মা-বাবার সেবার শর্তে তিন আসামির মুক্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৪০
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ১৬

রায়হান ব্যাপারী, আবুল কাশেম ও আনোয়ার হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের গুলখার গ্রামের বাসিন্দা। তিনজনই পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক। তাঁরা তিনজনই ছিলেন মাদকসেবী। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাদক সেবন করার সময় পুলিশের হাতে আটক হন তাঁরা। পরে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে।

গত বৃহস্পতিবার সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়ে এ মামলায় ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. রাকিবুল হাসান রকি।

রায়ে মা-বাবার সেবা, সন্তানদের স্কুলে পাঠানো, গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। আসামিরা সংশোধন হলে তাঁদের মামলা থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলে আদালত জানান। একই সঙ্গে রায় কার্যকরের জন্য একজন প্রবেশন কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশনা দেন আদালত।

আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা প্রবেশনকালে পিতামাতার দেখাশোনা করবেন এবং ভরণপোষণের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানো ও উপযুক্ত পড়াশোনার বন্দোবস্ত করবেন। নিয়মিত নামাজ আদায় এবং ধর্মীয় কাজ করবেন।

আদালতের দেওয়া আদেশের কোনো শর্ত লঙ্ঘন করলে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও সাত দিনের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ পৌঁছাবে। জেলে না পাঠিয়েও যে সংশোধন করানো যায়, সেটার উদাহরণ সৃষ্টি হবে।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এ মামলায় আসামিদের দুই বছরের সাজা হতে পারত। সেটা না করে তাঁদের সংশোধনের যে রায় দেওয়া হয়েছে সেটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যে আইনে এ রায়টি দেওয়া হয়েছে সেটির প্রচলন নেই। আমারও এটা জানা ছিল না।’ এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমন দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে বলে জানা নেই।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত