সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
সোমবার রাত ১২টা। জয়খা গ্রামের বিস্তীর্ণ বিল ধরে সামনে এগোতেই কানে এল পাখির ডাক। শব্দের যত কাছাকাছি যাচ্ছি ততই বাড়ছে পাখির ডাক। কিন্তু শব্দস্থলে উপস্থিত হতেই চোখে পড়ল এক অভিনব দৃশ্য। মোবাইলের সঙ্গে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে পাখির ডাক বাজানো হচ্ছে। তার চারপাশে লম্বা সুতার তৈরি অসংখ্য ফাঁদ। পাখির ডাক বাজিয়ে পরিযায়ী পাখিদের আকর্ষণ করে এনে এ ফাঁদে ফেলে শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।
এভাবে বাগেরহাটের মোংলা ও রামপাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শীতকালে আসা পরিযায়ী পাখি শিকার চলছে। স্থানীয় বাজারে প্রকাশ্যে এসব পাখি বিক্রি না হলেও উপযুক্ত ক্রেতার ফরমাশ মতো বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশবাদী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও প্রশাসন বা বন বিভাগের এ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। পাখি শিকার আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ জানা সত্ত্বেও আইনি প্রয়োগ না থাকার কারণে চলতি বছরে শিকারিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শিকারে পরিণত হওয়া পাখির সংখ্যাও কয়েক গুন বেড়ে গেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান করে জানা যায়, মোংলার চাঁদপাই, জয়খাঁ, বৈদ্যমারী, সাহেবেরমেঠ, আন্ধারিয়া, চৌরীডাঙ্গা, মালগাজীসহ বিভিন্ন এলাকায় মোবাইলের সঙ্গে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে পাখির ডাক বাজিয়ে ফাঁদ পেতে শিকারিরা পাখি শিকার করে ক্রেতাদের বাড়ি গোপনে পৌঁছে দিচ্ছে। কেউ আবার বাজারে আনলেও গোপনীয়তার সঙ্গে পাখিগুলো বিক্রি করছেন।
একইভাবে রামপালের পেড়িখালী, চন্দ্রাখালি, গৌরম্ভা, উলুবুনিয়া, ভোজপতিয়া গ্রামেও পাখি শিকার চলছে। মোবাইলের ব্যবহার ছাড়াও কিছু শিকারি এ দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গুলি করে পাখি শিকার করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ফাঁদ ও বিষটোপ, ফাঁস জালসহ নানা পন্থায় পেশাদার শিকারিরা এসব পাখি শিকার করছেন। স্থানীয় ক্রেতাদের মধ্যে যথেষ্ট চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি দেশি পাখি ২০০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা এবং অতিথি পাখি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পেশাদার পাখি শিকারি জানান, চিংড়িঘেরের মধ্যে মাটির ঢিবি তৈরি করা হয়। সেখানে জাঁতিকল পেতে রাখার পাশাপাশি আগেই শিকার হওয়া দু-একটি পাখি বেঁধে রাখা হয়। বেঁধে রাখা পাখির পাশে বাইরে থেকে পাখি এসে বসলেই জাঁতিকলে আটকা পড়ে।
এ ছাড়াও এক ধরনের কীটনাশক মাছের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে ঘেরের বাঁধের ওপর রাখা হয়। বকসহ পাখিরা সেই মাছ খেয়ে লুটিয়ে পড়ে। এ ছাড়া অনেক শৌখিন শিকারি রাতের বেলা এয়ারগান ব্যবহারের পাশাপাশি লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাখি শিকার করেন।
দেশি প্রজাতির পাখির মধ্যে সাদা দাঁড় বক, খড়ি বক, কুঁচি বক, পানকৌড়ি ও বালিহাঁস এবং শীত প্রধান দেশের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পেশাদার শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ মহলকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবেও শিকার করা পাখি সরবরাহ করা হয় বলে এসব শিকারিরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক মো. নুর আলম বলেন, এসব শৌখিন ও পেশাদার শিকারিদের কারণে গত কয়েক বছর অতিথি পাখির আগমন আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। পাখি শিকারের বিষয়ে আইন রয়েছে জেনেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমছে না। আবার অনেক সচেতন মানুষ গোপনে ফরমাশ দিয়ে এই সব পাখি খাওয়ার কিনছে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করাও জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, বিষয়টি তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। খুব শিগগিরই পাখি শিকার বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি দেশীয় ও অতিথি পাখি শিকার বন্ধে সব ইউপি চেয়ারম্যানদেরও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। এটি বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ভূমিকা রাখা উচিত।
সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনা) নির্মল কুমার পাল বলেন, অতিথি ও দেশি পাখি শিকার আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডনীয় অপরাধ। বাগেরহাটের বেশ কিছু এলাকায় পরিযায়ী ও দেশি পাখি শিকার হয়। এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে কয়েকবার অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছে।
এ ছাড়া স্থানীয়দের মধ্যে পাখি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও পাখি শিকারের আইনগত বিষয়েও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। মোংলা, রামপাল, চিতলমারী ও মোল্লাহাটসহ যেসব জায়গা থেকে পাখি শিকার করা হয়, সেসব এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাখি শিকার কমে আসবে বলে আশা করেন তিনি।
সোমবার রাত ১২টা। জয়খা গ্রামের বিস্তীর্ণ বিল ধরে সামনে এগোতেই কানে এল পাখির ডাক। শব্দের যত কাছাকাছি যাচ্ছি ততই বাড়ছে পাখির ডাক। কিন্তু শব্দস্থলে উপস্থিত হতেই চোখে পড়ল এক অভিনব দৃশ্য। মোবাইলের সঙ্গে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে পাখির ডাক বাজানো হচ্ছে। তার চারপাশে লম্বা সুতার তৈরি অসংখ্য ফাঁদ। পাখির ডাক বাজিয়ে পরিযায়ী পাখিদের আকর্ষণ করে এনে এ ফাঁদে ফেলে শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।
এভাবে বাগেরহাটের মোংলা ও রামপাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে শীতকালে আসা পরিযায়ী পাখি শিকার চলছে। স্থানীয় বাজারে প্রকাশ্যে এসব পাখি বিক্রি না হলেও উপযুক্ত ক্রেতার ফরমাশ মতো বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশবাদী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও প্রশাসন বা বন বিভাগের এ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। পাখি শিকার আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ জানা সত্ত্বেও আইনি প্রয়োগ না থাকার কারণে চলতি বছরে শিকারিদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শিকারে পরিণত হওয়া পাখির সংখ্যাও কয়েক গুন বেড়ে গেছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান করে জানা যায়, মোংলার চাঁদপাই, জয়খাঁ, বৈদ্যমারী, সাহেবেরমেঠ, আন্ধারিয়া, চৌরীডাঙ্গা, মালগাজীসহ বিভিন্ন এলাকায় মোবাইলের সঙ্গে সাউন্ডবক্স লাগিয়ে পাখির ডাক বাজিয়ে ফাঁদ পেতে শিকারিরা পাখি শিকার করে ক্রেতাদের বাড়ি গোপনে পৌঁছে দিচ্ছে। কেউ আবার বাজারে আনলেও গোপনীয়তার সঙ্গে পাখিগুলো বিক্রি করছেন।
একইভাবে রামপালের পেড়িখালী, চন্দ্রাখালি, গৌরম্ভা, উলুবুনিয়া, ভোজপতিয়া গ্রামেও পাখি শিকার চলছে। মোবাইলের ব্যবহার ছাড়াও কিছু শিকারি এ দুই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গুলি করে পাখি শিকার করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রকম ফাঁদ ও বিষটোপ, ফাঁস জালসহ নানা পন্থায় পেশাদার শিকারিরা এসব পাখি শিকার করছেন। স্থানীয় ক্রেতাদের মধ্যে যথেষ্ট চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি দেশি পাখি ২০০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা এবং অতিথি পাখি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পেশাদার পাখি শিকারি জানান, চিংড়িঘেরের মধ্যে মাটির ঢিবি তৈরি করা হয়। সেখানে জাঁতিকল পেতে রাখার পাশাপাশি আগেই শিকার হওয়া দু-একটি পাখি বেঁধে রাখা হয়। বেঁধে রাখা পাখির পাশে বাইরে থেকে পাখি এসে বসলেই জাঁতিকলে আটকা পড়ে।
এ ছাড়াও এক ধরনের কীটনাশক মাছের মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে ঘেরের বাঁধের ওপর রাখা হয়। বকসহ পাখিরা সেই মাছ খেয়ে লুটিয়ে পড়ে। এ ছাড়া অনেক শৌখিন শিকারি রাতের বেলা এয়ারগান ব্যবহারের পাশাপাশি লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাখি শিকার করেন।
দেশি প্রজাতির পাখির মধ্যে সাদা দাঁড় বক, খড়ি বক, কুঁচি বক, পানকৌড়ি ও বালিহাঁস এবং শীত প্রধান দেশের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি পেশাদার শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ মহলকে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবেও শিকার করা পাখি সরবরাহ করা হয় বলে এসব শিকারিরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক মো. নুর আলম বলেন, এসব শৌখিন ও পেশাদার শিকারিদের কারণে গত কয়েক বছর অতিথি পাখির আগমন আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। পাখি শিকারের বিষয়ে আইন রয়েছে জেনেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমছে না। আবার অনেক সচেতন মানুষ গোপনে ফরমাশ দিয়ে এই সব পাখি খাওয়ার কিনছে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করাও জরুরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, বিষয়টি তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। খুব শিগগিরই পাখি শিকার বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি দেশীয় ও অতিথি পাখি শিকার বন্ধে সব ইউপি চেয়ারম্যানদেরও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য চিঠি পাঠানো হবে। এটি বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ভূমিকা রাখা উচিত।
সুন্দরবনের বিভাগীয় কর্মকর্তা (বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনা) নির্মল কুমার পাল বলেন, অতিথি ও দেশি পাখি শিকার আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডনীয় অপরাধ। বাগেরহাটের বেশ কিছু এলাকায় পরিযায়ী ও দেশি পাখি শিকার হয়। এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে কয়েকবার অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছে।
এ ছাড়া স্থানীয়দের মধ্যে পাখি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও পাখি শিকারের আইনগত বিষয়েও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। মোংলা, রামপাল, চিতলমারী ও মোল্লাহাটসহ যেসব জায়গা থেকে পাখি শিকার করা হয়, সেসব এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাখি শিকার কমে আসবে বলে আশা করেন তিনি।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে