শেবাচিমে নেই পরিচালক, ব্যাহত সেবাদান কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
Thumbnail image

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে অস্থিরতা দেখা দেয়। এর মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের মাধ্যমে হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলামকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এমন অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসনিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ব্যাহত হচ্ছে রোগীদের সেবাদান কার্যক্রম। এই অবস্থায় সংকট কাটাতে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন সাধারণ চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।

১ অক্টোবর স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে পাঠানো চিঠিতে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অবহেলা, সিন্ডিকেট বাণিজ্য, রাজনৈতিক দাপট এবং দুর্নীতির কারণে আজ প্রতিষ্ঠানটি বেহাল। রোগীরা হাসপাতালে প্রবেশ থেকে শুরু করে ত্যাগ করা পর্যন্ত প্রতি পদে পদে হয়রানি ও অবহেলার শিকার হচ্ছে। এর ক্ষোভ পড়ছে চিকিৎসকদের ওপর; যার ফলে চিকিৎসকেরা বহিরাগত ও রোগীর স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। হাসপাতালের বর্তমান প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর চিকিৎসক সমাজ এবং বৃহত্তর বরিশালবাসী আস্থা রাখতে পারছে না। এই অবস্থায় আস্থা ফেরাতে, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে এবং রোগীদের হয়রানি বন্ধে হাসপাতালে পরিচালক পদে একজন দক্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে অনুরোধ জানান চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি হাসপাতালের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু পরিচালক না থাকায় এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে শিগগির ওষুধ ও সরঞ্জামের সংকট দেখা দিতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের দায়িত্বশীল এক চিকিৎসক বলেন, ‘পরিচালক না থাকায় উপপরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান শাহিন নিজ উদ্যোগে কোনো কাজ করছেন না; যে কারণে শৃঙ্খলা ফিরছে না। পরিচালক না থাকায় চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী যেমন ইচ্ছা তেমনভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরিচালকের অনুপস্থিতিতে দালাল চক্র, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালকদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে।’

হাসপাতালের মেডিসিন, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, অনেক রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে। বরগুনা থেকে আসা এক ডেঙ্গু রোগীর স্বজন আ. রহমান বলেন, ‘ডাক্তার আসেন না। নার্সরাও খেয়াল রাখেন না। সেবা নেই এখানে।’ একই অভিযোগ করেন ভোলা থেকে আসা মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন মোহাম্মদ আরিফ।

এ নিয়ে কথা হলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল নগর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে এটাই চিত্র। বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্বরতদের হেনস্তা করে অপসারণের চেষ্টা চলছে। শেবাচিম হাসপাতালে এখন যিনি দায়িত্বে আছেন, তিনি অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। হাসপাতালে শৃঙ্খলা নেই। চিকিৎসকেরা সময়মতো হাসপাতালে আসেন না। এতে শুধু প্রশাসনিক নয়, স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেবাচিম হাসপাতালের উপপরিচালক এস এম মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘প্রশাসনিক সংকট কাটাতে আমাদের উদ্যোগের কী আছে? মন্ত্রণালয় সংকটের বিষয় জানে। তারাই ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত