টমেটোর ফলন ও দাম ভালো, খুশি কৃষকেরা

জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ৪৭
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৪

জামালপুরের চরাঞ্চলে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বছরের শুরু থেকেই টমেটোর ফলন বেশি ও দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষকেরা। প্রথম দিকে প্রতিমণ টমেটো বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। বর্তমান বাজার ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। কৃষি অফিস বলছে, খরচ কম, লাভ বেশি পাওয়ায় দিন দিন এই অঞ্চলে টমেটো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জামালপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চল শরিফপুর, তুলশীচর, বারুয়ামারি, টিকরাকান্দি, নরুন্দি, নান্দিনায় এ বছর টমেটোর চাষ হয়েছে। কৃষকেরা জানিয়েছেন, গত বছর টমেটো চাষ করে তারা লোকসানে পড়েছিলেন। এ বছর তাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছেন। প্রতি বিঘায় টমেটো আবাদে তাদের খরচ হয়েছে ৫০-৬০ হাজার টাকা। সেখানে বিক্রি করেছেন ২ থেকে ৩ লাখ টাকা। যা লাভের অংশ দ্বিগুণ। এ বছর চরাঞ্চলে বারী, বিউটিফুল, বিউটিফুল-২, বিউটিফুল-৩, এবং বিফুলপ্লাস জাতের টমেটো চাষ করা হয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে পাইকারেরা এসে টমেটো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানী ঢাকার কাওরান বাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুরসহ বিভিন্নস্থান থেকে পাইকারেরা এ অঞ্চলের টমেটো নিয়ে যাচ্ছেন।

কাওরান বাজারের পাইকার মোতালেব হোসেন বলেন, প্রতিবছর এই অঞ্চলের টমেটো পাইকারেরা কিনে নিয়ে যায়। এখানকার টমেটো ভালো। সুস্বাধু, রং সাইজ সবকিছুতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। তাই দেশের অন্য জেলার চেয়ে এই টমেটো নিতে বেশি আগ্রহী। গত বছর টমেটো চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল। এতে কৃষকেরা টমেটো চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল। অনেকের ঘরে আবাদের খরচই তুলতে পারেনি। এ বছর টমেটোর ফলন বেশি পাওয়ায় গত বছরের ক্ষতিও পুষিয়েছেন বলে জানান। চর যথার্থপুর এলাকার টমেটো চাষি সাজু মিয়া বলেন, এ বছর শুরুতেই লাভ পেয়েছি। প্রতিটি গাছে জোয়ার ঠিক ছিল, ফলন ঝড়ে পড়ে নাই। টমেটোর সাইজ বড় বড়। প্রতি বিঘায় ৮০-৮৫ মণ টমেটো তুলেছি। প্রতিমণ ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় শুরুতেই বিক্রি করেছি। এতে খরচের দ্বিগুণ টাকা লাভ করেছি। এখনো খেতে যা আছে তাতে আরও বেশি লাভবান হবো। টমেটো চাষি শহীদুল, হনু মিয়া, সালাম এবং গেন্দু মিয়া বলেন, গত বছর উদয়ন আর সফল জাতের টমেটো করেছিলাম। তাতে প্রতিটি বাগানের অবস্থা খারাপ ছিল। পাতা কুকরা হয়ে গাছ মরে গেছে। এ বছর বিউটিফুল জাতের টমেটো আবাদ করেছি। গত বছরের চেয়ে এ বছর গাছ ভালো ফলন বেশি হয়েছে।

টমেটো চাষিরা জানিয়েছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর ফলন ভালো। প্রতি জোয়ারে ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৫০-৬০ হাজার টাকা। জামালপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা ইয়াছমিন বলেন, এ বছর জামালপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে। এ টমেটো আবাদ করে কৃষকেরা খুবই খুশি। কারণ এ বছর ফলন বেশি এবং বাজারে দামও বেশি। তারা প্রতি হেক্টরে ৮০ থেকে ৮৫ মেট্রিকটন ফলন পেয়েছে। টমেটো আবাদে অল্প ব্যয়, লাভ বেশি। এই জন্য কৃষকদের মধ্যে টমেটো চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত