মুকুল কম, দুশ্চিন্তা আমচাষিদের

সনি আজাদ, চারঘাট 
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭: ৩১
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১১: ৫৫

সুস্বাদু আমের জন্য বিখ্যাত রাজশাহী জেলা। এ জেলার চারঘাট ও বাঘা এই দুই উপজেলায় অধিকাংশ আম চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরোলেও এই দুই উপজেলার আমবাগানগুলোতে আসেনি কাঙ্ক্ষিত মুকুল। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাগানমালিকেরা। তাঁরা বলছেন, বাগানের ৩০ শতাংশ গাছে মুকুল আসেনি।

কৃষি বিভাগ বলছে, আমগাছগুলোতে মুকুল আসার সময় শেষ, যা মুকুল এসেছে ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে তাতেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

জানা যায়, সাধারণত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমগাছে মুকুল আসে। মুকুলের গন্ধে ভরে যায় আশপাশ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও যেমন মুকুল আসেনি, তেমনি কিছুদিন আগের অনাবৃষ্টিতে ঝরেছে গাছের মুকুল। এ ছাড়া গত বছর মেলেনি আমের কাঙ্ক্ষিত দাম, যা কৃষকের চিন্তাকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী জেলায় প্রায় ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এর মধ্যে শুধু চারঘাট ও বাঘা এ দুই উপজেলায় আমবাগান আছে প্রায় ১২ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে। জেলায় আমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এই দুই উপজেলার আম উৎপাদনের ওপরে নির্ভর করে। অথচ এ মৌসুমে এসব এলাকার চাষিরা গাছে মুকুল কম আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

চারঘাটের পরানপুর, ভায়ালক্ষ্মীপুর, রায়পুর ও বাঘার তুলশিপুর ও মনিগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যে বাগানের গাছগুলোতে মুকুল এসেছে তার অবস্থা অনেক ভালো। সেখানে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আমগাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিকেরা।

চারঘাটের রায়পুর গ্রামের আমবাগান মালিক ছদর উদ্দীন বলেন, তাঁর বাগানে দেড় শতাধিক আমগাছ রয়েছে। এর মধ্যে সন্তোষজনক মুকুল আছে ৫০ ভাগ গাছে। এসব মুকুল এসেছে মৌসুমের শেষের দিকে। এ কারণে গাছে মুকুল এলেও তা টেকানো মুশকিল হবে।

বাঘার তুলশিপুর এলাকার বাগানমালিক তারিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত একটি মৌসুমে ছোট বাগানে পরিচর্যা বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ফলন ও দাম ভালো পেলে খরচের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি লাভ হয়। এবার মুকুল কিছুটা কম এসেছে। তারপরও যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তবে কিছুটা লাভ আসবে।

আমের মুকুলের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলিম উদ্দিন বলেন, চারঘাট-বাঘা উপজেলাসহ জেলার আমগাছগুলোতে মৌসুমের শুরুতে মুকুলের পরিমাণ কম ছিল। তবে দেরিতে হলেও ৭০-৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। এখন সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে আমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, কৃষকেরাও লাভবান হবেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, বর্তমানে যে গাছগুলোতে মুকুল রয়েছে, সেগুলোতে ভালোভাবে পরিচর্যা করলে ফলনের কোনো ঘাটতি হবে না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত