বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার মো. ইমন। গোপালপুরে আন্দোলনের রেশ না লাগলেও তা আলোড়িত করে ইমনকে। তাই ৪ আগস্ট তিনি মির্জাপুরের গোরাই এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। 

বিকেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ। এ সময় পেটে গুলিবিদ্ধ হন ইমন। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ)। 

এদিকে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর অচেতন হয়ে যান ইমন। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১২ দিন ধরে অচেতন রয়েছেন তিনি। চিকিৎসকেরা এখন পর্যন্ত আশার বাণী শোনাতে পারেননি ইমনের পরিবারকে। 

ইমন গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলিন এলাকার মো. জুলহাসের ছেলে। তিনি মনিরুজ্জামান খান বিএম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হয়েছেন হেমনগর ডিগ্রি কলেজে। 

পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইমন যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে, তখন ভ্যানচালক বাবা মারা যান। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় হওয়ায় অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। টিউশনি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি ছোট তিন ভাইবোনসহ নিজের পড়াশোনাও চালিয়ে নিচ্ছিলেন। পড়াশোনা শেষে সংসারের দুঃখ দূর করতে চেয়েছিলেন তিনি। 

ইমনের মা রিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এর-ওর কাছ থেকে টাকা ধার করে চিকিৎসা করাচ্ছি। ডাক্তার বলেছেন, জ্ঞান ফিরলে পেটে অপারেশন করা লাগবে। অনেক টাকার প্রয়োজন।’