শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও তথ্য সংরক্ষণে আরও সতর্ক হচ্ছে পুলিশ। তাদের আশঙ্কা, যোগাযোগের প্রচলিত ব্যবস্থায় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর, গোপন ও জরুরি তথ্য বাইরে চলে যাবে। সেই আশঙ্কা থেকে তারা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগকে সুরক্ষিত রাখবে সবক্ষেত্রে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করতে চায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুরুও হয়েছে। পাশাপাশি গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে ঊর্ধ্বতনদের জন্য ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির ওয়াকিটকি ব্যবহারের কথাও ভাবা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরে গত ডিসেম্বরের শেষে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া ‘বাংলাদেশ পুলিশের উদ্ভাবনী চিন্তায়’ নানা পরিকল্পনার মধ্যেও বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নিরাপত্তার জন্য ভিপিএন ব্যবহার করতে গিয়ে বড় ধরনের অনিরাপত্তা সৃষ্টি হতে পারে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এই বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদানসহ অভ্যন্তরীণ তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এটি পুলিশের অভ্যন্তরীণ কাজকে ত্বরান্বিত করবে।
ভিপিএন হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন কম্পিউটার ডিভাইস ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে নিরাপদ যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা যায়। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে এমন এক ধরনের ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, যাতে বার্তা আদান-প্রদানকারী ডিভাইসের আইপি অ্যাড্রেস (ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের নিজস্ব ঠিকানা) গোপন থাকে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিপিএনের কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভিপিএনেও ব্যবহারকারীর তথ্য পুরোপুরি লুকানো সম্ভব নয়। অর্থাৎ ভিপিএন ব্যবহার করে ব্যবহারকারী যদি ফেসবুক, টুইটার কিংবা ই-মেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করেন, তাহলে এসব সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ঠিকই ব্যবহারকারীর কার্যক্রম দেখতে পারবে। তা ছাড়া ভিপিএনও ব্যবহারকারীকে হ্যাকারের হাত থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারে না।
পুলিশের ত্রৈমাসিক সভা সূত্র বলেছে, পুলিশের অভ্যন্তরীণ তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারগুলোর তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ধরনের কম্পিউটার সব থানা, সার্কেল অফিস, এসপি অফিসসহ বিশেষায়িত ইউনিটগুলোয় রয়েছে। সেগুলো পরিবর্তন করার পাশাপাশি স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক বাদ দিয়ে ভিপিএন সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এসব কাজের দেখভালের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-আইসিটি) ও একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতনদের গোপন কথাবার্তা বলতে আলাদা ওয়াকিটকির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ ওয়াকিটকিও থাকবে, তবে এগুলো ব্যবহারে কিছু নিয়মকানুনের কথা জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র বলছে, গত বছরের শেষ দিকে পুলিশের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারের তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। স্পর্শকাতর তথ্যের এই ভান্ডারে আইডি ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিয়েছিল সাইবার অপরাধীরা (হ্যাকার)। হ্যাক করে নেওয়া তথ্য রেখে দেওয়া হয়েছিল চোরাই তথ্য বাজারের (ডার্ক ওয়েব) একাধিক সাইটে। সেখানে তথ্য সংযোজন-বিয়োজন ও বেচাকেনার সুযোগ থাকায় বিষয়টি গুরুতর হুমকি বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর। পরবর্তী সময়ে যেসব পুলিশ সদস্যের হাতে এই সফটওয়্যারে প্রবেশাধিকার ছিল, তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে বলা হয়েছিল।
ত্রৈমাসিক ওই বৈঠকে থাকা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডার্কওয়েবে আইডি পাসওয়ার্ড চলে যাওয়ার পরই স্পর্শকাতর তথ্য সংরক্ষণ ও জমা রাখার বিষয়ে কথা হয়েছিল। পরে ভিপিএন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ সদর দপ্তর। যাতে করে পুলিশের স্পর্শকাতর তথ্যে কেউ আড়ি পাততে না পারে। তিনি বলেন, যদি কোনো অপরাধী হ্যাক করে পুলিশের তথ্যের সাইটে প্রবেশ করে, তাহলে নানা ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। তাই পুরো সিস্টেমটিকে কেউ যেন চিহ্নিত করতে না পারে, সে নিশ্চয়তার জন্যই সর্বত্র ভিপিএন ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে।
অবশ্য পুলিশ সদর দপ্তরের আরেকটি সূত্র বলছে, দুই বছর ধরেই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তথ্যবিনিময়ের জন্য পুলিশের এক হাজার কার্যালয় ভিপিএন সংযোগ নিয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলেছে, পুলিশ এখন যে সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল ডেটাবেজ তৈরি করেছে, ভিপিএন সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সেটা নিয়েও কাজ করা হবে। এই ডেটাবেজকে ধীরে ধীরে বিগডেটা অ্যানালিটিকস এবং আর্টিফিশিয়াল অ্যানালিটিকসে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আইসিটি বিভাগ একটি বিগডেটা অ্যানালিটিকস টাস্কফোর্সও গঠন করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিপিএন তৃতীয় পক্ষের (থার্ড পার্টি) একটি সেবা। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর সব তথ্য ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। বিশ্বে গুটিকয়েক ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে মানসম্পন্ন সেবা দেয়। বাকি সবাই বিনা মূল্যে সেবা দিয়ে ব্যবহারকারীর তথ্য বিক্রি করে আয় করে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ভিপিএন ব্যবহারকারীকে হ্যাকারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। কারণ বেশির ভাগ হ্যাকার কম্পিউটার সিস্টেমে আক্রমণ করে ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করে, কিংবা ক্ষতিকর (ম্যালওয়্যার) সফটওয়্যার ছড়িয়ে দিয়ে। ফিশিং লিঙ্ক আসে ই-মেইল কিংবা অন্য কোনো বার্তা আদান-প্রদানের প্ল্যাটফরমে। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই সিস্টেম বেহাত হয়ে যায়। অন্যদিকে ভিপিএন ব্যবহার করেও কেউ যদি কোনো ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার লিঙ্কে ক্লিক করে, সে সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। এ ধরনের গোপনীয়তা ও কৌশল বাহিনীর প্রশিক্ষণের একটি অংশ।
ওয়াকিটকি ব্যবহারেও সতর্কতা
অন্যদিকে তথ্যভান্ডারের পাশাপাশি ওয়াকিটকি নিয়েও সতর্কতা অবলম্বন করছে পুলিশ সদর দপ্তর। সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় নির্বাচনের সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকার সময় নিজেদের মধ্যে কথোপকথন বাইরে চলে গিয়েছিল।
পুলিশ সদর দপ্তর মনে করে, বাহিনীর অপারেশন পরিকল্পনা বাইরে চলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ জটিল হয়ে পড়ে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলাদা ওয়াকিটকিতে যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত নিতে চান। পরবর্তী সময়ে তা সবার উদ্দেশে জানিয়ে দেওয়া হবে। তা ছাড়া ওয়াকিটকির একই সংযোগে সবাই যুক্ত থাকায় মাঠে কাজ করার সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। সদস্যরা নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে নির্দেশনা দিতে ও পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। বৈঠক সূত্রে বলছে, ওয়াকিটকিতে বাহিনীর ভেতরের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই এমন কড়াকড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তথ্যের নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সংস্থার ভিপিএন ব্যবহার কতটুকু যৌক্তিক, সেটা আলোচনার বিষয়। তা ছাড়া ভিপিএন নিয়ে সাময়িক সুবিধা পাওয়া গেলেও মূল তথ্যভান্ডার অন্যদের হাতে চলে যাবে। সেখানেও ওই অনিরাপত্তাই তৈরি হচ্ছে।
নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ ও তথ্য সংরক্ষণে আরও সতর্ক হচ্ছে পুলিশ। তাদের আশঙ্কা, যোগাযোগের প্রচলিত ব্যবস্থায় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর, গোপন ও জরুরি তথ্য বাইরে চলে যাবে। সেই আশঙ্কা থেকে তারা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগকে সুরক্ষিত রাখবে সবক্ষেত্রে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করতে চায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুরুও হয়েছে। পাশাপাশি গোপন ও গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে ঊর্ধ্বতনদের জন্য ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সির ওয়াকিটকি ব্যবহারের কথাও ভাবা হচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তরে গত ডিসেম্বরের শেষে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া ‘বাংলাদেশ পুলিশের উদ্ভাবনী চিন্তায়’ নানা পরিকল্পনার মধ্যেও বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নিরাপত্তার জন্য ভিপিএন ব্যবহার করতে গিয়ে বড় ধরনের অনিরাপত্তা সৃষ্টি হতে পারে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এই বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদানসহ অভ্যন্তরীণ তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এটি পুলিশের অভ্যন্তরীণ কাজকে ত্বরান্বিত করবে।
ভিপিএন হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বিভিন্ন কম্পিউটার ডিভাইস ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে নিরাপদ যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করা যায়। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে এমন এক ধরনের ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, যাতে বার্তা আদান-প্রদানকারী ডিভাইসের আইপি অ্যাড্রেস (ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের নিজস্ব ঠিকানা) গোপন থাকে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিপিএনের কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভিপিএনেও ব্যবহারকারীর তথ্য পুরোপুরি লুকানো সম্ভব নয়। অর্থাৎ ভিপিএন ব্যবহার করে ব্যবহারকারী যদি ফেসবুক, টুইটার কিংবা ই-মেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করেন, তাহলে এসব সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ঠিকই ব্যবহারকারীর কার্যক্রম দেখতে পারবে। তা ছাড়া ভিপিএনও ব্যবহারকারীকে হ্যাকারের হাত থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা দিতে পারে না।
পুলিশের ত্রৈমাসিক সভা সূত্র বলেছে, পুলিশের অভ্যন্তরীণ তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারগুলোর তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ধরনের কম্পিউটার সব থানা, সার্কেল অফিস, এসপি অফিসসহ বিশেষায়িত ইউনিটগুলোয় রয়েছে। সেগুলো পরিবর্তন করার পাশাপাশি স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক বাদ দিয়ে ভিপিএন সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এসব কাজের দেখভালের জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-আইসিটি) ও একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতনদের গোপন কথাবার্তা বলতে আলাদা ওয়াকিটকির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ ওয়াকিটকিও থাকবে, তবে এগুলো ব্যবহারে কিছু নিয়মকানুনের কথা জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র বলছে, গত বছরের শেষ দিকে পুলিশের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারের তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল। স্পর্শকাতর তথ্যের এই ভান্ডারে আইডি ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিয়েছিল সাইবার অপরাধীরা (হ্যাকার)। হ্যাক করে নেওয়া তথ্য রেখে দেওয়া হয়েছিল চোরাই তথ্য বাজারের (ডার্ক ওয়েব) একাধিক সাইটে। সেখানে তথ্য সংযোজন-বিয়োজন ও বেচাকেনার সুযোগ থাকায় বিষয়টি গুরুতর হুমকি বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর। পরবর্তী সময়ে যেসব পুলিশ সদস্যের হাতে এই সফটওয়্যারে প্রবেশাধিকার ছিল, তাদেরকে সাত দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে বলা হয়েছিল।
ত্রৈমাসিক ওই বৈঠকে থাকা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডার্কওয়েবে আইডি পাসওয়ার্ড চলে যাওয়ার পরই স্পর্শকাতর তথ্য সংরক্ষণ ও জমা রাখার বিষয়ে কথা হয়েছিল। পরে ভিপিএন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ সদর দপ্তর। যাতে করে পুলিশের স্পর্শকাতর তথ্যে কেউ আড়ি পাততে না পারে। তিনি বলেন, যদি কোনো অপরাধী হ্যাক করে পুলিশের তথ্যের সাইটে প্রবেশ করে, তাহলে নানা ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। তাই পুরো সিস্টেমটিকে কেউ যেন চিহ্নিত করতে না পারে, সে নিশ্চয়তার জন্যই সর্বত্র ভিপিএন ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে।
অবশ্য পুলিশ সদর দপ্তরের আরেকটি সূত্র বলছে, দুই বছর ধরেই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তথ্যবিনিময়ের জন্য পুলিশের এক হাজার কার্যালয় ভিপিএন সংযোগ নিয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলেছে, পুলিশ এখন যে সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল ডেটাবেজ তৈরি করেছে, ভিপিএন সংযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সেটা নিয়েও কাজ করা হবে। এই ডেটাবেজকে ধীরে ধীরে বিগডেটা অ্যানালিটিকস এবং আর্টিফিশিয়াল অ্যানালিটিকসে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আইসিটি বিভাগ একটি বিগডেটা অ্যানালিটিকস টাস্কফোর্সও গঠন করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিপিএন তৃতীয় পক্ষের (থার্ড পার্টি) একটি সেবা। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর সব তথ্য ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। বিশ্বে গুটিকয়েক ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে মানসম্পন্ন সেবা দেয়। বাকি সবাই বিনা মূল্যে সেবা দিয়ে ব্যবহারকারীর তথ্য বিক্রি করে আয় করে।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ভিপিএন ব্যবহারকারীকে হ্যাকারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। কারণ বেশির ভাগ হ্যাকার কম্পিউটার সিস্টেমে আক্রমণ করে ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করে, কিংবা ক্ষতিকর (ম্যালওয়্যার) সফটওয়্যার ছড়িয়ে দিয়ে। ফিশিং লিঙ্ক আসে ই-মেইল কিংবা অন্য কোনো বার্তা আদান-প্রদানের প্ল্যাটফরমে। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই সিস্টেম বেহাত হয়ে যায়। অন্যদিকে ভিপিএন ব্যবহার করেও কেউ যদি কোনো ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার লিঙ্কে ক্লিক করে, সে সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশের। এ ধরনের গোপনীয়তা ও কৌশল বাহিনীর প্রশিক্ষণের একটি অংশ।
ওয়াকিটকি ব্যবহারেও সতর্কতা
অন্যদিকে তথ্যভান্ডারের পাশাপাশি ওয়াকিটকি নিয়েও সতর্কতা অবলম্বন করছে পুলিশ সদর দপ্তর। সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় নির্বাচনের সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকার সময় নিজেদের মধ্যে কথোপকথন বাইরে চলে গিয়েছিল।
পুলিশ সদর দপ্তর মনে করে, বাহিনীর অপারেশন পরিকল্পনা বাইরে চলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ জটিল হয়ে পড়ে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলাদা ওয়াকিটকিতে যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত নিতে চান। পরবর্তী সময়ে তা সবার উদ্দেশে জানিয়ে দেওয়া হবে। তা ছাড়া ওয়াকিটকির একই সংযোগে সবাই যুক্ত থাকায় মাঠে কাজ করার সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। সদস্যরা নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে নির্দেশনা দিতে ও পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। বৈঠক সূত্রে বলছে, ওয়াকিটকিতে বাহিনীর ভেতরের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই এমন কড়াকড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, তথ্যের নিরাপত্তার স্বার্থে রাষ্ট্রীয় সংস্থার ভিপিএন ব্যবহার কতটুকু যৌক্তিক, সেটা আলোচনার বিষয়। তা ছাড়া ভিপিএন নিয়ে সাময়িক সুবিধা পাওয়া গেলেও মূল তথ্যভান্ডার অন্যদের হাতে চলে যাবে। সেখানেও ওই অনিরাপত্তাই তৈরি হচ্ছে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে