‘এমন ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ি আসতে চায় না’

জহিরুল আলম পিলু
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ১৭
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৩৯

রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্ত ও খানাখন্দে পানি জমে। শুষ্ক মৌসুমে হয় ধুলোবালি। এতে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে ডেমরা চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো অংশেই এ অবস্থা। সংস্কারকাজ চলমান থাকায় ভোগান্তি যেন আরও বেড়ে গেছে। তাই দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি যথাযথভাবে চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থেকে পুরোনো ডেমরা রাস্তাটি খুবই ব্যস্ততম। একসময় এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করত ছোট-বড় কয়েক শ গাড়ি। রাস্তা সরু হওয়ায় প্রায়ই যানজট লেগে থাকত। ফলে প্রতিদিনই সৃষ্টি হতো যানজট। রাস্তাটির গুরুত্ব বিবেচনা ও যানজট সমস্যা নিরসনে এটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প হাতে নেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। প্রকল্পের কাজ দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনকে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, যা ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য ৫.৪ কিলোমিটার। ৩৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি এখানে নির্মিত হবে দুটি ব্রিজ, একটি ফুটওভার ব্রিজ ও ১০ টি আন্ডারপাস।

রাস্তা সংস্কারের এমন বড় প্রকল্পকে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানালেও প্রকল্পের সময়সীমা কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই রুটের লেগুনাচালক শাহ আলম বলেন, ‘রাস্তাটির বেশির ভাগ জায়গায়ই ভাঙাচোরা। যে কারণে গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনা তো রোজই হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন লেগুনার মালিক জানান, ‘ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালানোর কারণে কিছুদিন পরপরই গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে যায়। আবার একটু বৃষ্টি হলেই গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। এখন শীত পড়ছে। রাস্তায় বালি আর বালি। আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।’

সরেজমিন দেখা যায়, এই রুটের মৃধাবাড়ি, কোনাপাড়া, দেইল্লাপাড়া ও স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার রাস্তার অনেক অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। বছরখানেক আগে স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার মার্কেটগুলোর সামনের রাস্তা কেটে ড্রেনেজব্যবস্থার কাজ করা হয়। বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ অনেক ব্যবসায়ীর। কিছুদিন আগের বৃষ্টিতেও দুর্ভোগ হয়েছে এখানে।

স্থানীয় দোকান মালিক হারুন বলেন, ‘এমন ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ি আসতে চায় না। দোকানের মালামাল আনতে খুবই কষ্ট হয়। এমনকি রাস্তা দেখে ক্রেতারাও ফিরে যান। লোকসান তো হচ্ছেই। আমরা চাই, দ্রুত কাজ শেষ হোক।’

এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এই প্রজেক্টের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প ব্যবস্থাপক (পিএম) সেলিম রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পটির ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার ওপর থাকা প্রায় তিন শ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরাতেই বেশ সময় লেগেছে। আশা করি, চুক্তির সময়ের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ করতে পারব।’

সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এমদাদুল হক বলেন, ‘করোনার কারণে মাঝখানে অনেক দিন কাজ বন্ধ ছিল। না-হয় আরও আগেই শেষ হতো।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত