বিদ্রোহীরাই নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী

মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ৩৫
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৩

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ১১ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ভোটারদের কাছে টানতে প্রার্থীদের প্রচার ততই বাড়ছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় নিজেদের দলের বিদ্রোহীদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১ ইউপিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের শতাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। ৭ জানুয়ারি প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অনেক নেতা বিদ্রোহী হয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বেশ কটি ইউপিতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। এ বিষয়ে উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও মগটুলা ইউপিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হাদী বলেন, ‘জাপার প্রার্থী হিসেবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে ইনশা আল্লাহ জাপার প্রার্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারিছ উদ্দিন আহম্মেদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ ও সদর ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মন্ডল।

সোহাগী ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক জুলহাস উদ্দিন সুজন শাহ। সরিষা ইউপিতে তৎপর রয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভূঁইয়া। আঠারবাড়িতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন সরকার ও উপজেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য জসিম উদ্দিন।

জাটিয়া ইউপিতে মাঠে রয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু।

মগটুলা ইউপিতে ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক হাসিবুল ইসলাম খান রাজীব বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

রাজিবপুরে ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক নাজমুল হকের ছোট ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান একে এম মোদাব্বিরুল ইসলাম ও তারুন্দিয়া ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ফরিদ খান।

নৌকা প্রতীকের কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, যুবলীগ নেতারা তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে পক্ষে কাজ করলে নৌকার বিজয়ে আর কোনো বাধা থাকত না। এখন নৌকার বিজয়ে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যুবলীগ।

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদুল ইসলাম ভূঁইয়া সুমন বলেন, ‘জেলা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এসেছে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করার। আমরা উপজেলা যুবলীগ সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি এবং ইউনিয়ন পর্যায়েও একই নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু বেশ কটি ইউপিতে যুবলীগ নেতারা দলীয় প্রতীক না পেয়ে নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘সপ্তম ধাপে উপজেলার ১১ ইউপিতে অনেক যাচাই-বাছাই করেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক তুলে দিয়েছেন। প্রতিটি ইউপিতে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয় হয়ে কাজ করছেন’।

রফিকুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, ‘তবে বেশ কটি ইউপিতে নৌকা ডোবাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতারা চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। ইতিমধ্যে কয়েক দফা বোঝানোর পরও তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। তাই যাঁরা আওয়ামী লীগের হয়েও নৌকার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত