প্রভাবশালীর পেটে নদীর বালু

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩, ১২: ১১
Thumbnail image

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় মধুমতী নদীর বালু যাচ্ছে সিন্ডিকেটের (চক্র) পেটে। নদীর যেখানে সেখানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে অবাধে। চক্রের সদস্যরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। তবে প্রশাসন বলছে, অবৈধ বালু উত্তোলন ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। 

জানা গেছে, উপজেলার শিরগ্রাম খেয়াঘাট, পাল্লা খেয়াঘাট, কাশিপুর, বাবুখালী, হরিনাডাঙ্গা, রায়পুর, দাতিয়াদহ, হরেকৃষ্ণপুর, চরঝামা, চরপাচুড়িয়া, কালিশংকরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরে মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় একটি চক্র। ওই চক্রের নেতৃত্ব দেন গোপালপুর গ্রামের সেলিম রেজা। তাঁর অন্য দুই সহযোগী বিলঝলমল গ্রামের মো. শাওন ও সোনাপুর গ্রামের নাজমুল হাসান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মধুমতী নদীর বুক থেকে একসঙ্গে ১০-১২টি অবৈধ ট্রলিতে বালু কাটছেন শ্রমিকেরা। ঘটনাস্থলে এক ট্রলিচালককে পাওয়া গেলে তিনি জানান, প্রতি গাড়িতে ১০০ বর্গফুট বালু ধরে। গাড়িপ্রতি ৩০০ টাকা করে দিতে হয় সেলিম ভাইকে। প্রতি গাড়ির হিসাব রাখেন শাওন নামের এক ম্যানেজার।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ১০০ ছোট ট্রাকে বালু পরিবহন করা হয়। মধুমতী নদীর প্রায় ২০ পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। প্রতি ট্রাকে গড়ে ২০০ ঘনফুট বালু ধরে। এক ট্রাক বালু বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ টাকার বালু বিক্রি করছেন এসব প্রভাবশালী। বছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

নদীপাড়ের বাসিন্দা আলী হোসেন, সাদ্দাম, মনিরুল বলেন, সেলিম ও তাঁর সহযোগীদের বালু কাটতে বাধা দিলে উল্টো ডিসি অফিস ও এসি ল্যান্ডের অফিসের ভয় দেখায়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেলিম রেজা। তিনি বলেন, ‘আমি কয়েক বছর বালু উত্তোলনের সঙ্গে থাকলেও এ বছর নেই। বালু কাটতে গেলে ওপরের চাপ আসে, তাই এ বছর কাটছি না।’

দীঘা ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মিয়া বলেন, দীঘা ইউনিয়নের শিরগ্রাম এলাকায় দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন হয়। নিষেধ ও বাধা দেওয়ার পরও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা থামে নাই।

এসি ল্যান্ড বাসুদেব কুমার মালো বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কাউকে নদী থেকে বালু কাটতে লিখিত বা মৌখিক কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এ বছর বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত