জয় পেলেও অস্বস্তি আ.লীগে

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২২, ০৬: ৩৬

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের আরফানুল হক রিফাত। তাঁর বিপরীতে চার প্রার্থী পেয়েছেন ৬২ শতাংশ ভোট। ২০১৭ সালের নির্বাচনে ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়েও পরাজিত হয়েছিল নৌকা প্রতীক। এবার নতুন ভোটার বাড়লেও নৌকায় ভোট পড়েছে কম। বিষয়টি অস্বস্তিতে ফেলেছে দলটিকে। এদিকে প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ না পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে দুই মেয়র পদপ্রার্থীসহ ৫২ প্রার্থীর।

তথ্যমতে, মাত্র ৩৪৩ ভোটে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট, আর রিফাত পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নিজাম উদ্দিন পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।

হিসাব মতে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দুই নেতা ২৮ হাজার ৭৫৬ ভোট বেশি পেয়েছেন। অর্থাৎ বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নিজামের প্রাপ্ত ভোটের প্রায় সমান।

এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০ ভোট এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান বাবুল পেয়েছেন ২ হাজার ৩২৯ ভোট। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের বিপরীতে ৮৪ হাজার ৪৩৮ ভোট, যা মোট প্রদত্ত বৈধ ভোটের ৬২ শতাংশ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলে জয় নিয়ে বেগ পেতে হতো রিফাতকে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে মনে করলেও ভোটের পর এ সমীকরণ দলটিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে দলটিকে ভোটের হিসাব মেলাতে নড়েচড়ে বসতে হবে।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক আহসানুল কবির আওয়ামী লীগের এ অবস্থানের কারণ হিসেবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দলটির প্রতি ভোটারদের ‘অ্যান্টি ইস্টাবলিশম্যান্ট’ মনোভাবকে দায়ী করেন। এ ছাড়া তিনি বলেন, দলীয় বিভক্তি দূরীকরণ এবং দলে নতুন নতুন শক্তির পাশাপাশি পুরোনো ত্যাগী নেতাদের উজ্জীবিত করার প্রয়োজন রয়েছে।

এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে দুজনসহ জামানত হারাচ্ছেন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রায় অর্ধেক প্রার্থী। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডে ১০৮ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারাচ্ছেন ৫০ কাউন্সিলর প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া মেয়র পদে জামানত ফেরত পাবেন না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল।

সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, মেয়র ও কাউন্সিলর পদে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের গেজেট প্রকাশের জন্য বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফল নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্নিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে। গেজেট প্রকাশের পর তাঁদের শপথ করানো হবে।

গত ১৫ জুন কুমিল্লা নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে ৬৪০টি বুথে ইভিএমে ভোট হয়েছে। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। তাঁদের মধ্যে নারী ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন দুজন। পাঁচ মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ধর্ম অবমাননা: একই স্ট্যাটাসের জন্য দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত হৃদয়

আমিরাতে অবৈধদের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ আর মাত্র দুদিন

৫ আগস্ট সশস্ত্র সংগ্রামের ভিডিও বার্তা দিয়ে রেখেছিলাম: উপদেষ্টা নাহিদ

ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সামরিক বাজেট তিনগুণ

রাজধানীতে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ করায় লেগুনা চালককে ছুরিকাঘাতে হত্যা

আরও
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত