বিভুরঞ্জন সরকার
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুতে যতটা শিক্ষার্থীদের নির্দোষ আন্দোলন ছিল, শেষ পর্যন্ত আর তা থাকেনি। সরকার শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারেনি। যে দাবি পানি ঘোলা হওয়ার পর মানা হলো, সেটা শুরুতে মানা হলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠত না। আবার শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকেরাও এটা বোঝার চেষ্টা করেননি কোথায় তাঁদের থামতে হবে। মূল দাবি মেনে নেওয়ার পরও তাঁরা যেভাবে নতুন নতুন দাবি উত্থাপন করছেন, তা থেকে এটা মনে হতেই পারে যে তাঁরাও পানি ঘোলা করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার দায় অবশ্যই সরকারের। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে এক হাতে তালি বাজে না।
আমার দীর্ঘ সাংবাদিকতার জীবনে যেমন অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেছি, তেমনি ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে সেই উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী অনেক আন্দোলনে নিজে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেভাবে পুলিশের গুলি এবং পুলিশের ওপর গুলি-আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তা আগে কখনো ঘটেনি। এটা ছিল অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক। বাংলাদেশকে আন্দোলন-সংগ্রামের দেশ বলা হয়। কিন্তু অতীতের কোনো একক আন্দোলনে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। প্রশ্ন উঠেছে, এত মৃত্যু কি কোনো পক্ষের ভুল বা অদক্ষতার কারণে হলো না? আন্দোলনকারীদের ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও প্রাণহানির ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু চার দিনের মধ্যে শতাধিক মানুষের মৃত্যু আগে কখনো ঘটেছে বলে মনে পড়ে না।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে সারা দেশে একযোগে একমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি। সহিংসতার ঘটনাও রাজধানীর কয়েকটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে সীমাবদ্ধ ছিল। উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা—মূলত এই তিনটি এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কেন ব্যর্থ হলো, সেটা যেমন খতিয়ে দেখা দরকার, তেমনি এ এলাকাগুলোই কেন বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে উঠল, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি এ বিষয়গুলো নিশ্চয়ই বিবেচনায় নেবে। এটাও আশা করব, অতীতে যেমন কোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি, এবারও যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি মানুষের মনে তদন্ত কমিটি নিয়ে যে অনাস্থা, সেটা দূর করার ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এবার পুলিশ কেন ব্যর্থ হলো, সে বিষয়ে একটু আলোচনা করা যাক। কেউ হয়তো বলবেন, পুলিশকে আমি ব্যর্থ বলছি কেন? উত্তর হলো, সাধারণভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। যখন পুলিশকে সহায়তার জন্য বিজিবি নামানো হয়, তখনই এটা স্পষ্ট হয় যে পুলিশ আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছে না। আর এখন তো সেনাবাহিনীকেও মাঠে নামানো হয়েছে। ফলে পুলিশ বাহিনী নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তার সময় এসেছে।
পুলিশকে জনগণের বন্ধু বলা হয়। বিপদে-আপদে মানুষ পুলিশের কাছেই যায়। কিন্তু এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেখা গেল, পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণা বেশি। পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে, এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কমপক্ষে তিনজন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। কেবল ডিউটিরত পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে, তা-ই নয়, সাদাপোশাকে রাস্তায় চলাচলের সময়ও অনেকে ক্ষুব্ধ জনগণের রোষানলে পড়েছেন। মারপিটের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের অন্তত ৩০ শতাংশ ছিলেন সাদাপোশাকে।
প্রশ্ন হলো, পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের এত ক্ষোভ কেন? মানুষের বন্ধু না হয়ে পুলিশ কেন শত্রু হয়ে উঠল? অথচ করোনার সময়ও তো আমরা দেখেছি পুলিশকে মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। পুলিশের ভাবমূর্তি এতটা বিনষ্ট হলো কি শুধু কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করায়? আমার মনে হয়, এর বড় কারণ, কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে পুলিশের একটি বড় অংশ শাসক দলের কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। জনগণের সঙ্গে মিশে, তাদের মধ্যে থেকে, তাদের হয়ে কাজ না করে তারা শাসক দলের ইচ্ছাপূরণে কাজ করেছে। দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালনের পরিবর্তে দুষ্টদের সঙ্গে মিশে শিষ্টদের ওপর পীড়ন চালিয়েছে। দেশের মানুষকে তারা শাসক দলের চোখে দেখেছে।
এখন শাসক দলের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তাই স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের ওপর গিয়ে পড়েছে।
আবার সরকারের পক্ষ থেকেও পুলিশে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা ও পেশাদারি মনোভাবের গুরুত্ব না দিয়ে আনুগত্য বা অন্য কোনো বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নিয়ম না মানা, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, অযোগ্যদের পদায়ন ইত্যাদি কারণে পুলিশের পেশাদারি নষ্ট হয়েছে। অথচ পুলিশ সংস্কার প্রকল্প-২০০৭-এর লক্ষ্যই ছিল পুলিশের গুণগত মান বাড়ানো।
পুলিশের জন্য সরকার ব্যয় কিন্তু কম করেনি। শত শত কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে। দামি গাড়ি, রোবট, হেলিকপ্টার, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র—সবই দেওয়া হয়েছে। দাঙ্গা দমনের সব ধরনের উপকরণে সমৃদ্ধ করা হয়েছে পুলিশ বাহিনীকে। পুলিশের কাছে এমন সাবমেশিনগান আছে, যা দিয়ে প্রতি মিনিটে ৬০০ গুলি ছোড়া যায়। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও থানা ও পুলিশ বক্স আক্রান্ত হলে পুলিশ কেন সেগুলো রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়?
এর উত্তর একটাই—মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া এবং জনগণকে প্রতিপক্ষ ভাবা। একটি গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে এমনটা হওয়ার কথা নয়।
আমার মনে হয়, নানা কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশকে মানুষ শত্রু ভাবতে শুরু করেছে। বল প্রয়োগ করে, শক্তি দেখিয়ে সাময়িক সুফল হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু পরে আবার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে না, তা কে বলবে। এখন জরুরি প্রয়োজন পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা। পুলিশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধ তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। সামরিক বাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আমরা যেন ভুলে না যাই যে মানুষের মনে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তা দূর করাই হলো আসল কাজ। সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে জোড়াতালি দিয়ে সংকট থেকে উত্তরণের পথে হাঁটা দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুতে যতটা শিক্ষার্থীদের নির্দোষ আন্দোলন ছিল, শেষ পর্যন্ত আর তা থাকেনি। সরকার শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারেনি। যে দাবি পানি ঘোলা হওয়ার পর মানা হলো, সেটা শুরুতে মানা হলে হয়তো পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠত না। আবার শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকেরাও এটা বোঝার চেষ্টা করেননি কোথায় তাঁদের থামতে হবে। মূল দাবি মেনে নেওয়ার পরও তাঁরা যেভাবে নতুন নতুন দাবি উত্থাপন করছেন, তা থেকে এটা মনে হতেই পারে যে তাঁরাও পানি ঘোলা করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার দায় অবশ্যই সরকারের। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে এক হাতে তালি বাজে না।
আমার দীর্ঘ সাংবাদিকতার জীবনে যেমন অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম প্রত্যক্ষ করেছি, তেমনি ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে সেই উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী অনেক আন্দোলনে নিজে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা থেকে এটা বলতে পারি, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেভাবে পুলিশের গুলি এবং পুলিশের ওপর গুলি-আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তা আগে কখনো ঘটেনি। এটা ছিল অপ্রত্যাশিত ও অস্বাভাবিক। বাংলাদেশকে আন্দোলন-সংগ্রামের দেশ বলা হয়। কিন্তু অতীতের কোনো একক আন্দোলনে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। প্রশ্ন উঠেছে, এত মৃত্যু কি কোনো পক্ষের ভুল বা অদক্ষতার কারণে হলো না? আন্দোলনকারীদের ওপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও প্রাণহানির ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু চার দিনের মধ্যে শতাধিক মানুষের মৃত্যু আগে কখনো ঘটেছে বলে মনে পড়ে না।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে সারা দেশে একযোগে একমাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি। সহিংসতার ঘটনাও রাজধানীর কয়েকটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে সীমাবদ্ধ ছিল। উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা—মূলত এই তিনটি এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কেন ব্যর্থ হলো, সেটা যেমন খতিয়ে দেখা দরকার, তেমনি এ এলাকাগুলোই কেন বিস্ফোরণোন্মুখ হয়ে উঠল, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি এ বিষয়গুলো নিশ্চয়ই বিবেচনায় নেবে। এটাও আশা করব, অতীতে যেমন কোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি, এবারও যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি মানুষের মনে তদন্ত কমিটি নিয়ে যে অনাস্থা, সেটা দূর করার ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এবার পুলিশ কেন ব্যর্থ হলো, সে বিষয়ে একটু আলোচনা করা যাক। কেউ হয়তো বলবেন, পুলিশকে আমি ব্যর্থ বলছি কেন? উত্তর হলো, সাধারণভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। যখন পুলিশকে সহায়তার জন্য বিজিবি নামানো হয়, তখনই এটা স্পষ্ট হয় যে পুলিশ আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছে না। আর এখন তো সেনাবাহিনীকেও মাঠে নামানো হয়েছে। ফলে পুলিশ বাহিনী নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তার সময় এসেছে।
পুলিশকে জনগণের বন্ধু বলা হয়। বিপদে-আপদে মানুষ পুলিশের কাছেই যায়। কিন্তু এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেখা গেল, পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণা বেশি। পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে, এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত কমপক্ষে তিনজন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। কেবল ডিউটিরত পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে, তা-ই নয়, সাদাপোশাকে রাস্তায় চলাচলের সময়ও অনেকে ক্ষুব্ধ জনগণের রোষানলে পড়েছেন। মারপিটের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের অন্তত ৩০ শতাংশ ছিলেন সাদাপোশাকে।
প্রশ্ন হলো, পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের এত ক্ষোভ কেন? মানুষের বন্ধু না হয়ে পুলিশ কেন শত্রু হয়ে উঠল? অথচ করোনার সময়ও তো আমরা দেখেছি পুলিশকে মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছে। পুলিশের ভাবমূর্তি এতটা বিনষ্ট হলো কি শুধু কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করায়? আমার মনে হয়, এর বড় কারণ, কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে পুলিশের একটি বড় অংশ শাসক দলের কর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। জনগণের সঙ্গে মিশে, তাদের মধ্যে থেকে, তাদের হয়ে কাজ না করে তারা শাসক দলের ইচ্ছাপূরণে কাজ করেছে। দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালনের পরিবর্তে দুষ্টদের সঙ্গে মিশে শিষ্টদের ওপর পীড়ন চালিয়েছে। দেশের মানুষকে তারা শাসক দলের চোখে দেখেছে।
এখন শাসক দলের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ তাই স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের ওপর গিয়ে পড়েছে।
আবার সরকারের পক্ষ থেকেও পুলিশে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা ও পেশাদারি মনোভাবের গুরুত্ব না দিয়ে আনুগত্য বা অন্য কোনো বিবেচনাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নিয়ম না মানা, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া, অযোগ্যদের পদায়ন ইত্যাদি কারণে পুলিশের পেশাদারি নষ্ট হয়েছে। অথচ পুলিশ সংস্কার প্রকল্প-২০০৭-এর লক্ষ্যই ছিল পুলিশের গুণগত মান বাড়ানো।
পুলিশের জন্য সরকার ব্যয় কিন্তু কম করেনি। শত শত কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে। দামি গাড়ি, রোবট, হেলিকপ্টার, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র—সবই দেওয়া হয়েছে। দাঙ্গা দমনের সব ধরনের উপকরণে সমৃদ্ধ করা হয়েছে পুলিশ বাহিনীকে। পুলিশের কাছে এমন সাবমেশিনগান আছে, যা দিয়ে প্রতি মিনিটে ৬০০ গুলি ছোড়া যায়। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও থানা ও পুলিশ বক্স আক্রান্ত হলে পুলিশ কেন সেগুলো রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়?
এর উত্তর একটাই—মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া এবং জনগণকে প্রতিপক্ষ ভাবা। একটি গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে এমনটা হওয়ার কথা নয়।
আমার মনে হয়, নানা কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশকে মানুষ শত্রু ভাবতে শুরু করেছে। বল প্রয়োগ করে, শক্তি দেখিয়ে সাময়িক সুফল হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু পরে আবার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে না, তা কে বলবে। এখন জরুরি প্রয়োজন পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা। পুলিশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধ তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। সামরিক বাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আমরা যেন ভুলে না যাই যে মানুষের মনে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তা দূর করাই হলো আসল কাজ। সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে জোড়াতালি দিয়ে সংকট থেকে উত্তরণের পথে হাঁটা দূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে না।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৪ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে