হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় নাগরিক সংলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স হলে ৩১টি সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের আয়োজনে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে এফডিসি থেকে পলাশী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ সড়ক নির্মাণ বাতিলের দাবিতে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপি কনফারেন্স হলে ৩১টি সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার প্রধান অতিথি ছিলেন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা’ (ধরা)–এর উপদেষ্টা মজিবুল হক হাওলাদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

এ ছাড়া সভায় বক্তব্য দেন ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভের (বিপিআই) মুখপাত্র শরীফ জামিল, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের স্পেশাল সম্পাদক পারভীন ইসলাম, বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক শায়ের গফুরসহ অন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ধরার উপদেষ্টা মুজিবুল হক হাওলাদার বলেন, ‘এই সরকারে যাঁরা আছেন, তাঁদের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। আমরা আশা করি, এক সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ বন্ধ করা হবে। ইতিমধ্যে অনেক প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। সেগুলোর মতো এই প্রকল্পও বাতিল করা হবে বলে আমরা আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি এখান থেকে উত্থাপিত দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তবে সচিবালয় পর্যন্ত যাওয়া হবে।’

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘হাতিরঝিল এবং পান্থকুঞ্জ পার্কের মতো এলাকার পরিবেশগত গুরুত্ব বিবেচনা না করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ সড়ক নির্মাণ একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও জলাধার কমে যাওয়ায় নগরজীবন ইতিমধ্যেই হুমকির মুখে। এই প্রকল্প পরিবেশগত ভারসাম্য আরও নষ্ট করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে যথাযথ পরিবেশ সমীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণের মতামত উপেক্ষা করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তা টেকসই উন্নয়নের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের উচিত পরিবেশ সংরক্ষণকে প্রাধান্য দেওয়া এবং প্রকল্পগুলো পরিবেশবান্ধব হিসেবে বাস্তবায়ন করা।’

সভা শেষে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ পান্থকুঞ্জ পার্কে অবস্থানরত বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং মতবিনিময় করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সভা শেষে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ পান্থকুঞ্জ পার্কে অবস্থানরত বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং মতবিনিময় করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পরিবেশকর্মী শরীফ জামিল বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও শহরের ভেতরে এ রকম এক্সপ্রেসওয়ে নেই। কয়েকজনের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের জন্য পান্থকুঞ্জের মতো জায়গা উজাড় করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো পরিবেশবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে ৩৫ দিন অবস্থান করতে হয়নি। এমনকি কোনো ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়েও তা হয়নি। এ রকম বিকারহীন সমাজব্যবস্থা হতে পারে না।’

সভা শেষে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ পান্থকুঞ্জ পার্কে অবস্থানরত বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন এবং মতবিনিময় করেন। বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব বলেন, ‘আমাদের অবস্থানের আজ ৩৫তম দিন। তিনজন উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে বসার আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত তা হয়নি। এই এলাকায় আর কোনো সবুজ অবশিষ্ট নেই। দেশের জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর ফাইভ স্টার হোটেলে সভা বন্ধ করতে হবে। দেশের পরিস্থিতি এবং প্রেক্ষাপট বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের পার্ক রক্ষার আন্দোলন করার কথা ছিল না। যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে বিগত সরকারের মতো পদদলিত করা হয়, তাহলে গণ-অভ্যুত্থানে এত আত্মাহুতি কেন দেওয়া হয়েছিল?’

সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, ঢাকা শহরের পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় গণপরিবহনকেন্দ্রিক প্রকল্প গ্রহণ জরুরি। সংলাপ থেকে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা হয়। আয়োজক সংগঠনগুলো এই প্রকল্প বাতিলের জন্য সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

টিউলিপ সিদ্দিকের পতন ঘটাতে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ রাজনীতির আঁতাত

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত