Ajker Patrika

এক যুগে এডিপির সর্বনিম্ন বাস্তবায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এক যুগে এডিপির সর্বনিম্ন বাস্তবায়ন

করোনা মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় প্রভাব ফেলেছে। চলতি অর্থবছরে সাত মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি থেকে করোনার সময়ের চেয়েও এমনকি গত ১২ বছরের মধ্যে কম টাকা খরচ হয়েছে।

সোমবার বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে এ তথ্য। আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৬টি প্রকল্পের বিপরীতে এডিপিতে বরাদ্দ আছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তা থেকে জুলাই থেকে জানুয়ারির সময়ে ব্যয় হয়েছে ৭২ হাজার ৯০ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। বাস্তবায়নের এ হার গত এক দশক বা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বনিম্ন।

এক দশকের মধ্যে করোনাকালে ২০২০-২১ এবং এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে কাছাকাছি বা ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন ছিল। বাকি সময়গুলোতে তা ৩০ শতাংশের বেশি ছিল। মাঝের এক বছর তা ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল।

সাত মাসের মোট খরচের মধ্যে সরকারি অংশে ৪০ হাজার ৩৭৫ কোটি এবং বিদেশি অর্থায়নের ২৯ হাজার ১৫৫ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থ খরচ হয়েছে ২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়টির আওতায় চলতি অর্থবছরে ১০১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরপর মাত্র দশমিক শূন্য ৯৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। তাদের চলতি অর্থবছরে ৩৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও খরচ করতে পেরেছে মাত্র ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। মাত্র ৩ দশমিক ১৫ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন। ৮২৭ কোটি টাকার মধ্যে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বা ৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার খরচ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ বা ৫৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা খরচ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

মোট বরাদ্দ কম থাকায় কম টাকা খরচ করেও সবচেয়ে বেশি প্রায় ৮৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। খরচ ১৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বড় বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সেতু বিভাগ ৪৬ দশমিক ৪০ শতাংশ বা ৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা, ধর্ম মন্ত্রণালয় ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৮৫২ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ ৪৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বা ১২ হাজার ২০৯ কোটি টাকা খরচ করেছে।

এদিকে অর্থবছরের শুরুতেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন, জরুরি না হলে বিদেশ সফর ও গাড়ি কেনা বন্ধ, আসবাব কেনায় আরও সাশ্রয়ী হওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাই ব্যয় কম হওয়ার পেছনে সংকটের কারণে সরকারে ব্যয়সাশ্রয়ী নীতির পাশাপাশি মন্ত্রণালয়গুলোর দক্ষতার অভাবকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সংকটের কারণ নয়, বরং বলা যায় এটা মন্ত্রণালয়গুলোর অবহেলা। সব সময় দেখা যায়, বছরের বেশির ভাগ সময় কাজ হয় না। বাকিটা তাড়াহুড়ো করে শেষ করে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বাস্তবায়ন ওঠানো হয়। এতে কাজ খারাপ হয়, সময় বাড়ে, ব্যয় বাড়ে। সবই পুরোনো সমস্যা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত