মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
বক্স অফিস দিয়ে সাধারণত কোনো সিনেমার বাণিজ্যিক অবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়। আর এই বাণিজ্যিক দিক বিশ্লেষণ করেই রায় দেওয়া হয় সিনেমাটি হিট নাকি ফ্লপ। একটা সিনেমার সবচেয়ে বেশি আয় হয় সাধারণত হলের টিকিট বিক্রি থেকে। এ ছাড়া আরও কিছু স্বত্ব বিক্রি করেও আয় করা যায়।
২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমাটি অনেক দর্শক দেখেছিল। সিনেমার পরিচালক অমিতাভ রেজা পরে জানান, মাল্টিপ্লেক্সের বাইরের হলগুলো থেকে কত আয় করেছে, তার সঠিক চিত্র তাঁদের কাছে নেই। এমনকি আয়ের যে অঙ্কটা দেখানো হয়েছে, সে অনুযায়ী অর্থও প্রযোজক পাননি। এই অস্বচ্ছতার সুযোগে অনেক হল মালিক ও পরিবেশক সিনেমার আয় বাড়িয়ে বা কমিয়ে বলেন। কারণ, তাঁরা জানেন সেটাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য কারও হাতে নেই।
১৯২২ সালে সংবাদমাধ্যম ভ্যারাইটি হলিউড সিনেমার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা শুরু করে। তবে বাংলাদেশে এখনো বক্স অফিস ব্যাপারটিই তৈরি হয়নি। ফলে সাধারণ দর্শক এ নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে থাকেন। দিনকে দিন প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে। তবে আমাদের দেশের সিনেমা হলগুলো কতটা প্রযুক্তিবান্ধব হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তো রয়েছেই, এর মধ্যেই বক্স অফিস ব্যাপারটি নিয়েও আছে আক্ষেপ।
বক্স অফিস জটিল কোনো বিষয় না। তবে কিছুটা ব্যয়বহুল। বক্স অফিস নামে একটা সফটওয়্যারও আছে। সেখানে বক্স অফিস রিপোর্ট থেকে ঘরে বসেই যে কেউ জানতে পারবে সিনেমাটির আয়ের হিসাব। কোনদিন কত টাকা আয় করল সিনেমাটি, কত সংখ্যক দর্শক দেখল—জানা যায় এসব তথ্য। তবে বক্স অফিস নিয়ে অনেকে নেতিবাচক কথাও বলেন। বক্স অফিসের আয়-ব্যয়ের হিসাব মানুষকে সিনেমাটি দেখতে কিংবা বিমুখ হতে প্রভাবিত করে। সিনেমা যে রকমই হোক, শুধু বক্স অফিসে শত-কোটি টাকা আয় করেছে শুনে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সিনেমাটি দেখতে। এর ফলে অনেক সময় ভালো সিনেমাকেও মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা যায়। সাম্প্রতিক ভারতীয় সিনেমায় বক্স অফিসের এমন সংস্কৃতির সমালোচনাও করেছেন সিনেবোদ্ধারা। এমনকি কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বক্স অফিস’ কালচার নিয়ে সমালোচনা করেছেন নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী।
দেশের চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলা সিনেমা দেখতে এখন হলে ছুটছে দর্শক। কিন্তু কার্যকর বক্স অফিস না থাকায় প্রযোজকের লাভের গুড় খেয়ে নিচ্ছে অন্যরা। হলিউড-বলিউডের মতো বক্স অফিস পদ্ধতি থাকলে বাঁচবেন প্রযোজক।
একটি সিনেমার উদাহরণ
বলিউডের ‘তেভর’ (২০১৫) সিনেমাটি তৈরিতে প্রযোজক বনি কাপুরের ৩০-৩৫ কোটি রুপি খরচ হয়। বনি কাপুর পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ইরস ইন্টারন্যাশনালের কাছে থিয়েট্রিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন রাইট ৪৮ কোটি রুপিতে বিক্রি করে দেন। ইরস ইন্টারন্যাশনাল সিনেমাটি প্রচারে ১২ কোটি রুপি খরচ করে। অতএব সিনেমাটির খরচ দাঁড়াল ৪৮ + ১২ =৬০ কোটি রুপি। হলমালিকদের কমিশন বাবদ খরচ ধরা হলো ২৫ কোটি। তার মানে, সিনেমাটির মোট বাজেট ৬০ + ২৫ = ৮৫ কোটি রুপি। গান, স্যাটেলাইট রাইট এবং ওভারসিজ থেকে আয় হয় ১৮ কোটি রুপি। সুতরাং নির্মাণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ শুধু মূলধন তুলতে সিনেমাটির প্রদর্শনী থেকে বিক্রি বাবদ ৮৫ - ১৮ = ৬৭ কোটি রুপি তোলা দরকার। ‘তেভর’ শেষ পর্যন্ত ৫০ কোটি রুপি ব্যবসা করে। ফলে ক্ষতি হয় ৬৭ - ৫০ = ১৭ কোটি রুপি।
তাহলে কী বলতে পারি?
‘তেভর’ সিনেমাটি ফ্লপ ছিল। কারণ সিনেমাটি পরিবেশকের মোট খরচ তুলতে ব্যর্থ হয়। গড় আয় হতো যদি প্রদর্শন আয় বাবদ অন্তত ৭৭ কোটি রুপি আয় করত (লাভ ১০ কোটি)। হিট হতো যদি পরিবেশককে ৮৫ x ১.৫ = ১২৭.৫ কোটি রুপি লাভ দিত, অর্থাৎ ১২৭.৫ - ১৮ = ১০৯.৫ কোটি রুপির ব্যবসা করত। সেমি হিট হতো যদি পরিবেশককে ৮৫ x ২ = ১৭০ কোটি টাকা লাভ দিত। অর্থাৎ ১৭০ - ১৮ = ১৫২ কোটি রুপির ব্যবসা করত। যদি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের তিনগুণের বেশি ৮৫ x ৩ = ২৫৫ কোটি রুপির বেশি লাভ দিত, তাহলে সিনেমাটি হতো সুপার হিট। অর্থাৎ ২৫৫ - ১৮ = ২৩৭ কোটির বেশি ব্যবসা করত। ব্লক বাস্টার হতো যদি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের চারগুণের বেশি ৮৫ x ৪ = ৩৪০ কোটি রুপির বেশি লাভ দিত। সেক্ষেত্রে ৩৪০ - ১৮ = ৩২২ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করতে হতো। আবার যদি সিনেমাটি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের চারগুণের যথেষ্ট বেশি ৮৫ x ৪ = ৩৪০ কোটি রুপির অনেক বেশি আনতো, তাহলে হতো অলটাইম ব্লক বাস্টার।
যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা
গরিষ্ঠ মানেই সব সময় বেটার নয়
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, চলচ্চিত্র নির্মাতাবক্স
অফিস বিষয়টি নিয়ে দুটো জিনিস আছে। একটি হচ্ছে, বক্স অফিসে কত আয় হলো, এটি প্রডিউসার ও ডিস্ট্রিবিউটরটা জানার সুযোগ পান। এটা অবশ্যই ব্যবসায়িক হিসাবের জন্য তাদের দরকারি। বক্স অফিস কালচার নিয়ে হলিউডের অন্যতম দাপুটে নির্মাতা মার্টিন স্করসিস একটা লেখা লিখেছেন। সেখানে তিনি বক্স অফিস নিয়ে দারুণ বলেছেন। একজন কিশোর ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে ঢুকে দেখছে, অমুক ফিল্মটি ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে, তখন সে ভাবে এটা অবশ্যই তার দেখা উচিত। ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে মানে এটা নিশ্চয় বহু মানুষ দেখেছে, আমাকেও তো ট্রেন্ডে থাকতে হবে। এটা অবশ্যই সার্বিকভাবে সিনেমার জন্য ভয়ংকর একটা দিক। একটা ভালো ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে, আবার একটা খারাপ ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে। ফলে গরিষ্ঠ মানেই সব সময় বেটার, এটা কিন্তু না। বক্স অফিস দরকার ছিল শুধু প্রযোজক ও পরিবেশকের জন্য।
অনেক সেক্টরের মানুষের অংশগ্রহণ লাগবে
খোরশেদ আলম খসরু, প্রযোজক
বক্স অফিস সিনেমার একটা মানদণ্ডের জায়গা। বিচার-বিশ্লেষণ বা হিসাব-কিতাবের জায়গা। সব প্রডিউসারই সিনেমা মুক্তির পর বলে সুপারহিট। এটা একটা প্রচারণারও অংশ হয়ে গেছে। বক্স অফিস কনসেপ্টটা যদি শুরু হয়, তাহলে অনেক সেক্টরের মানুষেরই এখানে অংশগ্রহণ লাগবে। বিশেষ করে সাংবাদিকেরাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। আমি বলে দিলাম এমন চলেছে, সেটা যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট তো করতে হবে। তা ছাড়া কোন হলে কত বিক্রি হয়েছে। এই যে সিনেমাগুলো এত চলছে। সেখানে সাংবাদিকেরা ধরে হিসাব করে কিন্তু একটা রিপোর্ট করতে পারেন। হলমালিক, প্রডিউসার সবার মতামত নিয়েই এটা তৈরি হবে।
বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নেই
অশোক ধানুকা, ভারতীয় প্রযোজক
বাংলাদেশের এত বছরের সমৃদ্ধ সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে, অথচ বক্স অফিস নেই। সংশ্লিষ্টরাই চায় না বক্স অফিস হোক। টেকনিক্যালি বলতে গেলে বক্স অফিস তৈরি করতে ছয় মাসও লাগবে না। টিকিটিং সিস্টেমটা টেকনোলজিনির্ভর করলেই হয়। সিনেপ্লেক্সে আছেও। কিন্তু আপনি জানবেন না কয় টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তি দিতে গেলে একজন প্রযোজককে প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়। এরপর প্রযোজক দেখেন তাঁর লগ্নিকৃত টাকা অন্যের মাঝে ভাগ হচ্ছে। কিন্তু তিনি কিছু করতে পারেন না। সারা বিশ্বে বক্স অফিস আছে। স্বচ্ছতা আছে। সেটা বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তির ক্ষেত্রে নেই। আমাদের এখানে (ভারতে) ফিফটি ফিফটি শেয়ার হয় প্রযোজক ও হলমালিকের মধ্যে। বাংলাদেশে মনে হয় ২০ শতাংশও পায় না প্রযোজক। হল মালিকেরা এসি বিল, ঝাড়ুদার বিল এই বিল সেই বিল করে হয়তো ২০ শতাংশ নিচ্ছে। আর প্রযোজককে ২০ শতাংশ দিচ্ছে। কিন্তু বাকি যে মেইনটেন্যান্স বিল নেয়, সেটাও কিন্তু প্রযোজকের টাকা দিয়েই। এটা কোনো কথা!
বক্স অফিস দিয়ে সাধারণত কোনো সিনেমার বাণিজ্যিক অবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়। আর এই বাণিজ্যিক দিক বিশ্লেষণ করেই রায় দেওয়া হয় সিনেমাটি হিট নাকি ফ্লপ। একটা সিনেমার সবচেয়ে বেশি আয় হয় সাধারণত হলের টিকিট বিক্রি থেকে। এ ছাড়া আরও কিছু স্বত্ব বিক্রি করেও আয় করা যায়।
২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমাটি অনেক দর্শক দেখেছিল। সিনেমার পরিচালক অমিতাভ রেজা পরে জানান, মাল্টিপ্লেক্সের বাইরের হলগুলো থেকে কত আয় করেছে, তার সঠিক চিত্র তাঁদের কাছে নেই। এমনকি আয়ের যে অঙ্কটা দেখানো হয়েছে, সে অনুযায়ী অর্থও প্রযোজক পাননি। এই অস্বচ্ছতার সুযোগে অনেক হল মালিক ও পরিবেশক সিনেমার আয় বাড়িয়ে বা কমিয়ে বলেন। কারণ, তাঁরা জানেন সেটাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য কারও হাতে নেই।
১৯২২ সালে সংবাদমাধ্যম ভ্যারাইটি হলিউড সিনেমার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা শুরু করে। তবে বাংলাদেশে এখনো বক্স অফিস ব্যাপারটিই তৈরি হয়নি। ফলে সাধারণ দর্শক এ নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে থাকেন। দিনকে দিন প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে। তবে আমাদের দেশের সিনেমা হলগুলো কতটা প্রযুক্তিবান্ধব হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তো রয়েছেই, এর মধ্যেই বক্স অফিস ব্যাপারটি নিয়েও আছে আক্ষেপ।
বক্স অফিস জটিল কোনো বিষয় না। তবে কিছুটা ব্যয়বহুল। বক্স অফিস নামে একটা সফটওয়্যারও আছে। সেখানে বক্স অফিস রিপোর্ট থেকে ঘরে বসেই যে কেউ জানতে পারবে সিনেমাটির আয়ের হিসাব। কোনদিন কত টাকা আয় করল সিনেমাটি, কত সংখ্যক দর্শক দেখল—জানা যায় এসব তথ্য। তবে বক্স অফিস নিয়ে অনেকে নেতিবাচক কথাও বলেন। বক্স অফিসের আয়-ব্যয়ের হিসাব মানুষকে সিনেমাটি দেখতে কিংবা বিমুখ হতে প্রভাবিত করে। সিনেমা যে রকমই হোক, শুধু বক্স অফিসে শত-কোটি টাকা আয় করেছে শুনে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সিনেমাটি দেখতে। এর ফলে অনেক সময় ভালো সিনেমাকেও মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা যায়। সাম্প্রতিক ভারতীয় সিনেমায় বক্স অফিসের এমন সংস্কৃতির সমালোচনাও করেছেন সিনেবোদ্ধারা। এমনকি কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বক্স অফিস’ কালচার নিয়ে সমালোচনা করেছেন নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকী।
দেশের চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলা সিনেমা দেখতে এখন হলে ছুটছে দর্শক। কিন্তু কার্যকর বক্স অফিস না থাকায় প্রযোজকের লাভের গুড় খেয়ে নিচ্ছে অন্যরা। হলিউড-বলিউডের মতো বক্স অফিস পদ্ধতি থাকলে বাঁচবেন প্রযোজক।
একটি সিনেমার উদাহরণ
বলিউডের ‘তেভর’ (২০১৫) সিনেমাটি তৈরিতে প্রযোজক বনি কাপুরের ৩০-৩৫ কোটি রুপি খরচ হয়। বনি কাপুর পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ইরস ইন্টারন্যাশনালের কাছে থিয়েট্রিক্যাল ডিস্ট্রিবিউশন রাইট ৪৮ কোটি রুপিতে বিক্রি করে দেন। ইরস ইন্টারন্যাশনাল সিনেমাটি প্রচারে ১২ কোটি রুপি খরচ করে। অতএব সিনেমাটির খরচ দাঁড়াল ৪৮ + ১২ =৬০ কোটি রুপি। হলমালিকদের কমিশন বাবদ খরচ ধরা হলো ২৫ কোটি। তার মানে, সিনেমাটির মোট বাজেট ৬০ + ২৫ = ৮৫ কোটি রুপি। গান, স্যাটেলাইট রাইট এবং ওভারসিজ থেকে আয় হয় ১৮ কোটি রুপি। সুতরাং নির্মাণ ও অন্যান্য খরচ বাবদ শুধু মূলধন তুলতে সিনেমাটির প্রদর্শনী থেকে বিক্রি বাবদ ৮৫ - ১৮ = ৬৭ কোটি রুপি তোলা দরকার। ‘তেভর’ শেষ পর্যন্ত ৫০ কোটি রুপি ব্যবসা করে। ফলে ক্ষতি হয় ৬৭ - ৫০ = ১৭ কোটি রুপি।
তাহলে কী বলতে পারি?
‘তেভর’ সিনেমাটি ফ্লপ ছিল। কারণ সিনেমাটি পরিবেশকের মোট খরচ তুলতে ব্যর্থ হয়। গড় আয় হতো যদি প্রদর্শন আয় বাবদ অন্তত ৭৭ কোটি রুপি আয় করত (লাভ ১০ কোটি)। হিট হতো যদি পরিবেশককে ৮৫ x ১.৫ = ১২৭.৫ কোটি রুপি লাভ দিত, অর্থাৎ ১২৭.৫ - ১৮ = ১০৯.৫ কোটি রুপির ব্যবসা করত। সেমি হিট হতো যদি পরিবেশককে ৮৫ x ২ = ১৭০ কোটি টাকা লাভ দিত। অর্থাৎ ১৭০ - ১৮ = ১৫২ কোটি রুপির ব্যবসা করত। যদি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের তিনগুণের বেশি ৮৫ x ৩ = ২৫৫ কোটি রুপির বেশি লাভ দিত, তাহলে সিনেমাটি হতো সুপার হিট। অর্থাৎ ২৫৫ - ১৮ = ২৩৭ কোটির বেশি ব্যবসা করত। ব্লক বাস্টার হতো যদি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের চারগুণের বেশি ৮৫ x ৪ = ৩৪০ কোটি রুপির বেশি লাভ দিত। সেক্ষেত্রে ৩৪০ - ১৮ = ৩২২ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করতে হতো। আবার যদি সিনেমাটি পরিবেশককে তাঁর মূলধনের চারগুণের যথেষ্ট বেশি ৮৫ x ৪ = ৩৪০ কোটি রুপির অনেক বেশি আনতো, তাহলে হতো অলটাইম ব্লক বাস্টার।
যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা
গরিষ্ঠ মানেই সব সময় বেটার নয়
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, চলচ্চিত্র নির্মাতাবক্স
অফিস বিষয়টি নিয়ে দুটো জিনিস আছে। একটি হচ্ছে, বক্স অফিসে কত আয় হলো, এটি প্রডিউসার ও ডিস্ট্রিবিউটরটা জানার সুযোগ পান। এটা অবশ্যই ব্যবসায়িক হিসাবের জন্য তাদের দরকারি। বক্স অফিস কালচার নিয়ে হলিউডের অন্যতম দাপুটে নির্মাতা মার্টিন স্করসিস একটা লেখা লিখেছেন। সেখানে তিনি বক্স অফিস নিয়ে দারুণ বলেছেন। একজন কিশোর ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে ঢুকে দেখছে, অমুক ফিল্মটি ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে, তখন সে ভাবে এটা অবশ্যই তার দেখা উচিত। ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে মানে এটা নিশ্চয় বহু মানুষ দেখেছে, আমাকেও তো ট্রেন্ডে থাকতে হবে। এটা অবশ্যই সার্বিকভাবে সিনেমার জন্য ভয়ংকর একটা দিক। একটা ভালো ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে, আবার একটা খারাপ ছবিও অনেক মানুষ দেখতে পারে। ফলে গরিষ্ঠ মানেই সব সময় বেটার, এটা কিন্তু না। বক্স অফিস দরকার ছিল শুধু প্রযোজক ও পরিবেশকের জন্য।
অনেক সেক্টরের মানুষের অংশগ্রহণ লাগবে
খোরশেদ আলম খসরু, প্রযোজক
বক্স অফিস সিনেমার একটা মানদণ্ডের জায়গা। বিচার-বিশ্লেষণ বা হিসাব-কিতাবের জায়গা। সব প্রডিউসারই সিনেমা মুক্তির পর বলে সুপারহিট। এটা একটা প্রচারণারও অংশ হয়ে গেছে। বক্স অফিস কনসেপ্টটা যদি শুরু হয়, তাহলে অনেক সেক্টরের মানুষেরই এখানে অংশগ্রহণ লাগবে। বিশেষ করে সাংবাদিকেরাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। আমি বলে দিলাম এমন চলেছে, সেটা যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট তো করতে হবে। তা ছাড়া কোন হলে কত বিক্রি হয়েছে। এই যে সিনেমাগুলো এত চলছে। সেখানে সাংবাদিকেরা ধরে হিসাব করে কিন্তু একটা রিপোর্ট করতে পারেন। হলমালিক, প্রডিউসার সবার মতামত নিয়েই এটা তৈরি হবে।
বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নেই
অশোক ধানুকা, ভারতীয় প্রযোজক
বাংলাদেশের এত বছরের সমৃদ্ধ সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে, অথচ বক্স অফিস নেই। সংশ্লিষ্টরাই চায় না বক্স অফিস হোক। টেকনিক্যালি বলতে গেলে বক্স অফিস তৈরি করতে ছয় মাসও লাগবে না। টিকিটিং সিস্টেমটা টেকনোলজিনির্ভর করলেই হয়। সিনেপ্লেক্সে আছেও। কিন্তু আপনি জানবেন না কয় টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তি দিতে গেলে একজন প্রযোজককে প্রচুর ঝামেলা পোহাতে হয়। এরপর প্রযোজক দেখেন তাঁর লগ্নিকৃত টাকা অন্যের মাঝে ভাগ হচ্ছে। কিন্তু তিনি কিছু করতে পারেন না। সারা বিশ্বে বক্স অফিস আছে। স্বচ্ছতা আছে। সেটা বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তির ক্ষেত্রে নেই। আমাদের এখানে (ভারতে) ফিফটি ফিফটি শেয়ার হয় প্রযোজক ও হলমালিকের মধ্যে। বাংলাদেশে মনে হয় ২০ শতাংশও পায় না প্রযোজক। হল মালিকেরা এসি বিল, ঝাড়ুদার বিল এই বিল সেই বিল করে হয়তো ২০ শতাংশ নিচ্ছে। আর প্রযোজককে ২০ শতাংশ দিচ্ছে। কিন্তু বাকি যে মেইনটেন্যান্স বিল নেয়, সেটাও কিন্তু প্রযোজকের টাকা দিয়েই। এটা কোনো কথা!
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৮ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৮ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৮ দিন আগে