হেতেম গুসেমি
গত ১৮ এপ্রিল তিউনিসিয়ার প্রধান বিরোধী দল এন্নাহদা পার্টির প্রধান ও বিলুপ্ত পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার রাশেদ ঘানৌচিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের অধীনে দেশটির স্বৈরশাসনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সর্বশেষ ও সম্ভবত সবচেয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।
প্রকৃতপক্ষে ২৭ রমজান, অর্থাৎ পবিত্র শবে কদরের রাতে ৮১ বছর বয়সী ঘানৌচিকে গ্রেপ্তার এবং তাঁকে ৪৮ ঘণ্টা আটকে রেখে এবং আইনজীবী পাওয়ার সুবিধা না দিয়ে প্রেসিডেন্ট সাইদ কঠিন বার্তা দিলেন। তিনি মূলত এ ঘোষণাই দিলেন যে তাঁর কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সমস্ত বিরোধিতা দূর করতে তাঁর সমালোচকদের মানবাধিকার বা দেশের আইনের শাসনকে পদদলিত করতে দ্বিধা করবেন না।
নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে স্তব্ধ করার জন্য ইচ্ছামতো নানা অভিযোগ আনা এবং নির্বিচারে আটক করার সাইদের এই কৌশল তিউনিসিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক জাইন আল-আবিদিন বেন আলির ব্যবহৃত কৌশলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বেন আলি তাঁর সমালোচকদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ ধরনের অপকৌশল প্রয়োগ করতেন। গত মাসের ঘটনায় দেশের অনেকে এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছে যে আজকের তিউনিসিয়া বেন আলির অধীনে যতটা ছিল, তার চেয়ে কোনোভাবেই বেশি গণতান্ত্রিক বা স্বাধীন নয়।
প্রকৃতপক্ষে, সাইদ এখন বেন আলির চেয়ে তিউনিসিয়ার ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। ভিন্নমত দমিয়ে রাখার এবং ক্ষমতা সংহত করার চেষ্টায় সাইদ তাঁর পূর্বসূরির চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক ও অনড়। এবং তিনি তাঁর অ্যাজেন্ডা বা কর্মপরিকল্পনা এগিয়ে নিতে তিউনিসিয়া রাষ্ট্রের ভিত্তিকে আক্রমণ ও ধ্বংস করতে কোনো কিছুর পরোয়া করেন না।
প্রেসিডেন্ট সাইদ পোড়ামাটির নীতি অনুসরণ করছেন, যা যেকোনো ধরনের বিরোধিতাকে হটিয়ে দিচ্ছে, মেরুকরণকে প্রশস্ত করছে, জাতিগত উত্তেজনাকে জোরদার করছে, উপজাতীয়তাকে প্রচার করছে এবং স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করছে। তিনি ধাপে ধাপে তিউনিসিয়াকে শুধু স্বৈরতান্ত্রিক নয়, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছেন।
২০২০ সালের একটি অভ্যুত্থানে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সাইদ তাঁর সমালোচক ও রাজনৈতিক বিরোধীদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অপরাধী সাব্যস্ত করে কারারুদ্ধ করছেন। তিনি বেসামরিক ও রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সমস্ত সহযোগিতা, বিশ্বাস, এমনকি যোগাযোগ ভেঙে দিয়েছেন।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং যেসব বিচারক তাঁর কাছে মাথা নত করতে অস্বীকার করেছেন, তাঁরাই তাঁর লক্ষ্য। এদের নির্মূল করতে সাইদ তিউনিসিয়ার এই একমাত্র অবশিষ্ট শক্তিকেও নিরস্ত্র করে দিতে চান। কারণ এটি তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। পাশাপাশি বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করতে পারলে সেটা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের আক্রমণ করার আরেকটি হাতিয়ারে পরিণত করতে পারে। তিনি তিউনিসিয়ার শীর্ষস্থানীয় ও একসময় অপেক্ষাকৃত স্বাধীন সংবাদমাধ্যমগুলোকে পুতুলে পরিণত করেছেন এবং বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং তাঁর সমালোচকদের ওপর অগণতান্ত্রিক ও অমানবিক আক্রমণে এসব সংবাদ সংস্থাকে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।
অথচ একসময় ইনডিপেনডেন্ট হাই অথরিটি ফর ইলেকশনস বা সংবাদ সংস্থা তিউনিস আফ্রিকা প্রেসকে (টিএপি) সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও স্বাধীন হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
সাইদ প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাত্র কয়েক বছর পর দেশ হিসেবে তিউনিসিয়ার নাগরিকদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালনের সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, যেমন—নিরাপত্তা, মৌলিক পরিষেবা এবং তিউনিসিয়ার জনগণের জন্য একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেওয়া।
গত কয়েক বছরে অনেক তিউনিসীয়র জন্য বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সম্পদের অব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য, পানি ও বাসস্থানের মতো মৌলিক জিনিস সরবরাহে অক্ষমতা ব্যাপক সামাজিক উদ্বেগ ও রাজনৈতিক হতাশার সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রের প্রতি আস্থাহীনতা আরও গভীর হয়েছে। কারণ, এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে প্রেসিডেন্ট সাইদ ও তাঁর সরকার জনগণের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন।
সাইদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এই উদগ্র বাসনা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার একটা ভারসাম্য সমস্ত ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ তিউনিসিয়ায় অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা ছাড়া আর কিছুই নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, প্রেসিডেন্ট সাইদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, তিনি যদি হঠাৎ মারা যান, তাহলে সাংবিধানিক শূন্যতা কীভাবে পূরণ হবে বা দেশের কী হবে, তা জানার কোনো উপায় নেই।
সাইদের কর্তৃত্ববাদী শাসন ও ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে অস্বীকার করার কারণে সংঘাত ও সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে। ভয়, অবিশ্বাস, অনাচার ও দায়মুক্তির বিষয়গুলো কেবল অভ্যন্তরীণ সহিংসতাকেই উৎসাহিত করছে না, বহিরাগত হস্তক্ষেপকেও উৎসাহিত করছে।
প্রকৃতপক্ষে, সাইদের সরকার যে তিউনিসিয়ার সীমান্ত দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষা করতে অক্ষম, তার প্রমাণ ইতিমধ্যে দিয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে অপরাধমূলক সহিংসতা এবং অনাচার বাড়ার কারণে সৃষ্ট ব্যাপক হতাশা জনগণকে পঙ্গু করে দেওয়ার সাক্ষ্য দেয়। সাইদের তিউনিসিয়ায় শহুরে অপরাধের ব্যাপকতা, নারী হত্যা এবং মানব পাচারের প্রসার সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলার অনুভূতি জাগিয়েছে, যা আসলে দূর করা কঠিন।
ক্ষমতা সুসংহত করতে সাইদ তিউনিসিয়ার সার্বভৌমত্বকেও বলি দিতে পিছপা নন। দেশটির নাগরিকেরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যাতে ইতালিতে ঢুকতে না পারে, সে জন্য ইতালির সরকার তাঁর শাসনের পক্ষে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির কাছে লবিং করেছে। এর মধ্য দিয়ে ইতালি তিউনিসিয়ার সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং এ প্রক্রিয়ায় বিরোধীদের প্রভাবকে দুর্বল করেছে। সাইদের শাসনকে সমর্থন করে ইতালি ও ফ্রান্স উভয়েই স্পষ্ট করেছে যে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের জন্য তিউনিসিয়ার সীমান্ত, আইন, গণতন্ত্র—সবকিছু অপ্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক সমর্থন ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের জন্য মরিয়া সাইদও তাঁর ও দেশের ভবিষ্যৎ পরিণতি বিবেচনা না করে যে কারও কাছ থেকে যেকোনো সাহায্য নিতে প্রস্তুত।
ঘানৌচির কারাবাসের ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে সাইদ তিউনিসিয়াকে শুধু একনায়কতন্ত্রেই রূপান্তরিত করেননি, একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পথেও নিয়ে গেছেন।
হেতেম গুসেমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরা অনলাইনে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
গত ১৮ এপ্রিল তিউনিসিয়ার প্রধান বিরোধী দল এন্নাহদা পার্টির প্রধান ও বিলুপ্ত পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার রাশেদ ঘানৌচিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনা প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের অধীনে দেশটির স্বৈরশাসনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার সর্বশেষ ও সম্ভবত সবচেয়ে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।
প্রকৃতপক্ষে ২৭ রমজান, অর্থাৎ পবিত্র শবে কদরের রাতে ৮১ বছর বয়সী ঘানৌচিকে গ্রেপ্তার এবং তাঁকে ৪৮ ঘণ্টা আটকে রেখে এবং আইনজীবী পাওয়ার সুবিধা না দিয়ে প্রেসিডেন্ট সাইদ কঠিন বার্তা দিলেন। তিনি মূলত এ ঘোষণাই দিলেন যে তাঁর কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সমস্ত বিরোধিতা দূর করতে তাঁর সমালোচকদের মানবাধিকার বা দেশের আইনের শাসনকে পদদলিত করতে দ্বিধা করবেন না।
নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে স্তব্ধ করার জন্য ইচ্ছামতো নানা অভিযোগ আনা এবং নির্বিচারে আটক করার সাইদের এই কৌশল তিউনিসিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক জাইন আল-আবিদিন বেন আলির ব্যবহৃত কৌশলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বেন আলি তাঁর সমালোচকদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ ধরনের অপকৌশল প্রয়োগ করতেন। গত মাসের ঘটনায় দেশের অনেকে এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছে যে আজকের তিউনিসিয়া বেন আলির অধীনে যতটা ছিল, তার চেয়ে কোনোভাবেই বেশি গণতান্ত্রিক বা স্বাধীন নয়।
প্রকৃতপক্ষে, সাইদ এখন বেন আলির চেয়ে তিউনিসিয়ার ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। ভিন্নমত দমিয়ে রাখার এবং ক্ষমতা সংহত করার চেষ্টায় সাইদ তাঁর পূর্বসূরির চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক ও অনড়। এবং তিনি তাঁর অ্যাজেন্ডা বা কর্মপরিকল্পনা এগিয়ে নিতে তিউনিসিয়া রাষ্ট্রের ভিত্তিকে আক্রমণ ও ধ্বংস করতে কোনো কিছুর পরোয়া করেন না।
প্রেসিডেন্ট সাইদ পোড়ামাটির নীতি অনুসরণ করছেন, যা যেকোনো ধরনের বিরোধিতাকে হটিয়ে দিচ্ছে, মেরুকরণকে প্রশস্ত করছে, জাতিগত উত্তেজনাকে জোরদার করছে, উপজাতীয়তাকে প্রচার করছে এবং স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করছে। তিনি ধাপে ধাপে তিউনিসিয়াকে শুধু স্বৈরতান্ত্রিক নয়, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছেন।
২০২০ সালের একটি অভ্যুত্থানে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সাইদ তাঁর সমালোচক ও রাজনৈতিক বিরোধীদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অপরাধী সাব্যস্ত করে কারারুদ্ধ করছেন। তিনি বেসামরিক ও রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সমস্ত সহযোগিতা, বিশ্বাস, এমনকি যোগাযোগ ভেঙে দিয়েছেন।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং যেসব বিচারক তাঁর কাছে মাথা নত করতে অস্বীকার করেছেন, তাঁরাই তাঁর লক্ষ্য। এদের নির্মূল করতে সাইদ তিউনিসিয়ার এই একমাত্র অবশিষ্ট শক্তিকেও নিরস্ত্র করে দিতে চান। কারণ এটি তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। পাশাপাশি বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করতে পারলে সেটা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীদের আক্রমণ করার আরেকটি হাতিয়ারে পরিণত করতে পারে। তিনি তিউনিসিয়ার শীর্ষস্থানীয় ও একসময় অপেক্ষাকৃত স্বাধীন সংবাদমাধ্যমগুলোকে পুতুলে পরিণত করেছেন এবং বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং তাঁর সমালোচকদের ওপর অগণতান্ত্রিক ও অমানবিক আক্রমণে এসব সংবাদ সংস্থাকে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।
অথচ একসময় ইনডিপেনডেন্ট হাই অথরিটি ফর ইলেকশনস বা সংবাদ সংস্থা তিউনিস আফ্রিকা প্রেসকে (টিএপি) সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও স্বাধীন হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
সাইদ প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাত্র কয়েক বছর পর দেশ হিসেবে তিউনিসিয়ার নাগরিকদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালনের সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, যেমন—নিরাপত্তা, মৌলিক পরিষেবা এবং তিউনিসিয়ার জনগণের জন্য একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেওয়া।
গত কয়েক বছরে অনেক তিউনিসীয়র জন্য বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সম্পদের অব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য, পানি ও বাসস্থানের মতো মৌলিক জিনিস সরবরাহে অক্ষমতা ব্যাপক সামাজিক উদ্বেগ ও রাজনৈতিক হতাশার সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রের প্রতি আস্থাহীনতা আরও গভীর হয়েছে। কারণ, এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে প্রেসিডেন্ট সাইদ ও তাঁর সরকার জনগণের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন।
সাইদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এই উদগ্র বাসনা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে দিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার একটা ভারসাম্য সমস্ত ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ তিউনিসিয়ায় অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা ছাড়া আর কিছুই নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, প্রেসিডেন্ট সাইদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, তিনি যদি হঠাৎ মারা যান, তাহলে সাংবিধানিক শূন্যতা কীভাবে পূরণ হবে বা দেশের কী হবে, তা জানার কোনো উপায় নেই।
সাইদের কর্তৃত্ববাদী শাসন ও ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে অস্বীকার করার কারণে সংঘাত ও সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে। ভয়, অবিশ্বাস, অনাচার ও দায়মুক্তির বিষয়গুলো কেবল অভ্যন্তরীণ সহিংসতাকেই উৎসাহিত করছে না, বহিরাগত হস্তক্ষেপকেও উৎসাহিত করছে।
প্রকৃতপক্ষে, সাইদের সরকার যে তিউনিসিয়ার সীমান্ত দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষা করতে অক্ষম, তার প্রমাণ ইতিমধ্যে দিয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে অপরাধমূলক সহিংসতা এবং অনাচার বাড়ার কারণে সৃষ্ট ব্যাপক হতাশা জনগণকে পঙ্গু করে দেওয়ার সাক্ষ্য দেয়। সাইদের তিউনিসিয়ায় শহুরে অপরাধের ব্যাপকতা, নারী হত্যা এবং মানব পাচারের প্রসার সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলার অনুভূতি জাগিয়েছে, যা আসলে দূর করা কঠিন।
ক্ষমতা সুসংহত করতে সাইদ তিউনিসিয়ার সার্বভৌমত্বকেও বলি দিতে পিছপা নন। দেশটির নাগরিকেরা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যাতে ইতালিতে ঢুকতে না পারে, সে জন্য ইতালির সরকার তাঁর শাসনের পক্ষে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির কাছে লবিং করেছে। এর মধ্য দিয়ে ইতালি তিউনিসিয়ার সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং এ প্রক্রিয়ায় বিরোধীদের প্রভাবকে দুর্বল করেছে। সাইদের শাসনকে সমর্থন করে ইতালি ও ফ্রান্স উভয়েই স্পষ্ট করেছে যে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের জন্য তিউনিসিয়ার সীমান্ত, আইন, গণতন্ত্র—সবকিছু অপ্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক সমর্থন ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের জন্য মরিয়া সাইদও তাঁর ও দেশের ভবিষ্যৎ পরিণতি বিবেচনা না করে যে কারও কাছ থেকে যেকোনো সাহায্য নিতে প্রস্তুত।
ঘানৌচির কারাবাসের ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়েছে যে সাইদ তিউনিসিয়াকে শুধু একনায়কতন্ত্রেই রূপান্তরিত করেননি, একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার পথেও নিয়ে গেছেন।
হেতেম গুসেমি, তিউনিসিয়ার শিক্ষাবিদ ও লেখক
(আল জাজিরা অনলাইনে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে