কদর বেড়েছে ‘সুন্দরীর’

শেখ কামাল, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩২
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৭

মাঘের শুরুতেই বোরো আবাদের জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কৃষকেরা। ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কঠোর পরিশ্রম করছেন তাঁরা। যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষের পর মই দেওয়ার কাজের জন্য ডাক পড়ছে রইছ উদ্দিনের ‘সুন্দরী ‘নামের ঘোড়ার।

ফলে কদর বেড়েছে ঘোড়াটির। কম খরচে ঘোড়া দিয়ে জমিতে মই দিতে পেরে খুশি এলাকার কৃষকেরাও। রইছ উদ্দিনের শখের ঘোড়াটি দিয়ে বোরো চাষাবাদের জমিতে মই দেওয়ার এই চিত্র উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নে। রইছ উদ্দিন একই ইউনিয়নের চেংজানা গ্রামের বাসিন্দা।

বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে চলছে বীজতলা ও ফসলি জমি প্রস্তুত করার কাজ। আগাম জমি প্রস্তুত করে কে কার আগে ধানের চারা রোপণ করবেন-এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে এলাকার কৃষকদের মধ্যে। সময়ের বিবর্তনে এখন গরু-মহিষের পরিবর্তে পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হচ্ছে। যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষের পর মই দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের চেংজানা গ্রামের রইছ উদ্দিনের ঘোড়া দিয়ে জমিতে মই দেওয়ার কাজে অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন কৃষকেরা। তাই কদর বেড়েছে তাঁর ঘোড়ার।

চেংজানা গ্রামের কৃষক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইসলামউদ্দিন জানান, তাদের এলাকায় বড় কোনো গরু-মহিষ নেই। তাই রইছ উদ্দিনের ঘোড়া দিয়েই তাদের জমিগুলোয় মই দিতে হয়। এতে খরচও কম লাগে।

জানতে চাইলে ঘোড়ার মালিক রইছ উদ্দিন (৭০) জানান, এক বছর আগে জামালপুরের ইসলামপুর থেকে ঘোড়াটি আনেন। পরে আদর করে সেটির নাম দেন ‘সুন্দরী’। শখের ঘোড়াটি দিয়ে এখন খেতে মই দেন। এর জন্য প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে মই দেওয়ার কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া কাছাকাছি জায়গায় কিছু মালামালও বহন করান। সেই সঙ্গে অনেকে শিশুদের নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে ছবিও তোলেন। এতে দৈনিক হাজার টাকার মতো রোজগার হয়। আর তা দিয়ে সংসার ভালোই চলে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির বলেন, কালের বিবর্তনে গরু-মহিষের হাল আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন যান্ত্রিক উপায়েই জমি চাষ করেন কৃষকেরা। তবে কেউ কেউ তাদের বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে মই দেয় বা হালচাষ করে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত