রিকশা-ইজিবাইকের চাপে শহরে যানজটের দুর্ভোগ

জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ৪৬
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ২২

জামালপুর জেলা শহরে যানজটের কারণে চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তায় অতিরিক্ত রিকশা ও ইজিবাইক চলায় পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হন। অনেক সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।

শহরের রাস্তায় ফুটপাত না থাকায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলেন, শহরে রিকশা ও ইজিবাইকের চাপ বেশি থাকায় প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। রাস্তা দিয়ে হাঁটার উপায় থাকে না। পথ চলতে চরম বেকায়দায় পড়তে হয় পথচারীকে।

তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে, জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষ নজরে আছে। কি করা যায় বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

জানা গেছে, জামালপুর শহরের গেইটপাড়, শফির মিয়ার বাজার মোড়, শহীদ হারুণ সড়ক, তামালতলা, মেডিকেল রোড, সকাল বাজার, কালিঘাট এলাকায় এই দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। শহরের প্রধান মার্কেট শহীদ হারুন সড়ক থেকে সকাল বাজার পর্যন্ত ভোর থেকেই ভাসমান দোকানিদের দখলে চলে যায়। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভাসমান দোকানদারের ভিড়ে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারে না।

শহরে আসা সাধারণ মানুষের যানবাহন থেকে নেমে রাস্তায় দাঁড়ানোর মতো জায়গা নেই। সবচেয়ে দুর্ভোগ রাস্তা পাড়াপারে। রাস্তার এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। শিশুদের নিয়ে এ সময় বেশি বিপাকে পড়েন নারীরা।

শহরে শীতের কাপড় নিতে এসে দুই শিশু নিয়ে রাস্তা পাড় হতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকা শহরের কাচারীপাড়ার ইয়াছমিন বেগম বলেন, ২০ মিনিট ধরে দুই বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।

রাস্তার ওপারে যেতে পারছি না। এমনতেই দাঁড়ানোর জায়গা নেই। পেছনে ফলের দোকান সামনে যানবাহনের চাপ। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান বসিয়ে মানুষের চলাচলের রাস্তাও দখল করে রেখেছে।

শহরের নয়াপাড়ার সুলতান মাহমুদ স্ত্রী সন্তান নিয়ে কেনাকাটা করতে এসে যানজটে আটকে আছেন। সুলতান বলেন, কি বলব শহরে একাই আসার মতো পরিবেশ নাই। আর পরিবার নিয়ে আসলে তো মরণ। স্বাভাবিকভাবে চলাচল করার কোন উপায় আছে। এক রাস্তার শহর। তার মধ্যে ভাসমান দোনানপাট বসিয়ে দখল করে রাখে। কোনো সরকারই সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ দেখে না। মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, এক রাস্তার শহর এমনিতেই দীর্ঘ যানজটে শহরে আসা মানুষ নাকাল।

এর মধ্যে প্রধান শহরের মার্কেটগুলোর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভাসমান খুচরা ব্যবসায়ীরা দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। যাদের বিষয়টি দেখার কথা তারা দেখেন না। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে কেউ ভাবে না। শহরে আসা মানুষের প্রায়ই দেখি রাস্তার পাশে দাঁড়াবে এমন জায়গা নেই।

অনেকে ভিড় সামলিয়ে রাস্তা পাড় হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তিনি জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুকে শহরের ভাসমান দোকানপাট বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। অভিযোগ রয়েছে শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ভাসমান দোকান মালিকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে রাস্তা ওপর দোকান বসার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যা বেআইনি। জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, শহরের রাস্তায় ফুটপাত না থাকা এবং জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষ নজরে রেখেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে নানামুখী উন্নয়নকাজ হচ্ছে। এক রাস্তার শহর। এখানে সাধারণ মানুষের চাপ বেশি। আর অবৈধ ভাসমান দোকানপাট বসিয়ে শহরের পরিবেশ এবং জন দুর্ভোগকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত