জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
২১ ফেব্রুয়ারি সকালে আমতলার সভায় ছাত্রীরা নিজ দায়িত্বেই যোগ দিয়েছিলেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তাঁরা ভেঙেছিলেন ১৪৪ ধারা। আমতলার সভায় ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে কি না, তা নিয়ে অল্প কিছু সময় ধরে বিতর্ক চলে। ছাত্রীরা ছিলেন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার পক্ষে।
দোদুল্যমানতার সময় বিরক্ত হয়ে তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন কমনরুমে। সেখানে কিছু সময় থাকার পর ছাত্রদের অনুরোধে তাঁরা ফিরে আসেন আমতলায়। তখন ১০ জনের করে একেকটি মিছিল বেরোচ্ছিল। আমতলা থেকে বেরোনোর পরই পুলিশ ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিল।
সে সময় শাফিয়া খাতুন ছিলেন উইমেন স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সহসভাপতি।
ফলে আন্দোলন সংগঠিত করতে তাঁর ছিল বড় ভূমিকা। সুফিয়া আহমেদ, শামসুন্নাহার আহসান, রওশন আরা বাচ্চু, সারা তৈফুর, মাহফিল আরা, খোরশেদী খানম, নাদিরা বেগম, হালিমা খাতুন প্রমুখ একুশের দিনে ছিলেন সক্রিয়। শাফিয়া খাতুনের স্মৃতিচারণায় দেখা যায়, সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ৮৫। তখন নারীদের চলাচলের ব্যাপারেও ছিল অনেক বাধা-বিপত্তি।
২০ ফেব্রুয়ারির সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের বৈঠকে ছাত্রীদের দিক থেকে কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা হেঁটে বাংলাবাজার গার্লস স্কুল ও কামরুন্নেছা গার্লস স্কুলে গিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি আমতলার সভায় যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেদিন আমতলার সভায় যোগ দিয়েছিল স্কুলছাত্রীরাও।
ভাষা আন্দোলন শুধু ঢাকা মহানগরীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, নড়াইলের তিন নারী ভাষাসংগ্রামীর কথা আমরা জানি। সুফিয়া খাতুন, রিজিয়া খাতুন ও রুবি—এই নামগুলো শোনা যায়। কিন্তু ঢাকার বাইরের নারী ভাষাসংগ্রামীদের নিয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা করতে কেউ এগিয়ে আসেননি।
ভাষাসংগ্রামীরা হয়ে গেছেন ইতিহাসের অংশ। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের আলোচনায় বুড়ি ছোঁয়ার মতো নারীদের কথা একবার বলে অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তাঁদের ত্যাগ ও আন্দোলনের প্রতি একাগ্রতার স্বীকৃতি তাঁরা খুব একটা পাননি। মর্যাদাপূর্ণ একুশে পদকপ্রাপ্তির তালিকায়ও তাঁদের হাতে গোনা কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়।
ভাষা আন্দোলনে নারীদের অবস্থান পরিষ্কার হতে পারে রওশন আরা বাচ্চুর স্মৃতিচারণায়। তিনি বলছেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের যুক্ত করার উদ্দেশ্যে ছাত্রীনিবাসের ছাত্রীরা এলাকা নির্ধারণ করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কামরুন্নেসা, বাংলাবাজার, ইডেন কলেজ, মুসলিম গার্লস স্কুলের ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় নিয়ে আসত। ভাষার দাবি সফল করার জন্য ছাত্রীরাও নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মধ্যবিত্ত রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারের মেয়েরাই ছাত্রীনিবাসে থাকত।...তখনকার দিনে ছেলেদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা নিষিদ্ধ ছিল। কথা বলতে হতো প্রক্টরের মাধ্যমে। নইলে ১০ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা ছিল।
শিক্ষকেরা ক্লাসে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের কমনরুম থেকে ডেকে নিয়ে যেতেন। ছাত্রীরা মাথায় কাপড় দিয়ে, কেউ কেউ বোরকা পরে ক্লাস করত। মেয়েরা বসত ক্লাসের সামনের সারিতে।
‘কিন্তু সেই দিনগুলো ছাত্রীরা সামাজিক বাধা-বিপত্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের ভয় করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা তখন থাকতেন চামেরী হাউসে (বর্তমান রোকেয়া হলের পাশে)। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য আর কোনো আবাসস্থল ছিল না।
সে সময় কোনো আন্দোলনে যোগদানের ব্যাপারে সামাজিক প্রতিকূলতা ছিল। হলের বাইরে থাকা বেশির ভাগ ছাত্রীই ওই আন্দোলনে যোগ দেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন বিচারপতি ইব্রাহিমের মেয়ে সুফিয়া ইব্রাহিম (আহমদ)। হলের বাইরে থেকেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলনে।
নারী ভাষাসংগ্রামীদের বর্ণনায় দুটি নতুন বিষয় পাওয়া যায়। একটি হলো—কতজন করে বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে বেরিয়েছিলেন। আরেকটি হলো—কারা প্রথম বেরিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, নারীরাই প্রথম ১৪৪ ধারা ভাঙতে পেরেছিলেন।
নারী ভাষাসংগ্রামীদের কেউ বলেছেন চারজন করে, কেউ বলেছেন দুজন করে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। আবার বর্ণনা দেওয়ার সময় একসঙ্গে চারজন বা পাঁচজনের নামও বলেছেন। ফলে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।
দ্বিতীয় প্রশ্নটিও জটিল। সম্ভবত ছেলেদের মিছিলগুলো গেট থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের আটক করা হচ্ছিল, কর্ডন ভেঙে ছেলেদের মিছিল এগিয়ে যেতে পারেনি, প্রথম কর্ডন ভেঙে এগিয়েছিল মেয়েদের মিছিল, সে কথা বলতে গিয়েই কেউ কেউ বলেছেন, তারাই সর্বপ্রথম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন। ভাষা আন্দোলনের এত দিন পর হয়তোবা এই প্রশ্নের আর মীমাংসা হবে না।
২১ ফেব্রুয়ারি সকালে আমতলার সভায় ছাত্রীরা নিজ দায়িত্বেই যোগ দিয়েছিলেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তাঁরা ভেঙেছিলেন ১৪৪ ধারা। আমতলার সভায় ১৪৪ ধারা ভাঙা হবে কি না, তা নিয়ে অল্প কিছু সময় ধরে বিতর্ক চলে। ছাত্রীরা ছিলেন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার পক্ষে।
দোদুল্যমানতার সময় বিরক্ত হয়ে তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন কমনরুমে। সেখানে কিছু সময় থাকার পর ছাত্রদের অনুরোধে তাঁরা ফিরে আসেন আমতলায়। তখন ১০ জনের করে একেকটি মিছিল বেরোচ্ছিল। আমতলা থেকে বেরোনোর পরই পুলিশ ছাত্রদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিল।
সে সময় শাফিয়া খাতুন ছিলেন উইমেন স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সহসভাপতি।
ফলে আন্দোলন সংগঠিত করতে তাঁর ছিল বড় ভূমিকা। সুফিয়া আহমেদ, শামসুন্নাহার আহসান, রওশন আরা বাচ্চু, সারা তৈফুর, মাহফিল আরা, খোরশেদী খানম, নাদিরা বেগম, হালিমা খাতুন প্রমুখ একুশের দিনে ছিলেন সক্রিয়। শাফিয়া খাতুনের স্মৃতিচারণায় দেখা যায়, সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ৮৫। তখন নারীদের চলাচলের ব্যাপারেও ছিল অনেক বাধা-বিপত্তি।
২০ ফেব্রুয়ারির সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের বৈঠকে ছাত্রীদের দিক থেকে কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা হেঁটে বাংলাবাজার গার্লস স্কুল ও কামরুন্নেছা গার্লস স্কুলে গিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি আমতলার সভায় যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেদিন আমতলার সভায় যোগ দিয়েছিল স্কুলছাত্রীরাও।
ভাষা আন্দোলন শুধু ঢাকা মহানগরীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, নড়াইলের তিন নারী ভাষাসংগ্রামীর কথা আমরা জানি। সুফিয়া খাতুন, রিজিয়া খাতুন ও রুবি—এই নামগুলো শোনা যায়। কিন্তু ঢাকার বাইরের নারী ভাষাসংগ্রামীদের নিয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ গবেষণা করতে কেউ এগিয়ে আসেননি।
ভাষাসংগ্রামীরা হয়ে গেছেন ইতিহাসের অংশ। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের আলোচনায় বুড়ি ছোঁয়ার মতো নারীদের কথা একবার বলে অন্যদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তাঁদের ত্যাগ ও আন্দোলনের প্রতি একাগ্রতার স্বীকৃতি তাঁরা খুব একটা পাননি। মর্যাদাপূর্ণ একুশে পদকপ্রাপ্তির তালিকায়ও তাঁদের হাতে গোনা কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়।
ভাষা আন্দোলনে নারীদের অবস্থান পরিষ্কার হতে পারে রওশন আরা বাচ্চুর স্মৃতিচারণায়। তিনি বলছেন, ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের যুক্ত করার উদ্দেশ্যে ছাত্রীনিবাসের ছাত্রীরা এলাকা নির্ধারণ করে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে কামরুন্নেসা, বাংলাবাজার, ইডেন কলেজ, মুসলিম গার্লস স্কুলের ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় নিয়ে আসত। ভাষার দাবি সফল করার জন্য ছাত্রীরাও নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মধ্যবিত্ত রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারের মেয়েরাই ছাত্রীনিবাসে থাকত।...তখনকার দিনে ছেলেদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা নিষিদ্ধ ছিল। কথা বলতে হতো প্রক্টরের মাধ্যমে। নইলে ১০ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা ছিল।
শিক্ষকেরা ক্লাসে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের কমনরুম থেকে ডেকে নিয়ে যেতেন। ছাত্রীরা মাথায় কাপড় দিয়ে, কেউ কেউ বোরকা পরে ক্লাস করত। মেয়েরা বসত ক্লাসের সামনের সারিতে।
‘কিন্তু সেই দিনগুলো ছাত্রীরা সামাজিক বাধা-বিপত্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের ভয় করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা তখন থাকতেন চামেরী হাউসে (বর্তমান রোকেয়া হলের পাশে)। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য আর কোনো আবাসস্থল ছিল না।
সে সময় কোনো আন্দোলনে যোগদানের ব্যাপারে সামাজিক প্রতিকূলতা ছিল। হলের বাইরে থাকা বেশির ভাগ ছাত্রীই ওই আন্দোলনে যোগ দেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন বিচারপতি ইব্রাহিমের মেয়ে সুফিয়া ইব্রাহিম (আহমদ)। হলের বাইরে থেকেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন আন্দোলনে।
নারী ভাষাসংগ্রামীদের বর্ণনায় দুটি নতুন বিষয় পাওয়া যায়। একটি হলো—কতজন করে বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে বেরিয়েছিলেন। আরেকটি হলো—কারা প্রথম বেরিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, নারীরাই প্রথম ১৪৪ ধারা ভাঙতে পেরেছিলেন।
নারী ভাষাসংগ্রামীদের কেউ বলেছেন চারজন করে, কেউ বলেছেন দুজন করে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। আবার বর্ণনা দেওয়ার সময় একসঙ্গে চারজন বা পাঁচজনের নামও বলেছেন। ফলে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।
দ্বিতীয় প্রশ্নটিও জটিল। সম্ভবত ছেলেদের মিছিলগুলো গেট থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের আটক করা হচ্ছিল, কর্ডন ভেঙে ছেলেদের মিছিল এগিয়ে যেতে পারেনি, প্রথম কর্ডন ভেঙে এগিয়েছিল মেয়েদের মিছিল, সে কথা বলতে গিয়েই কেউ কেউ বলেছেন, তারাই সর্বপ্রথম ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেন। ভাষা আন্দোলনের এত দিন পর হয়তোবা এই প্রশ্নের আর মীমাংসা হবে না।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২১ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে