সুপেয় পানির তীব্র সংকট

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩১
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৪

খুলনার পাইকগাছা ও কয়রায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে লবণাক্ত পানি বেড়ে যাওয়া এবং পানির স্তর নিচে নামার কারণে এই সংকট বাড়ছে। এ ছাড়া লবণাক্ত পানিতে মরে যাচ্ছে গাছপালা, নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমিও।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, সিডর ও ইয়াসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। অনুপযোগী হয়ে পড়ছে বসবাস। বৃদ্ধি পেয়েছে লবণাক্ততা। ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি, হ্রাস পাচ্ছে কৃষি উৎপাদন, সংকট দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির।

বাঁধ মেরামতসহ নানানভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। প্রতিবছর কোনো না কোনো দুর্যোগ অত্র এলাকায় আঘাত হানছে। ইতিমধ্যে গত দুই বছরের ব্যবধানে চারটি বড় ধরনের দুর্যোগ আঘাত হেনেছে এলাকায়। এতে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এই অঞ্চলের মানুষ।

 সময়ের ব্যবধানে নাব্যতা হারিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নদ-নদী। যার মধ্যে কপোতাক্ষ, শিবসা ও হাড়িয়া উল্লেখযোগ্য। এতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বেড়েছে লবণাক্ততা। লবণপানিতে চিংড়ি চাষ করার ফলে নদীর লবণাক্ততা পানি পোল্ডার অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। সংকট দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির।

দেলুটি ইউনিয়নের দেলুটি গ্রামের বিউটি রায় বলেন, এলাকার কোথাও সুপেয় পানি নেই, পানির তেমন কোনো ব্যবস্থাও নেই। ২১ নম্বর পোল্ডারে আকিজ গ্রুপ একটি ট্যাংক করে দিয়েছে, যাতে বর্ষার পানি সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এই পানি বছরের তিন-চার মাস ব্যবহার করা যায়। বাকি মাসগুলো পুকুরের পানি ও অন্যত্র থেকে এনে খেতে হয়। লবণপানি উঠলে আর পানির ব্যবস্থা থাকে না।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি রোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারের মাধ্যমে ২০১৮ সাল থেকে উপজেলায় কাজ করছে উন্নয়ন সংস্থা ডরপের ‘পানিই জীবন’ প্রকল্প। সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও এই অঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবনযাপনের জন্য নিতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।

দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মণ্ডল জানান, আমাদের ইউনিয়নটি একটি দ্বীপবেষ্টিত ইউনিয়ন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রতিনিয়ত যেমন বাড়ছে দুর্যোগসহ নানা সমস্যা, তেমনি ক্রমশ এলাকায় বসবাসও অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এলাকার মানুষ প্রতিবছর চলে যাচ্ছে অন্যত্র। পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবল মন্টু বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি, নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে পোল্ডারের ভেতরসহ সুপেয় পানির সমস্যা দেখা দেয়। সরকার ও বেসরকারি এনজিও এসব জনগোষ্ঠীর জন্য এলাকায় ও বাড়ি বাড়ি জলাধার বিতরণ করছে। তারপরও সংকট কাটছে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত