২৫ বছর ধরে অপেক্ষায় শতবর্ষী হামিদা বেগম!

আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট)
Thumbnail image

ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে জন্ম নেওয়া হামিদা বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী এখন বয়স ৯৪ বছর। প্রায় শতবর্ষ ছুঁয়ে যাওয়া বিধবা দরিদ্র এই বৃদ্ধার বসবাসের জন্য নিজস্ব কোনো জমি নেই। অনেক চেষ্টা করেও সরকারের ঘোষিত বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড পাননি।

নীতিমালা অনুযায়ী, দরিদ্র নারীরা ৬২ বছর বয়স হলে বয়স্ক ভাতার জন্য বিবেচিত হন। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর থেকে দেশে বয়স্ক ভাতা চালু করেছে সরকার। সে হিসাবে প্রায় ২৫ বছর হলো তিনি বয়স্ক ভাতার জন্য অপেক্ষা করছেন। এত দিনেও কেন তিনি এ ভাতার জন্য বিবেচিত হননি? প্রশ্ন হামিদা বেগমের।

গত সপ্তাহে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগেরহাটের ফকিরহাট ইউনিয়নের পাগলা উত্তরপাড়া গ্রামে সরকারি খাসজমির ডিসিয়ার প্রতিবছর নবায়ন করে দিনমজুর সন্তানদের নিয়ে হামিদা বেগম কোনোমতে জীবন যাপন করছেন। স্বামী মোসলেম শেখ দুই যুগ আগে মারা গেছেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের দাঙ্গায় কলকাতা শহরে কোটি টাকার মসলার ব্যবসা ফেলে নিঃস্ব হামিদা বেগমের পরিবার কোনোমতে প্রাণ নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের ফকিরহাটে ৫ শতক খাসজমিতে সংসার পাতেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেলেও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে রিফিউজি শব্দটি স্থায়ীভাবে জড়িয়ে যায়।

পেশায় দিনমজুর হামিদা বেগমের ৭৫ বছর বয়স্ক ছেলে ইউসুফ আলী জানান, স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে বারবার ধরনা দিলেও কোনো কাজ হয়নি। 
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, হামিদা বেগম অতিশয় বৃদ্ধা ও দরিদ্র নারী। কিন্তু তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন কোনো তালিকা না হওয়ায় হামিদাকে বয়স্ক অথবা বিধবা ভাতার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সবুর আলি বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছর থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পে নতুন তালিকা বন্ধ আছে। এটি চালু হলে নতুন চাহিদাপত্রে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত