ক্রিকেটকে ‘সবার খেলা’ করতে চাইছে আইসিসি

রানা আব্বাস, দুবাই থেকে
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ০৯

দুবাই স্পোর্টস সিটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার (আইসিসি) সদর দপ্তরের পাশ দিয়েই যেতে হয় আইসিসি একাডেমি মাঠে। এই মাঠেই অনুশীলন সারে এশিয়া কাপের প্রতিটি দল। শুধু এশিয়া কাপই নয়, দুবাইয়ে যেকোনো বড় টুর্নামেন্ট হলেই আইসিসির একাডেমি মাঠই যেন দলগুলোর কাছে ঝালিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত জায়গা।

হাতছোঁয়া দূরত্বে থাকলেও আইসিসির সদর দপ্তর যখন-তখন ঘুরে দেখার সুযোগ নেই। গতকাল আইসিসি তাদের অন্দরটা ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিল এশিয়া কাপে আসা সাংবাদিকদের। সঙ্গে ছিল আমন্ত্রিতদের মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা।

আশির দশকের শুরুতে আমিরাতি ব্যবসায়ী আবুদল রহমান বুখাতিরের হাত ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেটের আমদানি মরুর দেশে। শারজায় সেই যে শুরু, আমিরাত পরে পরিণত হয়েছে ক্রিকেটের রাজধানীতে।

শুধু মরুতে নয়, আইসিসি ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে চায় পুরো পৃথিবীতেই। কীভাবে বিশ্বায়ন হবে খেলাটা, গতকাল আইসিসির সদর দপ্তরে সেটিই পরিষ্কার বোঝা গেল। আগামী ১০ বছরে খেলাকে আরও বিশ্বায়ন করতে তিনটি কৌশলগত ফ্রেমওয়ার্ক আর ছয়টি প্রকল্প নিয়েছে আইসিসি। প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে ডিজিটাল। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ২০৩২ সালের মধ্যে সরাসরি ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় তারা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে নারী ক্রিকেটের উন্নয়ন। তৃতীয়ত, অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করা।

অলিম্পিক এখনো অনেক দূরে হলেও এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাজারটা ধরতে চায় আইসিসি। যেহেতু উপমহাদেশের অসংখ্য প্রবাসী যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেন। আর শেষটি হচ্ছে অংশগ্রহণ বা পার্টিসিপেশন। আর তিনটি কৌশলগত ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে আছে প্রসার, ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করা আর অনৈতিক যেকোনো কিছু থেকে খেলার সুরক্ষা।

 ক্রিকেটকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে আইসিসির কার্যক্রম, কৌশল আর পরিকল্পনা নিয়ে গতকাল সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংহতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক। পরে অবশ্য দুই কর্মকর্তার সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়। তবে পাওয়া গেল আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে। লম্বা সময় আইসিসির গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার (এশিয়া) হিসেবে কর্মরত বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। গতকাল বুলবুল বলছিলেন তাঁদের বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে, ‘ডেভেলপমেন্টের পাঁচটি অফিস আছে পাঁচটি জায়গায়। এশিয়া বিভাগে আমরা তিনজন আছি। আমাদের কাজ হচ্ছে, যে দেশগুলো টেস্ট খেলে না, তাদের একটি ভালো দল তৈরি করে দেওয়া। তাদের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ, কোচদের উন্নয়ন, আম্পায়ারিংয়ে উন্নয়ন, আইসিসির বাছাই ভালো করা, সব মিলিয়ে আইসিসির কৌশলগুলো বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ। আমরা সারা বছরই এ কাজগুলো করে থাকি।’

বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্র তৈরিই হয়েছে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে। সময়ের সঙ্গে সেটিতে প্রভাব বিস্তার করেছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর ভারত। এটা ঠিক, ক্রিকেটকে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে আইসিসির উদ্যোগের শেষ নেই। কিন্তু জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে খেলাটা কেন যেন শুধু ৮-১০টি দেশই এগিয়ে থাকছে। আইসিসির মূল চ্যালেঞ্জটা এখানেই, ফুটবলের মতো ক্রিকেটকে সবার খেলা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে হতে হবে ফিফার মতোই শক্তিশালী, উদ্যোগী, সৃজনশীল। অবশ্য খেলাটার একাধিক সংস্করণ থাকায় সাম্য প্রতিষ্ঠা কঠিন হলেও এই চ্যালেঞ্জটা নিতেই হবে তাদের।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত