‘তুফান’-এর অর্থায়ন ও নির্মাণপ্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১২: ৫৬
Thumbnail image

ঈদুল আজহায় মুক্তি পাবে শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রায়হান রাফী, প্রযোজনা করেছে আলফা আই স্টুডিওজ লিমিটেড। সঙ্গে আছে চরকি ও ভারতের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ। তুফান বাংলাদেশের সিনেমা হলেও শুটিং হয়েছে ভারতে। দেশের অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ভারতীয় শিল্পীরাও। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা হচ্ছিল আগে থেকেই। এবার তুফানের অর্থায়ন ও নির্মাণপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রযোজকেরা। 

সিনেপ্লেক্সে দেশের সিনেমা, হলের মানোন্নয়ন, ঈদের সিনেমাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গত মঙ্গলবার বিএফডিসিতে কথা বলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৯ সংগঠনের নেতারা। সেখানেই তুফান সিনেমার নির্মাণপ্রক্রিয়া ও অর্থায়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রযোজকেরা। প্রযোজক আরশাদ আদনান বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি তুফানের বাজেট ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা। এখন যদি প্রশ্ন করা হয় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা সেখানে কীভাবে নেওয়া হয়েছে? তারা কি এনবিআরের ছাড়পত্র নিয়েছেন? একজন প্রযোজক হিসেবেও আমি তাহলে জানতে পারব কীভাবে টাকা নেওয়া সম্ভব।’

আরশাদ আদনান আরও বলেন, ‘৬০ লাখ বা ৮০ লাখ টাকা এনবিআরকে দেখিয়ে ওখানে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার সিনেমা বানাল। বিদেশে কাজ করার একটি নিয়মনীতি তো আছে। দেখানো হয়েছে শাকিব খান ও চঞ্চল চৌধুরীর পেমেন্ট বাংলাদেশে পরিশোধ হয়েছে। তিন শিফট কাজ করে কি ৬০ লাখ টাকা দিয়ে পুরো সিনেমাটা বানানো আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নগুলো করার সময় এসেছে। হিমাংশু ধানুকা বাংলাদেশে যেভাবে ঢুকেছিল, একই মোড়কে এসভিএফ ঢুকছে। তারা বাংলাদেশে কাজ করবে কিন্তু কাজ এখানে হবে না। পুরো কাজ কলকাতা ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হবে। আমাদের দেশের কলাকুশলীরা বেকার বসে থাকবেন।’

১৯ সংগঠনের আহ্বায়ক প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘আমাদের দেশের সিনেমার কথা বলে শুটিংসহ যাবতীয় কাজ হচ্ছে সেখানে (ভারতে)। শুধু আমাদের দু-একজন শিল্পী কাজ করছে। একটি ফুল প্যাকেজ সেখানে বানিয়ে আমাদের দেশে মুক্তি দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি বিলীন হয়ে যাবে। এই বিষয়ে আমাদের দুর্বার আন্দোলন করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তুফান সিনেমার প্রযোজক আলফা আইয়ের কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘প্রথমেই সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই তুফান যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নয়। তুফান বাংলাদেশের সিনেমা। যার প্রযোজক আলফা আই স্টুডিওজ লিমিটেড। এর ডিজিটাল পার্টনার চরকি আর ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন পার্টনার এসভিএফ। বাংলাদেশে যত নিয়মকানুন তা মেনেই নির্মিত হয়েছে তুফান। তথ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, সেন্সর বোর্ডের সব নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়েছে বলেই আমরা সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছি।’ 

প্রযোজকদের এই অভিযোগের প্রসঙ্গে শাকিল বলেন, ‘এর আগেও এই সিনেমা নিয়ে নানাভাবে কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেগুলো আমলে নিইনি। এখন যে প্রশ্নগুলো উঠছে এটা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারও মনে যদি প্রশ্ন থাকে, তাহলে তথ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর থেকে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারে। আমার মনে হয়, তাঁদের কাছে ইনফরমেশনের ঘাটতি আছে। আমাদের কাছে তারা জানতে চাইতে পারত। কিন্তু এভাবে সিনেমা আটকানোর চেষ্টা কিংবা না জেনে এমন বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।’

শাকিল আরও বলেন, ‘সবাই মিলেমিশে ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করতে হবে। এই কালচারটা খুব জরুরি। এখানে পেছনে লাগার কিছু নাই। ক্ষমতার অপব্যবহার যদি কেউ করতে চায়, তাহলে এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না।’

নব্বইয়ের দশকের ঢাকার এক গ্যাংস্টারকে নিয়ে তৈরি হয়েছে তুফানের চিত্রনাট্য। শাকিব খানের সঙ্গে আছেন ঢাকার নাবিলা ও কলকাতার মিমি চক্রবর্তী। বিশেষ একটি চরিত্রে দেখা যাবে চঞ্চল চৌধুরীকে।

শাহরিয়ার শাকিল। ছবি: সংগৃহীতযে প্রশ্নগুলো উঠছে এটা একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারও মনে যদি প্রশ্ন থাকে, তাহলে তথ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর থেকে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারে। আমার মনে হয়, তাঁদের কাছে ইনফরমেশনের ঘাটতি আছে। আমাদের কাছে তারা জানতে চাইতে পারত। কিন্তু এভাবে সিনেমা আটকানোর চেষ্টা কিংবা না জেনে এমন বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
—শাহরিয়ার শাকিল, প্রযোজক

আরশাদ আদনান৬০ লাখ না ৮০ লাখ টাকা এনবিআরকে দেখিয়ে ওখানে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার সিনেমা বানাল। বিদেশে কাজ করার একটি নিয়মনীতি তো আছে। ... তিন শিফট কাজ করে কি ৬০ লাখ টাকা দিয়ে পুরো সিনেমাটা বানানো আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নগুলো করার সময় এসেছে। হিমাংশু ধানুকা বাংলাদেশে যেভাবে ঢুকেছিল, একই মোড়কে এসভিএফ ঢুকছে।
—আরশাদ আদনান, প্রযোজক

বিনোদন সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত