ইসলামে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

মুফতি আবু দারদা
Thumbnail image

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যক্তি-অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। ব্যক্তির এই অধিকার ইসলাম সর্বতোভাবে স্বীকার করে। ভিন্ন কিছু চিন্তা করে তা মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। বরং নিজস্ব অনুভব-অনুভূতি ও মতামত প্রকাশে গুরুত্বারোপ করে ইসলাম। তবে তা যেন অন্যের প্রতি জুলুম হয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ইসলামি সভ্যতার শুরু থেকেই এই অধিকার চর্চিত হয়ে আসছে। স্বাধীনভাবে নিজের মতামত জানানো একজন মুসলমানের জন্য আবশ্যক। কারণ, মানুষের কল্যাণকামনা করা আল্লাহ তাআলা তার জন্য আবশ্যক করেছেন। সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাধীন মতপ্রকাশ যেহেতু এসব দায়িত্বপালনে আবশ্যক, তাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও একজন মুসলমানের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়ে।

কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন স্থানে কল্যাণকামিতার কথা আলোচিত হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ধর্ম কল্যাণকামিতার নাম।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কার কল্যাণকামনা হে আল্লাহর রাসুল (সা.)?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসুল (সা.), মুসলিম শাসক ও সাধারণ মানুষের।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৮)

স্বাধীন মতামতদানের ঘটনা সাহাবা ও তাঁদের পরবর্তী যুগে খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল। একবার খলিফা ওমর (রা.) মসজিদে দেনমোহরবিষয়ক আলোচনা করছিলেন, সেখানে এক নারী দাঁড়িয়ে তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। খলিফা তাঁকে বাধা দেননি। বরং নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘একজন নারী সঠিক কথা বলল আর ওমর ভুল করল।’ (তাফসিরে কুরতুবি: ৫/৫৯)

অবশ্য এই স্বাধীনতা কল্যাণের পথে প্রয়োগ করতে হবে। মতপ্রকাশের নামে কারও ক্ষতি করা ইসলাম অনুমোদন করে না। তাই মন্তব্যকারীকে সৎ ও দায়িত্বশীল হতে হবে। সমালোচনা হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ। যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে সে যা সত্য মনে করে, তা-ই নিঃসংকোচে প্রকাশ করবে, সেই সত্য যত তিক্তই হোক না কেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত