রহমান মৃধা
ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের স্কুলে নবম শ্রেণি অবধি শিক্ষার্থীদের সবকিছুই ফ্রি। দশম শ্রেণি থেকে তাদের মাসিক ভাতা দেওয়া হয়, যার এক-তৃতীয়াংশ অনুদান; বাকিটা ধার হিসেবে। প্রতি টার্মে শিক্ষার্থীদের তাদের সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হয়।
যদি কোনো শিক্ষার্থী তার শিক্ষার ফলাফল আশানুরূপ পর্যায়ে উপনীত হতে ব্যর্থ হয়, তখন এর কারণ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। এই কারণ দর্শানো যদি কর্তৃপক্ষের মনঃপূত না হয়, তখন তাদের মাসিক ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো তারা যেন লেখাপড়ায় অধিক মনোযোগী হয়।
লেখাপড়া শেষে যখন কাজ শুরু করে, প্রথমেই তারা সরকার থেকে যে ধার নিয়েছিল, তা মাসে মাসে ফেরত দিতে শুরু করে। এই ধার শোধ দেওয়ার সময়সীমা কর্মজীবনের ব্যাপ্তি, অর্থাৎ ৬৫ বছর অবধি। ৬৫ বছর কাজের পর তাঁরা অবসরজীবনে চলে যায় এবং সিনিয়র নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণের মতো সুযোগ-সুবিধা যদি বাংলাদেশে চালু করা যায়, তবে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণের শুরুতেই খুঁজে পাবে এর গুরুত্ব। যেসব শিক্ষার্থী ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে, তাঁদের পেছনে সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করছে। দেখা যাচ্ছে, অনেকেই পরে দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছর যে পরিমাণ অর্থ সরকার বিনিয়োগ করছে, সেটা ধার হিসেবে দিলে পরে সেই অর্থ নতুন শিক্ষার্থীর পেছনে বিনিয়োগ করা সরকারের জন্য সহজ হবে এবং দেশে সীমিত ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার থেকে বেশি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করারও সুযোগ বাড়বে।
এ বছর যে পরিমাণ শিক্ষার্থী জিপিএ- ৫ পেয়েছে, মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও তারা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেনি সীমাবদ্ধতার কারণে। হয়তো কথা উড়বে—দেশভরা ভূরি ভূরি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হলে পরে চাকরি পাবে না; তখন বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকবে।না, থাকবে না। যদি আমাদের কূটনীতিকেরা তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, তবে বিশ্বের অনেক দেশেই এসব ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারের চাকরির সুন্দর ব্যবস্থা করা সম্ভব। কূটনীতিক ও দূতাবাসের কাজকর্মের ওপর বা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং তাঁদের দায়িত্বে থাকা দূতাবাসগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাজেট, সেই অনুযায়ী রিটার্ন কি তাঁরা দেশকে এবং দেশের মানুষকে দিচ্ছেন?
শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ধরন তৈরি করে নাগরিকের হাতে দেশের দায়ভার তুলে দেওয়া হতে পারে সাফল্যের এক চমৎকার পরিকল্পনা। শিক্ষার্থীদের সাফল্য মানেই দেশের সাফল্য। একটি সচেতন জাতির নৈতিক মূল্যবোধের উন্নতি এভাবেই হয়ে থাকে।
ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের সরকার ধার দেয়, যার ফলে তারা মা-বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকে না। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটে।
পাশ্চাত্যের শিক্ষা মডেলকে বিবেচনা করে বাংলাদেশের প্রশিক্ষণের কিছুটা রদবদল করতে পারলে দেশের শিক্ষার মান বাড়বে বৈ কমবে না। সে ক্ষেত্রে যেমন যারা অষ্টম শ্রেণি শেষ করেছে, পড়ার প্রতি আগ্রহ কম বা কাজ করতে চায়, তাদের সেভাবে সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন কাজের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
সব শিক্ষার্থীকে ‘স্টাডি লোন’ দেওয়া এবং জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করা হোক সরকারের নতুন উদ্যোগ। শুধু বর্তমানে কেমন চলছে, তা দেখলে হবে না। আগামী ১০ বছর পর কেমন চলবে, সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আজকের দিনটা আগামীকাল হয়ে যাবে গতকাল—এ কথা মনে রেখে দেশের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ পরিকাঠামোর ওপর কাজ করা দরকার। সৃজনশীল শিক্ষা পেতে এবং প্রশিক্ষণের মান উন্নত করতে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করা আশু প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের স্কুলে নবম শ্রেণি অবধি শিক্ষার্থীদের সবকিছুই ফ্রি। দশম শ্রেণি থেকে তাদের মাসিক ভাতা দেওয়া হয়, যার এক-তৃতীয়াংশ অনুদান; বাকিটা ধার হিসেবে। প্রতি টার্মে শিক্ষার্থীদের তাদের সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হয়।
যদি কোনো শিক্ষার্থী তার শিক্ষার ফলাফল আশানুরূপ পর্যায়ে উপনীত হতে ব্যর্থ হয়, তখন এর কারণ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। এই কারণ দর্শানো যদি কর্তৃপক্ষের মনঃপূত না হয়, তখন তাদের মাসিক ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো তারা যেন লেখাপড়ায় অধিক মনোযোগী হয়।
লেখাপড়া শেষে যখন কাজ শুরু করে, প্রথমেই তারা সরকার থেকে যে ধার নিয়েছিল, তা মাসে মাসে ফেরত দিতে শুরু করে। এই ধার শোধ দেওয়ার সময়সীমা কর্মজীবনের ব্যাপ্তি, অর্থাৎ ৬৫ বছর অবধি। ৬৫ বছর কাজের পর তাঁরা অবসরজীবনে চলে যায় এবং সিনিয়র নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণের মতো সুযোগ-সুবিধা যদি বাংলাদেশে চালু করা যায়, তবে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণের শুরুতেই খুঁজে পাবে এর গুরুত্ব। যেসব শিক্ষার্থী ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে, তাঁদের পেছনে সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করছে। দেখা যাচ্ছে, অনেকেই পরে দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। দীর্ঘ পাঁচ-ছয় বছর যে পরিমাণ অর্থ সরকার বিনিয়োগ করছে, সেটা ধার হিসেবে দিলে পরে সেই অর্থ নতুন শিক্ষার্থীর পেছনে বিনিয়োগ করা সরকারের জন্য সহজ হবে এবং দেশে সীমিত ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার থেকে বেশি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করারও সুযোগ বাড়বে।
এ বছর যে পরিমাণ শিক্ষার্থী জিপিএ- ৫ পেয়েছে, মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও তারা ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেনি সীমাবদ্ধতার কারণে। হয়তো কথা উড়বে—দেশভরা ভূরি ভূরি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হলে পরে চাকরি পাবে না; তখন বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকবে।না, থাকবে না। যদি আমাদের কূটনীতিকেরা তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, তবে বিশ্বের অনেক দেশেই এসব ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারের চাকরির সুন্দর ব্যবস্থা করা সম্ভব। কূটনীতিক ও দূতাবাসের কাজকর্মের ওপর বা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং তাঁদের দায়িত্বে থাকা দূতাবাসগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাজেট, সেই অনুযায়ী রিটার্ন কি তাঁরা দেশকে এবং দেশের মানুষকে দিচ্ছেন?
শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ধরন তৈরি করে নাগরিকের হাতে দেশের দায়ভার তুলে দেওয়া হতে পারে সাফল্যের এক চমৎকার পরিকল্পনা। শিক্ষার্থীদের সাফল্য মানেই দেশের সাফল্য। একটি সচেতন জাতির নৈতিক মূল্যবোধের উন্নতি এভাবেই হয়ে থাকে।
ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের সরকার ধার দেয়, যার ফলে তারা মা-বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকে না। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটে।
পাশ্চাত্যের শিক্ষা মডেলকে বিবেচনা করে বাংলাদেশের প্রশিক্ষণের কিছুটা রদবদল করতে পারলে দেশের শিক্ষার মান বাড়বে বৈ কমবে না। সে ক্ষেত্রে যেমন যারা অষ্টম শ্রেণি শেষ করেছে, পড়ার প্রতি আগ্রহ কম বা কাজ করতে চায়, তাদের সেভাবে সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন কাজের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
সব শিক্ষার্থীকে ‘স্টাডি লোন’ দেওয়া এবং জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করা হোক সরকারের নতুন উদ্যোগ। শুধু বর্তমানে কেমন চলছে, তা দেখলে হবে না। আগামী ১০ বছর পর কেমন চলবে, সে বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আজকের দিনটা আগামীকাল হয়ে যাবে গতকাল—এ কথা মনে রেখে দেশের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ পরিকাঠামোর ওপর কাজ করা দরকার। সৃজনশীল শিক্ষা পেতে এবং প্রশিক্ষণের মান উন্নত করতে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করা আশু প্রয়োজন।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে