ভালুকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগেরই প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ। আটটি ইউপিতে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নিয়ে বিপাকে রয়েছে দলটি। যদিও অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী ভালো অবস্থান তৈরি করতে না পারলেও আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংকে ভাগ বসাবেন বলে দলটির নেতারা আশঙ্কা করছেন। তবে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক হিসেবে বিবেচিত কয়েকটি ইউপিতে সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগে ভালো অবস্থানে রয়েছেন বিদ্রোহীরা।

ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১১টি ইউপির ৯টিই আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। বরাবরই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও এবার বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। ৯টি ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপরীতে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করছেন। তাঁদের দাপটে দলীয় প্রার্থীরা হিমশিম খাচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উথুরা ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম থাকলেও বিদ্রোহী হয়েছেন সদ্য দলে যোগ দেওয়া ইসাহাক আলী। মেদুয়ারীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেসমিন নাহার রানীকে শক্ত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন বিএনপি সমর্থিত এ কে এম সাইদুজ্জামান তালুকদার। ভরাডোবা শাহ আলম তরফদারের প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান।

ধীতপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত লুতফর রহমান খান শারফুলের প্রতিপক্ষ শফিকুল ইসলাম কামাল। স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমও রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। বিরুনীয়ায় আওয়ামী লীগের রিদওয়ান সারোয়ার রব্বানীর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী সুব্রত ভৌমিক ও নুরুল হক মাস্টার। ভালুকায় আওয়ামী লীগের শিহাব আমিন খানের প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী আমান উল্লাহ খান মাখন শক্ত অবস্থানে রয়েছেন।

মল্লিকবাড়ী ইউপিতে আওয়ামী লীগের এস এম আকরাম হোসাইনের বিপরীতে ভালো অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির সারোয়ার জাহান এমরান। ডাকাতিয়ায় আওয়ামী লীগের হারুন অর রশিদের প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। কাচিনায় দলের মনোনীত মুশফিকুর রহমান লিটনের বিপরীতে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ফকির।

এ ছাড়া হবিরবাড়ীতে আওয়ামী লীগের মনোনীত তোফায়েল আহমেদের প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী রেজাউল করিম রিপন। আর রাজৈ ইউপিতে আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম বাদশার বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা আনোয়ার উদ্দিন আহমেদ।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাবি, তাঁরা প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘদিন এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে অনেক অর্থ খরচ করেছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম আফরোজ খান আরিফ বলেন, আওয়ামী লীগের অনেকেই নির্বাচন করার যোগ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। সবার তাঁদের বিজয়ী করতে কাজ করা উচিত।

দলটির একাধিক প্রার্থী বলেন, তাঁরা জনগণের জন্য কাজ করছেন। সে জন্য ভোটাররা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন বলে আশা তাঁদের।

একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, ‘আমি করোনাকালে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাঁদের খাদ্যসহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য করেছি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করেছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি জয়ী হব।’

ইউএনও সালমা খাতুন বলেন, ‘ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।’