পুলিশ বাহিনীর সংস্কার দরকার

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৭: ৫৯

সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় শত শত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ আহত ও নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যদেরও অনেকে নিহত ও আহত হন। সেই আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর। এরপর এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। পুলিশ বাহিনীর অনুপস্থিতিতে দেশে চরম অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয়। ৫ আগস্ট রাত থেকে দেশব্যাপী চার শতাধিক থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ভয়ে পুলিশ সদস্যরা থানা ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সাধারণ জনগণের সঙ্গে পুলিশের মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। সাধারণ পুলিশ সদস্যদের মনে ভয় ঢুকে যায়। এ কারণে তাঁরা কর্মস্থলে যোগ দেননি। এরপর তাঁরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁদের ব্যবহার করেছেন ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থে। পদ-পদবি নিয়েও তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। আর বিভিন্ন আন্দোলনে শুধু জীবন দিতে হয়েছে সাধারণ পুলিশ সদস্যদের। তাঁরা শুধু অভিযোগ তোলেননি, ১১ দফা দাবি দিয়ে কাজে যোগদান থেকে বিরতও থেকেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করতে এবং জনবান্ধব করতে তাঁদের পোশাক ও লোগো পরিবর্তন করা হবে।

এতে পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে সাধারণ মানুষের বিরূপ মনোভাব কেটে যাবে। খবরটি আমাদের আনন্দিত করলেও শঙ্কা থেকে যায় এই কারণে যে দীর্ঘ দিন ধরেই পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। চাঁদাবাজি, ঘুষসহ নানা অপকর্মে তারা জড়িত। এসবের বাইরে মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ আছে। এসব অপকর্ম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা করে থাকেন। আর তাঁদের অপকর্মের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকেন সাধারণ কনস্টেবলরা।

পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কি পোশাক ও লোগো পরিবর্তন করলে যাবে? বিষয়টি বুঝি খুব সহজ ব্যাপার না। জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী সবারই প্রত্যাশা। কিন্তু পুরো পুলিশ বাহিনীর সংস্কার করা ছাড়া কি তাদের পরিবর্তন করা সম্ভব?

ব্রিটিশ আমল থেকে পুলিশের পোশাক ছিল খাকি রঙের। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের পোশাক পরিবর্তন করা হয়। ২০০৪ ও ২০১৬ সালে পুলিশের কয়েকটি ইউনিটের পোশাকের রং পরিবর্তন করা হয়েছিল। মহানগর ও জেলা পর্যায়ে দুই রঙের পোশাক দেওয়া হয়েছিল। আবার পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও ব্যাটালিয়নভেদে পোশাকের ভিন্নতাও রয়েছে।

এর আগে সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর নাম ও পোশাক পরিবর্তন করা হয়েছিল। তাতে বাস্তবতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের ভূমিকা আছে। তারা ছাড়া আমাদের জীবন স্বাভাবিক না। আমাদের প্রত্যাশা, অন্তর্বর্তী সরকার শুধু পোশাক ও লোগো না, পুরো পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে উদ্যোগ নেবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব

ববির ট্রেজারার সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে যোগদানে বাধা

বিগত সরকারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষতিপূরণ দিতেই যাবে শতকোটি টাকা

দুই দিনে ৭ ব্যাংককে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেননি রয়টার্সের প্রতিবেদক: সিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত