প্রণোদনা আত্মসাতের অভিযোগ

পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৬: ৩৯
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৫

পীরগঞ্জে করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের দেওয়া প্রণোদনার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক খামারি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনেও কর্মসূচি পালন করেন।

সদর ইউনিয়নের তিন গ্রামের খামারিরা গতকাল বুধবার দুপুরে মানববন্ধন থেকে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত চান। সেই সঙ্গে লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি) হাসানুর রহমান হাসানের শাস্তি দাবি করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা জানান, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতায় উপজেলার হাঁস, গরু ও ছাগলের খামারিদের নাম তালিকাভুক্ত করে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে প্রথম দফায় ১ হাজার ৫১৬ এবং দ্বিতীয় দফায় ৪৯৫ খামারিকে প্রণোদনার টাকা দেওয়া হয়।

এই প্রকল্পের অধীনে পীরগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে এলএসপি নিয়োগ দেওয়া হয়। সদর ইউনিয়নে নিয়োগপ্রাপ্ত হাসানুর রহমান হাসান বারাইপাড়া, মকিমপুর ও বাজিতপুর গ্রামের তালিকাভুক্ত খামারিদের মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন। এরপর প্রণোদনার টাকা খামারিদের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে আসলে এলএসপি হাসান নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে নিয়ে নেন।

খামারিরা বিষয়টি বুঝতে পেরে এলএসপি হাসান ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে গেলে তাঁদের টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো হাসান হুমকি দেন, পাশাপাশি তিনি টাকা চাওয়ায় বারাইপাড়া গ্রামের খামারি রাহেনা বেগমের ছেলে রায়হান মিয়াকে মারধর করেন।

এ ঘটনায় এবং টাকা না পাওয়ায় বারাইপাড়া, মকিমপুর ও বাজিতপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক খামারি তাঁদের জন্য বরাদ্দ টাকা ফেরতসহ এলএসপি হাসানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন।

মকিমপুর গ্রামের খামারি রিক্তা রানী, ধলী রানী, বাজিতপুর গ্রামের বিউটি বেগম, নান্নু মিয়া ও বারাইপাড়ার রাহেনা বেগম, জোয়াদ আলীসহ কয়েকজন মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পীরগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনার টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। এতে তালিকাভুক্ত অনেক খামারির মোবাইল ফোনে টাকা আসলেও এলএসপি হাসান তা নিয়ে নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা টাকাগুলো ফেরত চান। পাশাপাশি এলএসপি হাসানের বিচার দাবি করেন তাঁরা।

খামারিদের টাকা নিজের মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে স্থানান্তরের অভিযোগ স্বীকার করে এলএসপি হাসান জানান, ওই টাকা তিনি খামারিদের ফেরতও দিয়েছেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধ মানববন্ধন মূলত ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খামারিদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ হলে ওই এলএসপি হাসানুর রহমান হাসানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খামারিরা থানায় মামলাও করতে পারেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত