সখীপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় পাঁচজনকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। ডাকবাংলো চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত শিকদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন কাঁকড়াজান ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী দুলাল হোসেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য ও সমর্থক ছিলেন। বহেড়াতৈল ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। যাদবপুর ইউপিতে খন্দকার বজলুর রহমান বাবুল। বাবুল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ।

বহুরিয়া ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার নূরে আলম মুক্তা ও নিরাঞ্জন বিশ্বাসকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। সরকার নূরে আলম মুক্তা বহুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির সদস্য ছিলেন। নিরাঞ্জন বিশ্বাস আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য ও সমর্থক।

সাধারণ সম্পাদক শওকত শিকদার বলেন, ইউপি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারজনকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। ওই সব ইউনিয়নে দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে কয়েকজনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের গতকালের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় সিদ্ধান্ত না মানা ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কৃত ওই পাঁচজনের মধ্যে চারজন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে তাঁরা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে বহেড়াতৈল ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস এবার দলীয় মনোনয়ন চাননি।

সরেজমিনে উপজেলার ওই চারটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিরাজ করছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহাওয়া। গ্রামগঞ্জের বাজার, হোটেল ও চায়ের দোকানগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের বিষয় নিয়েও আলাপ-আলোচনা করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে নির্বাচন উৎসবমুখর হয় না। প্রার্থীদের কাছে সাধারণ ভোটারদের কদরও থাকে না। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা দুর্বার প্রচারণায় মেতে উঠেছেন।

বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার বজলুর রহমান বাবুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন কোনো সাংগঠনিক পদে না থাকলেও নেতারা যা ভালো মনে করেছেন সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ আমার ইউনিয়নের প্রকৃত জনমত যাচাই করে মনোনয়ন দেয়নি। তাই জনগণের চাওয়ার জন্যই প্রার্থী হয়েছি। আশা করছি জনগণ সঠিক রায় দেবে। ’

বহুরিয়া ইউপির বিদ্রোহী প্রার্থী সরকার নূরে আলম মুক্তা বলেন, ‘দলীয়ভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। দল মনোনয়ন দেওয়ার আগেই যথাযথভাবে ইউনিয়ন পর্যায়ের তৃণমূলের জনমত জরিপ করেনি। করলে দলীয় মনোনয়ন আমারই পাওয়ার কথা ছিল। আশা করি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্ত কেমন ছিল তাও- বোঝা যাবে।’