চিঠিটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৪ সালে।
জোডিয়াককে খুঁজতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য সন্দেহভাজন আবির্ভূত হয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাকে সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আর্থার লেই অ্যালেন নামে সাবেক এক স্কুলশিক্ষক। সহিংসতার অতীত রেকর্ড থাকা ছাড়াও ক্রিপ্টোগ্রাফি তথা সাংকেতিক অক্ষর ও শব্দের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। জোডিয়াক ব্র্যান্ডের একটি হাতঘড়িও ছিল তাঁর এবং একসময় তিনি নৌবাহিনীতেও ছিলেন, যেমনটি জোডিয়াক নিজেই দাবি করেছিলেন এক চিঠিতে। আরও একটি বিষয় হলো বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানেই বসবাস করতেন আর্থার লেই। তাঁর ওপর ব্যাপক নজরদারি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে অভিযুক্তও করা সম্ভব হয়নি।
জোডিয়াক কিলারের মামলাটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটি। ধরা পড়া এড়াতে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তাঁর চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি আজও মানুষকে ভাবনার মধ্যে রেখেছে। জোডিয়াককে নিয়ে অসংখ্য বই, সিনেমা ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। এসব তত্ত্বে সম্ভাব্য সমাধানেরও অনেক সূত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তদন্তকারীদের নিশ্চিত করতে পারেনি। জোডিয়াক শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের নাম করা আইনজীবী মেলভিন বেল্লির বসার ঘরে রাখা ফোনটি বেজেই চলেছে। এক-দুবার নয়, অনেকবার। কিন্তু আইনজীবী বাড়িতে নেই। তিনি ছিলেন ইউরোপ সফরে।
এতবার ফোন বাজার পর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোন ধরলেন এক গৃহকর্মী। ফোনের ওপারে থাকা লোকটি বললেন, ‘জানো, আজ আমার জন্মদিন।’ গৃহকর্মী শুনে বললেন, ‘হ্যাপি বার্থ ডে।’ এবার লোকটি বললেন, ‘জানো আজ আমি কী করে জন্মদিন পালন করব?’ গৃহকর্মী আনন্দিত হয়ে বললেন, ‘বড় পার্টি?’ ফোনের লোকটি বললেন, ‘ওসব কিছুই না, আজ আমি একজনকে খুন করব, জন্মদিনের খুন।’ গৃহকর্মী আর কী বলবেন, ভাবতে পারছিলেন না। শুধু জানতে চাইলেন, ‘কে তুমি?’ লোকটি বললেন, ‘জোডিয়াক।’ এরপর ফোন রেখে দিলেন।
এ ঘটনা ছিল ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বরের সন্ধ্যার। আর ফোন করা সেই লোকটি হলেন, বলে কয়ে খুন করে বেড়ানো পৃথিবীর দুর্ধর্ষতম সিরিয়াল কিলার জোডিয়াক। গত শতকের ’৬০ ও ’৭০-এর দশকে নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন এই খুনি।
শুধু আইনজীবী বেল্লির বাসাই নয়, তখনকার দিনের প্রভাবশালী সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকলসহ সব পত্রিকায় তিনি খুন করার বার্তা দিয়ে একের পর এক চিঠি লিখতেন। আবার নিজের নাম-পরিচয় এবং ধরা পড়ার সূত্র উল্লেখ করে চিঠি লিখতেন পুলিশের কাছেও। তবে এসব সূত্র লিখতেন ক্রিপ্টোগ্রাফি বা সাংকেতিক ভাষায়, যার কোড আজ অবধি কেউ ভাঙতে পারেনি। তাই খুনিও অধরাই থেকে গেছেন।
জোডিয়াক কিলার তাঁর চিঠিতে নিজ হাতে ৩৭ জনকে খুন করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন। যদিও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সাতটি নৃশংস খুনের ব্যাপারে একমত হয়েছিল। আর এই বিষয়ে তদন্ত সংস্থাগুলোর লুকোছাপা করারও প্রবণতা ছিল। কারণ, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা যত বাড়ছিল, জোডিয়াক কিলারকে ধরার জন্য তাদের ওপর চাপও তত বাড়ছিল।
বেল্লির বাসায় ‘বার্থডে কল’ করা সেদিনের সেই জোডিয়াক তত দিনে বেশ কয়েকটি খুন করে ফেলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আবিষ্কার করেছিল, বেল্লির বাসায় ফোন করার ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মদিনের দিনটিতেই প্রথম স্বীকৃত হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছিলেন জোডিয়াক। সেদিন রাতে তাঁর শিকার ছিলেন দুই কিশোর-কিশোরী। এর মধ্যে ছেলেটির বয়স ছিল ১৭ বছর আর ১৬-তে পা রেখেছিল মেয়েটি। তবে এই বয়সেই তারা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দুই-তিন সপ্তাহ আগেই একটি চার্চে পরিচয় হয়েছিল তাদের। সেই থেকে শুরু।
ঘটনার দিন প্রথমবারের মতো ডেটিংয়ে বেরিয়েছিলেন ডেভিড আর বেটি। মায়ের র্যাম্বলার মডেলের স্টেশন ওয়াগন গাড়িটি সঙ্গে নিয়েছিলেন ডেভিড। গাড়ি যেহেতু আছে, প্রেমিকাকে নিয়ে শহরে আর থাকে কে? ডেভিডও তাই বেটিকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যালেজো শহরের বাইরে লেক হারম্যান রোডের লাভারস লেনে গিয়েছিল চুটিয়ে প্রেম করতে। প্রথম দিন বলেই হয়তো তাদের উত্তেজনা ছিল অনেক বেশি। কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না একে অপরকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছিল লাভারস লেনে।
রাত ১১টা পেরিয়ে গেলেও ওই এলাকাটিতে তাদের দেখতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ততক্ষণে নিরিবিলি হয়ে এসেছিল চারপাশ। তারপরই ঘটে সেই ঘটনাটি। গাড়ির ভেতরে ডেভিড আর বেটি যখন প্রেমে মত্ত তখনই তাদের দিকে এগিয়ে আসেন গাট্টাগোট্টা শরীরের এক ব্যক্তি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই জানালা দিয়ে খুব কাছ থেকে ডেভিডের মাথায় একটি গুলি ঢুকিয়ে দেন লোকটি। ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেটি অবশ্য গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেছন থেকে পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেন সেই আততায়ী।
মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডটি যে জোডিয়াক করেছিলেন, সেই খবর জানা ছিল না কারও। হত্যাকাণ্ডের পর তদন্ত করেও খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে এই ঘটনার সাত মাস পর ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট একটি রহস্যময় চিঠি পায় সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল। এই চিঠিতে তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় আগের একটি খুনের দায় স্বীকার করেন খুনি নিজেই। চিঠিতে তিনি সাত মাস আগে সংঘটিত ডেভিড ও বেটির হত্যাকাণ্ডেরও সুনিপুণ বিবরণ দেন।
যে খুনের বর্ণনা দিয়ে জোডিয়াক প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমকে চিঠি লিখেছিলেন, সেটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৬৯ সালের ৪ জুলাই। সেদিনও তাঁর শিকার ছিলেন এক প্রেমিক যুগল। তবে তাঁদের সম্পর্কটি ছিল পরকীয়ার। ২২ বছরের বিবাহিত ডারলিন আর তাঁর প্রেমিক ছিলেন ১৯ বছরের মাইকেল ম্যাগিউ। সাত মাস আগে যেখানে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল, তার মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরেই ভ্যালেজোর ব্লু রক স্প্রিং পার্কে সময় কাটাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। এই জুটিও গাড়ির ভেতরেই অবস্থান করছিলেন এবং যথারীতি রাত গভীর হয়ে আসছিল। এমনই একসময় তাঁদের গাড়িটির পেছনে এসে দাঁড়ায় আরেকটি গাড়ি। হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায়ই ওই গাড়ি থেকে একটি ফ্ল্যাশ লাইট নিয়ে বেরিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। প্রেমিক যুগল ভেবেছিলেন, হয়তো কোনো পুলিশ অফিসার এগিয়ে আসছেন তাঁদের দিকে। তাই পকেট থেকে আইডি কার্ড বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু লোকটি কাছে এসেই সোজা গুলি করে বসেন ম্যাগিউকে। পাশে বসা ডারলিনকেও পরপর কয়েকটি গুলি করেন তিনি। পরে নিজের গাড়িতে গিয়ে ম্যাগিউয়ের গোঙানোর আওয়াজ শুনে আবারও তাঁদের দিকে ফিরে আসেন লোকটি এবং দুজনকে আরও কয়েকটি গুলি করে চলে যান। এই ঘটনায় ডারলিন মারা গেলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন ম্যাগিউ। তাঁর কাছ থেকেই খুনির বাহ্যিক শরীর নিয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিল পুলিশ। খুনির কল পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিল পুলিশ সদস্যরা। ম্যাগিউয়ে বর্ণনা অনুযায়ী, খুনি ছিলেন ছয় ফুটের কাছাকাছি লম্বা। আর ভারী স্বাস্থ্যের অধিকারী, তাঁর বয়স ৩০-এর মতো হবে।
জোডিয়াকের অপরাধকে শুধু তাঁর নৃশংসতা দিয়েই চিহ্নিত করা হয় না। এসব খুনের বিষয়ে গণমাধ্যম আর পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের ঘটনাগুলোও ব্যাপকভাবে আলোচিত। ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল, ভ্যালেজো টাইমস-হেরাল্ড এবং সান ফ্রান্সিসকো অ্যাক্সামিনার পত্রিকাকে পাঠানো তাঁর চিঠিগুলো ছিল প্রায় অভিন্ন। চিঠিগুলোতে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি সাংকেতিক অক্ষর ব্যবহার করে তিনি যে নোট পাঠিয়েছিলেন, তার পাঠোদ্ধারের দাবি করেছিলেন এক অধ্যাপক দম্পতি। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাংকেতিক ভাষায় খুনি লিখেছিলেন, ‘আমি মানুষকে হত্যা করতে পছন্দ করি। কারণ, এটি অনেক মজার খেলা। এটি বনে শিকারের চেয়েও বেশি মজার। কারণ, মানুষ সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণী।’
চিঠির শেষে বন্দুকের নিশানার একটি চিহ্নও এঁকে দিয়েছিলেন খুনি। এই চিহ্নটিকে জোডিয়াকের সাংকেতিক স্বাক্ষর হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের নথি অনুযায়ী, জোডিয়াক তাঁর তৃতীয় হত্যাকাণ্ডটি ঘটান ১৯৬৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন ব্যারিয়েসা লেকের পাড়ে শান্তিপূর্ণ বিকেল উপভোগ করতে গিয়েছিলেন তরুণ দম্পতি ব্রায়ান হার্টনেল এবং সেসেলিয়া শেপার্ড। কিন্তু জনবিরল সেই স্থানটিতে তাঁদের সামনে কালো হুডিযুক্ত পোশাক পরা এক লোক হাজির হন। হাতে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তিনি দুজনকে বেঁধে ফেলেছিলেন। পরে ওই দম্পতিকে নির্মমভাবে একের পর এক ছুরিকাঘাত শুরু করেন ব্যক্তিটি। সেই যাত্রায়ও বেঁচে যান শুধু পুরুষটি, প্রাণ হারান তাঁর সঙ্গী সেসেলিয়া। ঘটনার পর তাঁদের গাড়িতে একটি বার্তা লিখে রেখে যান হত্যাকারী। সেই বার্তার নিচেই বন্দুকের নিশানার মতো সেই জোডিয়াক স্বাক্ষরও করেন।
এই ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় জোডিয়াক আরও একজনকে খুন করেন। তাঁর এবারের শিকার ছিলেন সান ফ্রান্সিসকোর ট্যাক্সিচালক পল স্টাইন। বলা যায়, এই হত্যাকাণ্ডের সময়ই জোডিয়াককে ধরার খুব কাছাকাছি গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল পুলিশ। সেদিন শহরের প্রেসিডিয়ো হাইটের ম্যাপল স্ট্রিটে যাত্রীবেশে থাকা জোডিয়াক ট্যাক্সিচালক পল স্টাইনকে গুলি করে মানিব্যাগ, চাবি এবং শার্টের একটি অংশ ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলসংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে সেদিন তিন কিশোর এই খুনের বিষয়টি পুলিশকে ফোন করে জানায়। তবে তাদের দেওয়া তথ্য নথিভুক্ত করতে গিয়ে একটি ছোট্ট ভুল করে বসেন ফোন অপারেটর পুলিশ। অপরাধীর বাহ্যিক বর্ণনার তথ্যে তিনি শ্বেতাঙ্গর স্থানে কৃষ্ণাঙ্গ লিখে ফেলেন। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাকে খুনির বিষয়ে যখন তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, ধারণা করা হয় তখন তাঁর সামনে দিয়েই যাচ্ছিলেন সন্দেহভাজন। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ হওয়ায় তাঁর প্রতি কোনো মনোযোগই দেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিন দিন পর ১৪ অক্টোবর জোডিয়াকের আরও একটি চিঠি পাওয়া যায়। এই চিঠিতে তিনি জানান, ট্যাক্সিচালককে নিজের হাতেই খুন করেছেন। প্রমাণ হিসেবে রক্তমাখা শার্টের ছেঁড়া অংশও পাঠান তিনি।
ঘটনার এই পর্যায়ে এসে নিজের শ্রেষ্ঠত্বও দাবি করেন জোডিয়াক। পত্রিকায় পাঠানো চিঠির মাধ্যমে শহরের সব মানুষকে জোডিয়াক শব্দের আদ্যক্ষর ‘জেড’ চিহ্নিত বোতাম ব্যবহারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন, এবার তাঁর শিকার হবে স্কুলের শিশুরা। বোমা মেরে স্কুল বাস উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। এই হুমকিগুলো শহরজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও জোডিয়াক অধরাই থেকে যান। পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী তাঁর অনুসন্ধান করতে গিয়ে অসংখ্য সূত্রকে অনুসরণ করেছে। শত শত সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু কাউকেই নিশ্চিতভাবে জোডিয়াক হিসেবে সাব্যস্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন খুনের সূত্র দিয়ে তাঁর সর্বশেষ চিঠিটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৪ সালে।
জোডিয়াককে খুঁজতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য সন্দেহভাজন আবির্ভূত হয়েছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাকে সন্দেহ করা হয়েছিল, তিনি ছিলেন আর্থার লেই অ্যালেন নামে সাবেক এক স্কুলশিক্ষক। সহিংসতার অতীত রেকর্ড থাকা ছাড়াও ক্রিপ্টোগ্রাফি তথা সাংকেতিক অক্ষর ও শব্দের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। জোডিয়াক ব্র্যান্ডের একটি হাতঘড়িও ছিল তাঁর এবং একসময় তিনি নৌবাহিনীতেও ছিলেন, যেমনটি জোডিয়াক নিজেই দাবি করেছিলেন এক চিঠিতে। আরও একটি বিষয় হলো বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কাছাকাছি অবস্থানেই বসবাস করতেন আর্থার লেই। তাঁর ওপর ব্যাপক নজরদারি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে অভিযুক্তও করা সম্ভব হয়নি।
জোডিয়াক কিলারের মামলাটি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর মধ্যে একটি। ধরা পড়া এড়াতে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা এবং নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তাঁর চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি আজও মানুষকে ভাবনার মধ্যে রেখেছে। জোডিয়াককে নিয়ে অসংখ্য বই, সিনেমা ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। এসব তত্ত্বে সম্ভাব্য সমাধানেরও অনেক সূত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুই তদন্তকারীদের নিশ্চিত করতে পারেনি। জোডিয়াক শেষ পর্যন্ত অধরাই থেকে গেছেন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে মামা শ্বশুরের বাড়ি থেকে স্মৃতি রানী সরকার নামে এক গৃহবধূর গলা কাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো দা ও এক জোড়া জুতাও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী কাব্য সরকারকে আটক করেছে পুলিশ। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়ন
২ দিন আগেসাত দিন আগে বিয়ে হয় সৌদি আরব প্রবাসী যুবক সোহান আহমদের (২৩)। হাত থেকে মেহেদির রং মোছার আগেই ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন এ যুবক। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ উপজেলা ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সীমান্তে অবস্থিত ইনাতগঞ্জ বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় মৃত্যু হয় সোহান আহমদের। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন।
২ দিন আগেঅপরাধের বিরুদ্ধে চলমান বিশেষ অভিযান জোরদারে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। আজ সোমবার এক বার্তায় পুলিশের সকল ইউনিট প্রধানকে এ নির্দেশ দেন তিনি। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
২ দিন আগেরাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকার একটি বাসা থেকে বিমানবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পল্লবী থানা-পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই নারীর নাম ফারাহ দীবা। সোমবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানান পল্লবী থানার পরির্দশক (তদন্ত) আদ
২ দিন আগে