বিভুরঞ্জন সরকার
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি নির্দোষ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেখানে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা কাম্য ছিল না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, গাফিলতির কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়ে একটি অনভিপ্রেত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো কারণে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দিলে যে মানবিক ও সংবেদনশীল মনোভাব নিয়ে তা নিরসনের চেষ্টা করা উচিত, সেটা না করে তাদের ওপর বলপ্রয়োগের কৌশল গ্রহণ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে সন্তানের মতো ভাবলেই অহেতুক, অপ্রীতিকর ও অবাঞ্ছিত অনেক পরিস্থিতি এড়ানো যেতে পারে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষক প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তাঁদের শিক্ষকসুলভ আচরণের কথা মনে রাখা জরুরি। মনে রাখা দরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা আমলাতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে করা যায় না, করা ঠিকও নয়। প্রশাসনিক কঠোরতা-জটিলতায় ক্যাম্পাস না মুড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার দিক গভীর মমতা দিয়ে দেখার চেষ্টা করাই বাঞ্ছিত। কোনো কারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চৌহদ্দিতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান প্রত্যাশিত নয়।
সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। হলের প্রাধ্যক্ষ, সহকারী প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ, খাবারের মান উন্নত করাসহ যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছিল আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে। ছাত্রীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শুক্রবার আবার আন্দোলনে নামলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
ছাত্রীরা দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। ছাত্রলীগ কেন লাঠিয়ালের ভূমিকায় নামল? ছাত্রলীগের এই এক বড় সমস্যা। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটি এখন ভালো কাজ করে খবর তৈরি করতে না পারলেও খারাপ কাজ করে প্রায়ই খবর হয়।
ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষর্থীরাও তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে শামিল হন। ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে উত্তাল। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবির কথা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে জানাতে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। ব্যস, উপাচার্যকে মুক্ত করতে ডাকা হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে তাঁদের যা করার তা-ই করে। শিক্ষার্থীদের হটাতে শক্তি প্রয়োগ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পথে না হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলপ্রয়োগের নীতিতেই চলে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের একাংশ এই নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের এখন নতুন দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ। এই দাবি পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত বা স্বাভাবিক হবে বলে মনে হয় না।
এখন এটা ব্যাপকভাবেই শোনা যায় যে, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ ও পদবি পাওয়ার জন্য সরকার এবং সরকারি দলের সঙ্গে ভাবখাতির রাখতে হয়। সরকারের আস্থা না পেলে পদ-পদবিও পাওয়া যায় না। পদ-পদবি পাওয়ার সংকীর্ণ রাজনীতি শিক্ষকদের অনেককে আর শিরদাঁড়া সোজা রেখে নীতি-নৈতিকতা মেনে চলতে দিচ্ছে না। যাঁরা পদপ্রাপ্ত হন, তাঁরা পদ রক্ষায় ব্যতিব্যস্ত থাকেন বলে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামান না। ফলে শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার কথা বললে ওই পদাধিকারীরা মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন না। শিক্ষকের ভূমিকা থেকে তাঁরা নামেন নিপীড়কের চরিত্রে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনাই ঘটেছে।
করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষাজীবনে অনেক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভবিষ্যতের ভাবনায় অনেকে হতাশ। পরিবারগুলো আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে। এখন আবার হুটহাট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলে যে চাপ তৈরি হয়, সেটা বহনের ক্ষমতা অনেক শিক্ষার্থী ও তাঁর পরিবারের নেই। যাঁরা পদ-পদবি নিয়ে আছেন, তাঁদের নিয়মিত আয় আছে, সব নিরাপত্তা আছে, কজন শিক্ষার্থীর জীবন তেমন নিরাপদ? সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবুন, কথা বলার আগেও ভাবুন—যা করছেন, যা বলছেন তা ন্যায়ানুগ কি না।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি নির্দোষ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেখানে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা কাম্য ছিল না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, গাফিলতির কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়ে একটি অনভিপ্রেত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো কারণে ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দিলে যে মানবিক ও সংবেদনশীল মনোভাব নিয়ে তা নিরসনের চেষ্টা করা উচিত, সেটা না করে তাদের ওপর বলপ্রয়োগের কৌশল গ্রহণ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে সন্তানের মতো ভাবলেই অহেতুক, অপ্রীতিকর ও অবাঞ্ছিত অনেক পরিস্থিতি এড়ানো যেতে পারে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষক প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তাঁদের শিক্ষকসুলভ আচরণের কথা মনে রাখা জরুরি। মনে রাখা দরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা আমলাতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে করা যায় না, করা ঠিকও নয়। প্রশাসনিক কঠোরতা-জটিলতায় ক্যাম্পাস না মুড়িয়ে শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার দিক গভীর মমতা দিয়ে দেখার চেষ্টা করাই বাঞ্ছিত। কোনো কারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চৌহদ্দিতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান প্রত্যাশিত নয়।
সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা তিন দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। হলের প্রাধ্যক্ষ, সহকারী প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ, খাবারের মান উন্নত করাসহ যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছিল আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পক্ষ থেকে। ছাত্রীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শুক্রবার আবার আন্দোলনে নামলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
ছাত্রীরা দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। ছাত্রলীগ কেন লাঠিয়ালের ভূমিকায় নামল? ছাত্রলীগের এই এক বড় সমস্যা। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটি এখন ভালো কাজ করে খবর তৈরি করতে না পারলেও খারাপ কাজ করে প্রায়ই খবর হয়।
ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষর্থীরাও তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে শামিল হন। ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে উত্তাল। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবির কথা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে জানাতে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। ব্যস, উপাচার্যকে মুক্ত করতে ডাকা হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে তাঁদের যা করার তা-ই করে। শিক্ষার্থীদের হটাতে শক্তি প্রয়োগ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পথে না হেঁটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলপ্রয়োগের নীতিতেই চলে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের একাংশ এই নির্দেশ অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের এখন নতুন দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ। এই দাবি পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত বা স্বাভাবিক হবে বলে মনে হয় না।
এখন এটা ব্যাপকভাবেই শোনা যায় যে, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ ও পদবি পাওয়ার জন্য সরকার এবং সরকারি দলের সঙ্গে ভাবখাতির রাখতে হয়। সরকারের আস্থা না পেলে পদ-পদবিও পাওয়া যায় না। পদ-পদবি পাওয়ার সংকীর্ণ রাজনীতি শিক্ষকদের অনেককে আর শিরদাঁড়া সোজা রেখে নীতি-নৈতিকতা মেনে চলতে দিচ্ছে না। যাঁরা পদপ্রাপ্ত হন, তাঁরা পদ রক্ষায় ব্যতিব্যস্ত থাকেন বলে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামান না। ফলে শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যার কথা বললে ওই পদাধিকারীরা মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন না। শিক্ষকের ভূমিকা থেকে তাঁরা নামেন নিপীড়কের চরিত্রে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনাই ঘটেছে।
করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষাজীবনে অনেক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভবিষ্যতের ভাবনায় অনেকে হতাশ। পরিবারগুলো আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে। এখন আবার হুটহাট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হলে যে চাপ তৈরি হয়, সেটা বহনের ক্ষমতা অনেক শিক্ষার্থী ও তাঁর পরিবারের নেই। যাঁরা পদ-পদবি নিয়ে আছেন, তাঁদের নিয়মিত আয় আছে, সব নিরাপত্তা আছে, কজন শিক্ষার্থীর জীবন তেমন নিরাপদ? সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবুন, কথা বলার আগেও ভাবুন—যা করছেন, যা বলছেন তা ন্যায়ানুগ কি না।
লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৫ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে