এস এস শোহান, বাগেরহাট
পুতুল আক্তার, বয়স ৩২ বছর। শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে সুন্দরবনসংলগ্ন ভোলা নদীর চরে। এ বয়সেই ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হতে পারেননি। চিকিৎসকেরা বলছেন, লবণপানি ব্যবহার ও পান করার কারণে এসব রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। সহজে ভালো হবে না।
পুতুলের শাশুড়ি ৬০ বছর বয়সী শেফালী বেগমের শরীরেও রয়েছে নানা রোগ। প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা ও শরীরে চুলকানি (চর্মরোগ)। টাকার অভাবে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন না।
তাঁদের প্রতিবেশী মমতাজ বেগম, তাছলিমা বেগম, মমতা বেগমও ভুগছেন কিডনি রোগে। ওষুধ সেবন করলে ভালো থাকেন, করতে না পরলে শরীর ফুলে ওঠে। এভাবেই দিন যায় তাঁদের। একই গ্রামের রুহুল মৃধা, লাকী বেগম, জামাল হোসেন, আলম মোল্লাসহ অনেকেরই রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। মাথাব্যথা কমাতে প্রতিনিয়ত ওষুধ সেবন করতে হয়।
পুতুল আক্তার বলেন, ‘অনেক কষ্টের জীবন আমার। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসেই লবণাক্ত পানিতে গোসল, রান্না ও খাওয়া শুরু হয়। তার পরই নানা রোগ দেখা দেয় শরীরে। এর মধ্যে দুটি বাচ্চা আসে আমাদের সংসারে। অভাবের তাড়নায় স্বামী চলে যান ঢাকায়। কোনোমতে বেঁচে আছি।’
একই ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘একটা সময় ছিল বলেশ্বর নদী থেকে আমাদের এই এলাকায় মিষ্টিপানি প্রবেশ করত। কিন্তু পশুর নদীর পানির চাপে আমাদের এখানে আর মিষ্টিপানি প্রবেশ করে না। ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের এলাকায় লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে। আমাদের ছোটবেলায় অর্থাৎ ১৯৬০-৭০ সালে পানিতে যে লবণ ছিল, এখন তার পরিমাণ আরও বেশি।’
শুধু নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন নয়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও সদর উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নের মানুষের শরীরের একই অবস্থা। প্রতিনিয়ত কিডনি রোগ, লিভারে সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাদশারহাট কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আজিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতি মাসে ক্লিনিকে সাড়ে সাত শ থেকে এক হাজার এক শ পর্যন্ত রোগী আসেন। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী, সাধারণ জ্বর-সর্দি ও চুলকানির রোগী সব থেকে বেশি। এ ছাড়া প্রতি মাসে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যা, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগ নিয়ে স্থানীয়রা আমার কাছে আসেন।’
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালেও বৃদ্ধি পাচ্ছে অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা। এই হাসপাতালে শুক্র-শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই লবণাক্ত পানির প্রভাবে আক্রান্ত নানা ধরনের রোগী আসেন। এর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও কিডনি সমস্যা নিয়ে দিনে গড়ে ৯০ থেকে ১১০ জন রোগী আসেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েডের আক্রান্ত রোগী আসেন ১৮০ থেকে ২৫০ জনের মতো।
বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, লবণ শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে লবণের পরিমাণ কমবেশি হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাগেরহাট অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষের শরীরে লবণের উপস্থিতি বেশি। যে কারণে এখানকার মানুষ নানা ধরনের অসংক্রামক রোগে ভোগেন। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও কিডনিজনিত সমস্যা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার মল্লিক বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাগেরহাটের মানুষের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ৫০০ কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। প্রতিবছরই নতুন নতুন গভীর নলকূপ, রেইন ওয়াটার হার্বেস্টিং সিস্টেম, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তারপরও সংকট দূর হচ্ছে না।
পুতুল আক্তার, বয়স ৩২ বছর। শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামে সুন্দরবনসংলগ্ন ভোলা নদীর চরে। এ বয়সেই ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হতে পারেননি। চিকিৎসকেরা বলছেন, লবণপানি ব্যবহার ও পান করার কারণে এসব রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। সহজে ভালো হবে না।
পুতুলের শাশুড়ি ৬০ বছর বয়সী শেফালী বেগমের শরীরেও রয়েছে নানা রোগ। প্রতিটি হাড়ের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা ও শরীরে চুলকানি (চর্মরোগ)। টাকার অভাবে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন না।
তাঁদের প্রতিবেশী মমতাজ বেগম, তাছলিমা বেগম, মমতা বেগমও ভুগছেন কিডনি রোগে। ওষুধ সেবন করলে ভালো থাকেন, করতে না পরলে শরীর ফুলে ওঠে। এভাবেই দিন যায় তাঁদের। একই গ্রামের রুহুল মৃধা, লাকী বেগম, জামাল হোসেন, আলম মোল্লাসহ অনেকেরই রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। মাথাব্যথা কমাতে প্রতিনিয়ত ওষুধ সেবন করতে হয়।
পুতুল আক্তার বলেন, ‘অনেক কষ্টের জীবন আমার। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসেই লবণাক্ত পানিতে গোসল, রান্না ও খাওয়া শুরু হয়। তার পরই নানা রোগ দেখা দেয় শরীরে। এর মধ্যে দুটি বাচ্চা আসে আমাদের সংসারে। অভাবের তাড়নায় স্বামী চলে যান ঢাকায়। কোনোমতে বেঁচে আছি।’
একই ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘একটা সময় ছিল বলেশ্বর নদী থেকে আমাদের এই এলাকায় মিষ্টিপানি প্রবেশ করত। কিন্তু পশুর নদীর পানির চাপে আমাদের এখানে আর মিষ্টিপানি প্রবেশ করে না। ফলে প্রতিনিয়ত আমাদের এলাকায় লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে। আমাদের ছোটবেলায় অর্থাৎ ১৯৬০-৭০ সালে পানিতে যে লবণ ছিল, এখন তার পরিমাণ আরও বেশি।’
শুধু নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন নয়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও সদর উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়নের মানুষের শরীরের একই অবস্থা। প্রতিনিয়ত কিডনি রোগ, লিভারে সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাদশারহাট কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) আজিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতি মাসে ক্লিনিকে সাড়ে সাত শ থেকে এক হাজার এক শ পর্যন্ত রোগী আসেন। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারী, সাধারণ জ্বর-সর্দি ও চুলকানির রোগী সব থেকে বেশি। এ ছাড়া প্রতি মাসে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যা, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিল রোগ নিয়ে স্থানীয়রা আমার কাছে আসেন।’
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালেও বৃদ্ধি পাচ্ছে অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা। এই হাসপাতালে শুক্র-শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই লবণাক্ত পানির প্রভাবে আক্রান্ত নানা ধরনের রোগী আসেন। এর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও কিডনি সমস্যা নিয়ে দিনে গড়ে ৯০ থেকে ১১০ জন রোগী আসেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েডের আক্রান্ত রোগী আসেন ১৮০ থেকে ২৫০ জনের মতো।
বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, লবণ শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে লবণের পরিমাণ কমবেশি হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাগেরহাট অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষের শরীরে লবণের উপস্থিতি বেশি। যে কারণে এখানকার মানুষ নানা ধরনের অসংক্রামক রোগে ভোগেন। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও কিডনিজনিত সমস্যা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার মল্লিক বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাগেরহাটের মানুষের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ৫০০ কোটি টাকার কাজ করা হয়েছে। প্রতিবছরই নতুন নতুন গভীর নলকূপ, রেইন ওয়াটার হার্বেস্টিং সিস্টেম, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তারপরও সংকট দূর হচ্ছে না।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে