রমনার বটমূল

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২, ১১: ০৪
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২২, ১৭: ৩০

এখন তো রমনার বটমূলে ছায়ানটের পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কিন্তু রমনার এই বটমূলে সেই উৎসব শুরু হওয়ার একটা ইতিহাস আছে।

রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হয়েছিল সরকারি বাধা ডিঙিয়ে। সেটা ১৯৬১ সাল। এরপর ১৯৬৩ সালের পয়লা বৈশাখে ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের উদ্বোধন হয়েছিল পয়লা বৈশাখেই। বিদ্যায়তনের বর্ষপূর্তি আর বার্ষিক পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণের জন্য ১৯৬৪ সালে ইংলিশ প্রিপারেটরি স্কুলের কৃষ্ণচূড়াগাছের নিচে হয়েছিল অনুষ্ঠান।

সেখানে কৃতী ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষকেরা গেয়েছিলেন বর্ষাবরণের গান। ১৯৬৫ সালে ঈদুল আজহা ছিল সে দিনটিতে, তাই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়নি। সেটা আবার হলো ১৯৬৬ সালে।

কিন্তু এত ছোট জায়গায় কি বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়? একটু বড় জায়গা খুঁজে পাওয়া দরকার। আর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান থেকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকে আলাদা করা দরকার। কিন্তু বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের জন্য বড় জায়গা পাওয়া যাবে কোথায়?

সে সময় নওয়াজেশ আহমদ কেবল ফিরেছেন বিদেশ থেকে। ওয়াহিদুল হক বললেন, ‘এই তো, নওয়াজেশকে পাওয়া গেছে। আপনি তো ছবি তুলবার নেশায় অনেক ঘুরে বেড়ান। নববর্ষের অনুষ্ঠানের জন্য একটা খোলা জায়গার খোঁজ দিন তো!’নওয়াজেশ বললেন, ‘চলেন, আপনাদের নিয়ে রমনা রেস্তোরাঁর দিকে যাই।’

রেস্তোরাঁর উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে একটা বড় মাঠ। লম্বা ঘাসে ছাওয়া মাঠের ভেতর দিয়ে একটা বড় গাছের কাছে পৌঁছানো গেল। সেই গাছের গোড়ায় আবার বেদি বাঁধানো আছে! এই বেদিতে বসেই তো গান হতে পারে!

১৯৬৭ সাল থেকে এই জায়গাতেই শুরু হলো নববর্ষ অনুষ্ঠান। যদিও গাছটি বট নয়, অশ্বত্থ, তবু ‘অশ্বত্থতলায়’ বলতে মন সায় দিচ্ছিল না কারও, তাই বলা হলো বটমূল। ব্যাপারটাকে জায়েজ করে নেওয়া হলো এভাবে: পঞ্চবটের সমাহারে রয়েছে অশ্বত্থ, বট, বিল্ব, আমলকী ও অশোক। সে হিসেবে এটাকে বটমূল বলতে বাধা নেই!
নওয়াজেশ আহমদ খুঁজে দিয়েছিলেন এই বটমূল!

সূত্র: সন্জীদা খাতুন, আলোকের ঝর্ণাতলায়, পৃষ্ঠা ১৪

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত