তুলা চাষে কৃষকের হাসি

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪: ২৬
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ০৮

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় তুলার ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে। সাম্প্রতিককালে হাইব্রিড ও উচ্চফলনশীল জাতের তুলা চাষে এমন ফলন হচ্ছে দাবি কৃষকদের। সেই সঙ্গে বাজারে তুলার ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

এ উপজেলায় তুলা এখন একটি লাভজনক ফসল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে এক সময় ব্যাপক হারে তামাক চাষ হতো। ফলে তামাকের জনপদ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল এই উপজেলা। তবে সেই দিন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে তামাকের জায়গায় ব্যাপক হারে তুলা চাষ হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চলতি বছর দৌলতপুর উপজেলায় দুই হাজারেরও বেশি হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন তুলার সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই তুলা খেতের দেখা মেলে। তুলা চাষের মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা।

তুলা চাষ বাড়াতে চাষিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি উন্নত জাতের বীজ ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে। তামাক ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কর্মকর্তারা।

তুলা চাষিরা জানান, তুলা এখন তামাকের চেয়ে অধিক লাভজনক ফসল। তামাক চাষে পরিশ্রম বেশি এবং উৎপাদন ব্যয়ও বেশি। এ কারণে তারা এ বছর গত বছরের তুলনায় তুলা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কাঙ্ক্ষিত দামও পাচ্ছেন। হাইব্রিড জাতের রুপালি-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২ তুলার বীজ উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় বিঘা প্রতি ২০-২২ মণ উৎপাদনের আশা এ উপজেলার তুলা চাষিদের।

জেলার তুলা মিল মালিকেরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে চড়া দামে তুলা কিনতে হচ্ছে। এবার প্রতিমণ তুলা ৩ হাজার ৪০০ টাকা দরে ক্রয় করা হচ্ছে। তবে লোকসান হওয়ার কারণে শুকনো তুলা ছাড়া ভেজা ও গুটি যুক্ত তুলা ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, বর্তমানে তুলা উন্নয়ন বোর্ড গবেষণা, বীজ উৎপাদন, বিতরণ, প্রশিক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং জিনিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে চাষিদের তুলা উৎপাদন কার্যক্রমে সহায়তা করছেন। ফলে দিন দিন এর সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে। বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব অর্থকরী ফসল রয়েছে তার মধ্যে লাভের দিক দিয়ে তুলা অন্যতম বলে মনে করা হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে তুলার চাষ হয়েছে। হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল তুলা চাষে আগ্রহী কৃষকেরা ন্যায্যদাম পেয়ে সন্তুষ্ট। যার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছরে তুলা চাষির সংখ্যাও অনেকাংশে বেড়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত