শিশুদের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্রটি অবহেলায় নষ্ট

গফরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৪: ০৬
Thumbnail image

গফরগাঁও উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড়ের পুরোনো শিশুপার্কটি এক বছর আগে পুনর্নির্মাণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় থেকে ৫০ গজ দূরে অবস্থিত শিশুপার্কটিই ছিল এখানকার শিশুদের একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র। তবে পুনর্নির্মাণের পর বছর না যেতেই বেহাল শিশুপার্কটি।

জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘উপজেলা পরিষদ শিশু পার্ক’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। উপজেলা পরিষদ পুকুরপাড় ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সরকারি বাসভবনের মাঝখানে চারদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে, প্রবেশ তোরণসহ পার্কটি নির্মাণ করা হয়। পার্কটি নতুন আদলে নির্মাণের পর ভেতরে শিশুদের জন্য দোলনা, স্লিপার, পশু-পাখির ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য বনের রাজা সিংহ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, বিশালাকায় ইগল পাখির ভাস্কর্যসহ, বিশ্রামের জন্য এসএস দিয়ে বেঞ্চ ও সিমেন্টের বেশ কয়েকটি প্রমাণআকার ছাতা তৈরি করা হয়।

স্থানীয় সাংসদ ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল পার্কটির পুনর্নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর থেকেই এলাকার ও আশপাশের শিশুরা অভিভাবকদের সঙ্গে পার্কে এসে খেলা করত। প্রতিদিন শত শত শিশু-কিশোরের কলরবে মুখরিত থাকত পার্কটি। সেই সঙ্গে অভিভাবকেরা পাশের শানবাঁধানো পুকরঘাটে বসে গল্প করতেন। অনেকে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পুকুরের পাড়ে হাঁটতে বের হতেন।

উপজেলা প্রশাসন আনসার সদস্যদের দিয়ে কিছুদিন পার্কের নিরাপত্তার ব্যবস্থার দেখাশোনা করান। পরে আর দায়িত্বের বিষয়টি ধারাবাহিকভাবে পালন করা হয়নি। এই সুযোগে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা শিশুপার্কের ভেতরের দোলনা, স্লিপার খুলে নিয়ে যায়। ভেঙে ফেলে ভেতরের পশু পাখির ভাস্কর্য। এত করে অল্পদিনেই পার্কটি তার আবেদন হারিয়ে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।

উপজেলা পরিষদ এলাকার বাসিন্দা আলিম রেজা বলেন, বিকেলে বাচ্চাদের নিয়ে শিশুপার্কে ছেড়ে দিতাম। তারা আপন মনে খেলা করত। পার্কের পশুপাখি আর খেলনাগুলো তাদের আনন্দের খোরাক ছিল। এখন এগুলো না থাকায় শিশুরা আর ওখানে খেলতে যায় না।

গৃহিণী দেলোয়ারা পারভীন বলেন, শিশুরা পার্কে দল বেঁধে আনন্দ, হই হুল্লোড় করত। এতে তাঁদের মানসিক বিকাশ ঘটত। আগের মতো খেলার মাঠ না থাকায় শিশুদের বিনোদনের উৎস কমে যাচ্ছে।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ এত টাকা ব্যয়ের একটি সুন্দর প্রকল্প দেখাশোনার অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এর দায় কিছুতেই এড়াতে পারেন প্রশাসন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্প পরবর্তী দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের অভাবে পার্কটি নষ্ট হয়েছে। চোখের সামনে নিরাপত্তার অভাবে পার্কটি শেষ হলো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবিদুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ শিশুপার্ক প্রকল্পটি আমার এখানে যোগদানের আগের। জানতে পেরেছি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এবং জনবল সংকটে পার্কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। এটি পুনরায় সংস্কার এবং ইজারার মাধ্যমে পরিচালন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত