রডের দাম লাগামহীন

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২২, ১২: ৪৫
Thumbnail image

লাগামহীনভাবে বাড়ছে রড ও স্টিলবারের দাম। ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে পটুয়াখালীর বাজারে এখন টনপ্রতি ৯৬ হাজার টাকা দরে রড বিক্রি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানভেদে প্রতি কেজিতে দু-তিন টাকা দামের ব্যবধান লক্ষ করা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই ব্যক্তিগত নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। আর ঠিকাদারেরা ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তবে রড ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থানীয় পর্যায়ে কিছুই করার নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো যে দাম নির্ধারণ করছে, সে দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে। তবে দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।

গতকাল শনিবার সকালে পটুয়াখালী শহরের স্বনির্ভর সড়ক, নতুন বাজার ও টিনপট্টিতে নির্মাণসামগ্রীর দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দাম বৃদ্ধির খবর পেয়ে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রডের দাম বৃদ্ধি ও আমদানি না থাকায় দেখা দিয়েছে সংকট।

জানা গেছে, দোকানে গত বছর বিএসআরএম প্রতিষ্ঠানের রড বিক্রি হয়েছে ৬৮-৭০ টাকা কেজি, কিন্তু এখন হচ্ছে ৯৬ টাকা। জিপিএইচর রড গত বছর বিক্রি হয় ৭৪ টাকা, এবার হচ্ছে ৯৫ টাকা। পিএইচপির রড গত বছর ছিল ৭২ টাকা, এবার ৯৪ টাকা। এ ছাড়া কেএসআরএম, সিএসআরএম, একেএস ও বিএসআই—এসব প্রতিষ্ঠানের রড কেজিপ্রতি ২২-২৫ ও টনপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা বেড়েছে।

এ বিষয়ে শহরের স্বনির্ভর সড়কের বিক্রেতা সাজিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক সেলিম খান বলেন, ‘ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে এবার সর্বোচ্চ দাম বেড়েছে রডের। এত দাম আগে কখনই ছিল না। আমরা বাধ্য হয়েই এখন বিক্রি করছি। তবে রডের দাম বেড়েছে শুনে ক্রেতারা বেশি পরিমাণ কিনতে চাইলেও আমরা দিতে পারি না, কারণ ইতিমধ্যে পণ্যটির সংকট দেখা দিয়েছে। কোম্পানিগুলো বলছে, রাশিয়া, ইউক্রেন থেকে কাঁচামাল আসে; সেখান থেকে সাপ্লাই বন্ধ হওয়ায় দাম বৃদ্ধি ও সংকট দেখা দিয়েছে।’

নতুন বাজারের মেসার্স সিরাজুল এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল হক বলেন, ‘ঘরে কোনো মাল নেই, রড সংকট। দাম বাড়ল, সংকটও দেখা দিল, ব্যবসায়ীরা পথে বসবে। সরকারের এই বিষয়টি এখনই আমলে নেওয়া উচিত’

পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহাবুব গাজী বলেন, ‘নতুন বাসার কাজ শুরু করেছি। এর মধ্যেই রড-সিমেন্টের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এখন কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

পটুয়াখালী শহরের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘রডের দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে আমাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আমরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছি। সরকারি কাজ না করেও উপায় নেই। সরকার রডের দাম না কমালে আমাদের জায়গা-জমি বিক্রি করে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।’

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন আরজু বলেন, ‘রডের দাম বাড়ায় সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। ঠিকাদারেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কাজ করতে চাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে অনেক কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে চলমান সরকারি কাজ করা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। এ ব্যাপারে সরকারের ভাবা দরকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত