মামুনুর রশীদ
পূর্ব বাংলায় পাঙ্খাপুলার, পালকির বেহারা, দারোয়ান, কোচোয়ান ও মেথররা সবাই ছিল বহিরাগত। উত্তর প্রদেশ, ভোজপুর, ওডিশা ও বিহার থেকে আসত এরা। বাংলা ভাষা তারা আধো আধো রপ্ত করেছিল। মূলত বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর আবেগ থাকার কথা না।
আমাদের ভাষা আন্দোলন একসময় সীমাবদ্ধ হয়েছিল শুধু ঢাকা শহরেই। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা, মেডিকেল কলেজ এবং তখনকার প্রাদেশিক পরিষদ ভবন এলাকা। একুশে ফেব্রুয়ারিতে গুলি চলার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ একটুখানি গুরুত্ব পেতে শুরু করে। বদরুদ্দীন উমরের ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর আন্দোলনের দিগন্ত বাড়তে থাকে। বইটিতে সেই সময়ের ইলা মিত্রের ঘটনা, টাঙ্গাইলের শামসুল হক বনাম খুররম খান পন্নীর নির্বাচন এবং সামগ্রিকভাবে সারা দেশের একটা চিত্র পাওয়া যায়।
এরপর অবশ্য ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনেক লেখাই প্রকাশিত হয়েছে। তবে একটি বিষয়ের প্রতি আমার কৌতূহল দীর্ঘদিনের। সেটি হচ্ছে পাঙ্খাপুলারদের নিয়ে। বিদ্যুৎ আসার আগে ভারতের বিত্তবান লোকেরা ছাদের নিচে প্রশস্ত একটি পাখা বানাত। পাখাটি মোটা কাপড়ের কয়েক পরত দিয়ে তৈরি হতো। বাঁশ বা কাঠের ওপর এই বস্ত্রনির্মিত পাখা ঝুলতে থাকত। পাখাটির সঙ্গে একটি লম্বা দড়ির সংযোগ ঘটানো হতো। সেই দড়িটির প্রান্তদেশে থাকতেন একজন লোক, যিনি নিরলসভাবে পাখাটি টানতে থাকতেন। পাখাটির ঠান্ডা বাতাস বিত্তবান শ্রেণির মানুষদের প্রশান্তি দিত। অফিস-আদালতে তো থাকতই, গৃহেও এই ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে বিদ্যুতের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর ছিল। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল অত্যন্ত কম। তাই সারা ভারতবর্ষে ষাটের দশক পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এ দেশে ব্রিটিশদেরও একমাত্র অবলম্বন ছিল এই পাখা। সারা রাত নিরলসভাবে পাঙ্খাপুলাররা কাজটি করে যেতেন। কদাচিৎ ঘুমিয়ে পড়তেন। ঘুমিয়ে পড়লেই তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চলত।
এই নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য কিছু ‘মানবিক’ ইংরেজ একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করল। পাঙ্খাপুলারদের চুলের সঙ্গে দড়িটি বেঁধে দেওয়া হতো। যখন ঘুম আসত, তখন চুলে টান পড়ত। চুলে টান পড়তেই পাঙ্খাপুলাররা জেগে উঠতেন। খুব অল্প বেতনে প্রায় বংশানুক্রমিকভাবে এই পাঙ্খাপুলাররাই কাজ করে যেতেন।
ইংরেজদের নথিপত্র ঘাঁটলে বোঝা যায়, সরকারের খাতায় পাঙ্খাপুলার এবং মশালচির চাকরির কথা উল্লেখ আছে। তবে সেই চাকরিগুলোয় স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা লক্ষ করা যায় না। পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর এসব চাকরি যে একেবারেই অস্থায়ী এবং মাস্টাররোলে নির্দিষ্ট হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
১৯৪৭ সালের পরে যখন প্রাইমারি স্কুল বা হাইস্কুলের শিক্ষকেরাই বেতন পাচ্ছেন না, তখন পাঙ্খাপুলারদের কী অবস্থা হয়েছিল, তা সহজেই অনুমান করা যায়। বস্তুত ষাটের দশকের পরে এই পাঙ্খাপুলারদের আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে এই পাখা দেখতে পাওয়া যায়।
ভাষা আন্দোলনের পরে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রয়োজনে পাঙ্খাপুলারদের কাজে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা যে প্রাপ্য বেতন পেয়েছিলেন, তার কোনো নিশ্চয়তা কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। পূর্ব বাংলায় পাঙ্খাপুলার, পালকির বেহারা, দারোয়ান, কোচোয়ান ও মেথররা সবাই ছিল বহিরাগত। উত্তর প্রদেশ, ভোজপুর, ওডিশা ও বিহার থেকে আসত এরা। বাংলা ভাষা তারা আধো আধো রপ্ত করেছিল। মূলত বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর আবেগ থাকার কথা না। তবে এটাও তারা বুঝতে পারছিল যে, পাকিস্তান হওয়ায় তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন তো হবেই না বরং সীমান্তের বাধানিষেধের কারণে তাদের পিতৃপুরুষের ভূমিতেও আর ফিরে যাওয়া হবে না। তাই পাকিস্তান আমলে সবকিছু সয়ে তারা এখানেই বসবাস শুরু করে। জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ায় অনেকেই চাকরিচ্যুত হয়েছে। আবার কেউ কেউ মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে গেছে। বাঙালিদেরও তাদের প্রতি তেমন বিদ্বেষ ছিল না।
ফিরে আসি সেই ভাষা আন্দোলনের সময়ে। সেই সময় এসব শ্রেণি-পেশার লোকের জীবনে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তাই পুরো ব্যাপারটাই অনুমাননির্ভর হয়ে গেছে। ভাষা আন্দোলনের বিষয়টি এখানে এ কারণে প্রাসঙ্গিক যে, পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার পর বিষয়টি সামগ্রিকভাবে আমাদের জাতিসত্তাকে নাড়া দিয়েছিল। তখন এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, সহজেই অনুমান করা যায়—কিছু কিছু লোক আপন পিতৃভূমির টানে এ দেশ ত্যাগ করেছিল। সেই সঙ্গে এটাও প্রাসঙ্গিক, আমাদের দেশে যে বিভিন্ন জাতিসত্তার মানুষ আছে, তাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়, তাদের ভূমিকাই বা কী ছিল?
যারা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ, তারা মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে গিয়ে বাংলার পক্ষেই দাঁড়িয়েছিল। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে তারা সমর্থন করেছিল এ কারণে যে, বাংলা রাষ্ট্রভাষা হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। বাংলা যদি রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়, তবে সংখ্যালঘুদের ভাষাগুলোও একসময় মর্যাদা পাবে। তা-ই হলো। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন ইউনেসকো কর্তৃক ঘোষিত হলো, তখন কিন্তু পৃথিবীর সব মাতৃভাষাই মর্যাদা পেল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতিসত্তার ভাষাগুলো একই কারণে মর্যাদা পাওয়ার কথা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তক রচিত হলেও সামগ্রিকভাবে এখনো তা করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টা খুবই সহজ। দুটি ভাষাই মর্যাদা পাওয়ার কথা, যেমন—একটি রাষ্ট্রভাষা, আরেকটি মাতৃভাষা। বিষয়টির দ্রুত সমন্বয় প্রয়োজন।
যেখান থেকে শুরু করেছিলাম—সেই পাঙ্খাপুলারদের বংশধররা আজ কোথাও আছে কি না বা তাদের বংশধররা পেশা পরিবর্তন করে কোন পেশায় আছে, তা আমাদের জানা নেই। কোনো গবেষক নিশ্চয়ই এ বিষয়ে মনোযোগী হবেন। আমার জানার বিষয়—ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার লড়াই-ই ছিল না, বৃহত্তর অর্থনীতির ক্ষেত্রেও একটা বড় ধরনের নাড়া লেগেছিল। তখন এসব প্রান্তিক শ্রেণি কে কোথায়, কীভাবে ছিটকে পড়ল, তা জানার আগ্রহ আমার রইল। যান্ত্রিক সভ্যতার প্রাক্কালে এই সব পেশাজীবী নানা আন্দোলনের অভিঘাতে কীভাবে বেঁচে রইল, তা অবশ্যই আমাদের জানার বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
পূর্ব বাংলায় পাঙ্খাপুলার, পালকির বেহারা, দারোয়ান, কোচোয়ান ও মেথররা সবাই ছিল বহিরাগত। উত্তর প্রদেশ, ভোজপুর, ওডিশা ও বিহার থেকে আসত এরা। বাংলা ভাষা তারা আধো আধো রপ্ত করেছিল। মূলত বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর আবেগ থাকার কথা না।
আমাদের ভাষা আন্দোলন একসময় সীমাবদ্ধ হয়েছিল শুধু ঢাকা শহরেই। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা, মেডিকেল কলেজ এবং তখনকার প্রাদেশিক পরিষদ ভবন এলাকা। একুশে ফেব্রুয়ারিতে গুলি চলার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ একটুখানি গুরুত্ব পেতে শুরু করে। বদরুদ্দীন উমরের ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর আন্দোলনের দিগন্ত বাড়তে থাকে। বইটিতে সেই সময়ের ইলা মিত্রের ঘটনা, টাঙ্গাইলের শামসুল হক বনাম খুররম খান পন্নীর নির্বাচন এবং সামগ্রিকভাবে সারা দেশের একটা চিত্র পাওয়া যায়।
এরপর অবশ্য ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনেক লেখাই প্রকাশিত হয়েছে। তবে একটি বিষয়ের প্রতি আমার কৌতূহল দীর্ঘদিনের। সেটি হচ্ছে পাঙ্খাপুলারদের নিয়ে। বিদ্যুৎ আসার আগে ভারতের বিত্তবান লোকেরা ছাদের নিচে প্রশস্ত একটি পাখা বানাত। পাখাটি মোটা কাপড়ের কয়েক পরত দিয়ে তৈরি হতো। বাঁশ বা কাঠের ওপর এই বস্ত্রনির্মিত পাখা ঝুলতে থাকত। পাখাটির সঙ্গে একটি লম্বা দড়ির সংযোগ ঘটানো হতো। সেই দড়িটির প্রান্তদেশে থাকতেন একজন লোক, যিনি নিরলসভাবে পাখাটি টানতে থাকতেন। পাখাটির ঠান্ডা বাতাস বিত্তবান শ্রেণির মানুষদের প্রশান্তি দিত। অফিস-আদালতে তো থাকতই, গৃহেও এই ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে বিদ্যুতের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর ছিল। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল অত্যন্ত কম। তাই সারা ভারতবর্ষে ষাটের দশক পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এ দেশে ব্রিটিশদেরও একমাত্র অবলম্বন ছিল এই পাখা। সারা রাত নিরলসভাবে পাঙ্খাপুলাররা কাজটি করে যেতেন। কদাচিৎ ঘুমিয়ে পড়তেন। ঘুমিয়ে পড়লেই তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চলত।
এই নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য কিছু ‘মানবিক’ ইংরেজ একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করল। পাঙ্খাপুলারদের চুলের সঙ্গে দড়িটি বেঁধে দেওয়া হতো। যখন ঘুম আসত, তখন চুলে টান পড়ত। চুলে টান পড়তেই পাঙ্খাপুলাররা জেগে উঠতেন। খুব অল্প বেতনে প্রায় বংশানুক্রমিকভাবে এই পাঙ্খাপুলাররাই কাজ করে যেতেন।
ইংরেজদের নথিপত্র ঘাঁটলে বোঝা যায়, সরকারের খাতায় পাঙ্খাপুলার এবং মশালচির চাকরির কথা উল্লেখ আছে। তবে সেই চাকরিগুলোয় স্থায়ী হওয়ার ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা লক্ষ করা যায় না। পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর এসব চাকরি যে একেবারেই অস্থায়ী এবং মাস্টাররোলে নির্দিষ্ট হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
১৯৪৭ সালের পরে যখন প্রাইমারি স্কুল বা হাইস্কুলের শিক্ষকেরাই বেতন পাচ্ছেন না, তখন পাঙ্খাপুলারদের কী অবস্থা হয়েছিল, তা সহজেই অনুমান করা যায়। বস্তুত ষাটের দশকের পরে এই পাঙ্খাপুলারদের আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে এই পাখা দেখতে পাওয়া যায়।
ভাষা আন্দোলনের পরে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রয়োজনে পাঙ্খাপুলারদের কাজে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা যে প্রাপ্য বেতন পেয়েছিলেন, তার কোনো নিশ্চয়তা কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। পূর্ব বাংলায় পাঙ্খাপুলার, পালকির বেহারা, দারোয়ান, কোচোয়ান ও মেথররা সবাই ছিল বহিরাগত। উত্তর প্রদেশ, ভোজপুর, ওডিশা ও বিহার থেকে আসত এরা। বাংলা ভাষা তারা আধো আধো রপ্ত করেছিল। মূলত বাংলা ভাষার প্রতি তাদের গভীর আবেগ থাকার কথা না। তবে এটাও তারা বুঝতে পারছিল যে, পাকিস্তান হওয়ায় তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন তো হবেই না বরং সীমান্তের বাধানিষেধের কারণে তাদের পিতৃপুরুষের ভূমিতেও আর ফিরে যাওয়া হবে না। তাই পাকিস্তান আমলে সবকিছু সয়ে তারা এখানেই বসবাস শুরু করে। জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ায় অনেকেই চাকরিচ্যুত হয়েছে। আবার কেউ কেউ মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে গেছে। বাঙালিদেরও তাদের প্রতি তেমন বিদ্বেষ ছিল না।
ফিরে আসি সেই ভাষা আন্দোলনের সময়ে। সেই সময় এসব শ্রেণি-পেশার লোকের জীবনে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তাই পুরো ব্যাপারটাই অনুমাননির্ভর হয়ে গেছে। ভাষা আন্দোলনের বিষয়টি এখানে এ কারণে প্রাসঙ্গিক যে, পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার পর বিষয়টি সামগ্রিকভাবে আমাদের জাতিসত্তাকে নাড়া দিয়েছিল। তখন এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, সহজেই অনুমান করা যায়—কিছু কিছু লোক আপন পিতৃভূমির টানে এ দেশ ত্যাগ করেছিল। সেই সঙ্গে এটাও প্রাসঙ্গিক, আমাদের দেশে যে বিভিন্ন জাতিসত্তার মানুষ আছে, তাদের মাতৃভাষা বাংলা নয়, তাদের ভূমিকাই বা কী ছিল?
যারা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ, তারা মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে গিয়ে বাংলার পক্ষেই দাঁড়িয়েছিল। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে তারা সমর্থন করেছিল এ কারণে যে, বাংলা রাষ্ট্রভাষা হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। বাংলা যদি রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়, তবে সংখ্যালঘুদের ভাষাগুলোও একসময় মর্যাদা পাবে। তা-ই হলো। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন ইউনেসকো কর্তৃক ঘোষিত হলো, তখন কিন্তু পৃথিবীর সব মাতৃভাষাই মর্যাদা পেল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতিসত্তার ভাষাগুলো একই কারণে মর্যাদা পাওয়ার কথা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তক রচিত হলেও সামগ্রিকভাবে এখনো তা করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টা খুবই সহজ। দুটি ভাষাই মর্যাদা পাওয়ার কথা, যেমন—একটি রাষ্ট্রভাষা, আরেকটি মাতৃভাষা। বিষয়টির দ্রুত সমন্বয় প্রয়োজন।
যেখান থেকে শুরু করেছিলাম—সেই পাঙ্খাপুলারদের বংশধররা আজ কোথাও আছে কি না বা তাদের বংশধররা পেশা পরিবর্তন করে কোন পেশায় আছে, তা আমাদের জানা নেই। কোনো গবেষক নিশ্চয়ই এ বিষয়ে মনোযোগী হবেন। আমার জানার বিষয়—ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার লড়াই-ই ছিল না, বৃহত্তর অর্থনীতির ক্ষেত্রেও একটা বড় ধরনের নাড়া লেগেছিল। তখন এসব প্রান্তিক শ্রেণি কে কোথায়, কীভাবে ছিটকে পড়ল, তা জানার আগ্রহ আমার রইল। যান্ত্রিক সভ্যতার প্রাক্কালে এই সব পেশাজীবী নানা আন্দোলনের অভিঘাতে কীভাবে বেঁচে রইল, তা অবশ্যই আমাদের জানার বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে