মাছের বিপন্নতা জানাতে সুরমার তীরে ‘করুক’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩: ১০

সিলেট নগরীর সুরমা নদীর তীরে কিনব্রিজ ও আলী আমজদের ঘড়িঘর ঘিরে উন্মুক্ত নাগরিক পরিসর। এতে নদীর তীরে প্লাস্টিকের বর্জ্য জমে হাঁসফাঁস অবস্থা। এর বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির নবীন স্থপতিরা। তারা প্লাস্টিক বর্জ‍্যে জলজ প্রাণীর কী অবস্থা হয়, তার বাস্তবচিত্র দেখাতে নির্মাণ করেন অস্থায়ী স্থাপত্য। এর নাম দিয়েছেন ‘করুক’। আজ (শনিবার) বিকেলে উন্মোচন করা হবে স্থাপত‍্যটি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে স্থাপত্য ‘করুক’ এর নির্মাণ শুরু হয়। পরে দুপুরে স্থাপত্যকর্ম প্রাথমিক নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন স্থপতি রাজন দাশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, করুক পরামর্শক-উপদেষ্টা সাংবাদিক উজ্জ্বল মেহেদী ও উদ‍্যোক্তা স্থপতি মিনহাজুল আবেদীন চৌধুরী।

স্থপতি রাজন দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ উদ্যোগে কেবল স্থপতিরা নন, নদী-পরিবেশ-প্রাণী অধিকারকর্মী, সংস্কৃতি ও সংবাদকর্মীরা আছেন। উন্মুক্ত এই স্থাপত্য দেখে নদীর জলে প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণবিরোধী কাজ সবাই করুক এ চিন্তা থেকে স্থাপত‍্যের নাম ‘করুক’।’

জানা গেছে, উদ্যোক্তারা স্বেচ্ছাশ্রমে করা স্থাপত‍্যকর্মটিতে দুটো বিরল প্রজাতির মাছের প্রতীকী রূপ দেওয়া হয়েছে। দুটো বৃহৎ আকৃতির মাছের প্রতীকী উপস্থাপন করে দেখানো হয়েছে, প্লাস্টিক দূষণ নীরবে জলজ প্রাণীর প্রাণ সংহার কী করুণভাবে করছে। এর মধ‍্যে একটি হচ্ছে বিলুপ্তির তালিকায় থাকা বাগাড়। বাঘ মাছ নামে পরিচিত এ মাছটির পেটে প্লাস্টিক বর্জ্য রেখে বিপন্নতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। জলজ অপরটিও মিঠাপানি থেকে বিলুপ্তির তালিকায় থাকা চিতল। মাছটির প্রতীকী স্থাপত‍্যে ব‍্যবহার করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব উপকরণ। বিশ্ব ঐতিহ্য শীতলপাটি ও পাটজাত দ্রব‍্য। মাছের খাবার হিসেবে পেটে পুরে রাখা প্লাস্টিক।

উদ্যোক্তারা জানান, নিরাপদ খাবার গ্রহণ করা জরুরি তবে দুঃখের বিষয় হলো কোনো খাবারই এখন আর নিরাপদ নয়, কারণ মাছ-মাংস থেকে সবুজ শাকসবজি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। এখন খাবার মেন্যু বদলের আগে জরুরি অভ্যাস আর রুচি বদল করার। প্লাস্টিকের পণ্য রিসাইকেল করলেও প্লাস্টিক দূষণ থেকে মুক্তি নেই।

তাই প্লাস্টিকের তৈরি সব জিনিস ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ব্যবহার করতে হবে বিকল্প প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিস।

‘করুক’ উদ‍্যোক্তা স্থপতি মিনহাজুল আবেদীন চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য পানিতে ফেলে দিলে সেসব ফটোকেমিক্যালি ও বায়োলজিক্যাল ভেঙে ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। তারপর সেসব চলে যায় মাছের পেটে এবং সেখান থেকে মানবদেহ পর্যন্ত। এ প্রক্রিয়াটি এখনো প্রান্তিক মানুষের সচেতনতার বাইরেই রয়ে গেছে। পরিবেশ এবং মানবস্বাস্থ্য দুইয়ের জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর এ মাইক্রোপ্লাস্টিক। প্রতিবাদ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই আমাদের এই আয়োজন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ধর্ম অবমাননা: একই স্ট্যাটাসের জন্য দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত হৃদয়

আমিরাতে অবৈধদের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ আর মাত্র দুদিন

৫ আগস্ট সশস্ত্র সংগ্রামের ভিডিও বার্তা দিয়ে রেখেছিলাম: উপদেষ্টা নাহিদ

ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে ইরানের সামরিক বাজেট তিনগুণ

রাজধানীতে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ করায় লেগুনা চালককে ছুরিকাঘাতে হত্যা

আরও
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত