শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
বরাবরের মতোই অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে আজ ১ ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য আত্মোৎসর্গের স্মৃতি অম্লান রাখতেই প্রতিবছর আয়োজন করা হয় এই মেলার। মেলা হয়ে উঠেছে প্রাণের বন্ধন। কিন্তু যে চেতনা ঘিরে মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগ, তা কি কেবল মেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে? সামাজিক-সাংস্কৃতিকভাবে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশ কতটুকু এগিয়েছে—সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কয়েক বছর ধরে।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলা ভাষার ব্যবহার ও প্রসার নিয়ে কেউই সন্তুষ্ট নন। তাঁদের মতে, বাংলা ভাষার ব্যবহার এবং ভাষা সংগ্রামকেন্দ্রিক আন্দোলনের চেতনা দিন দিন স্তিমিত হয়ে আসছে। কেবল বইমেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে সেই চেতনা।
সংস্কৃতিজনদের মতে, গত শতকের ষাটের দশকে পাকিস্তানি সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় একুশে উদ্যাপনের পরিধি বাড়তে থাকে। উনসত্তর থেকে একাত্তর সাল পর্যন্ত বাড়তে থাকে এর মাত্রাও। কালে কালে তা এক অবশ্যপালনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে উদ্যাপন এবং তার সঙ্গে সৃজনশীলতার সম্পর্কও গড়ে ওঠে, বিশেষ করে অমর একুশে বইমেলা শুরু হওয়ার পর থেকে। পরবর্তী সময়ে, বিশেষত আশির দশকের গোড়ার দিকে প্রভাতফেরির স্থান দখল করে পশ্চিমা নিয়ম। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন গণনা শুরু হয় আগের রাত ১২টার পর থেকে। সর্বস্তরে মাতৃভাষা চালু করার যে বার্তা দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনকে বেগবান করেছিল, তার রং ধূসর হয়ে ইংরেজির রং উজ্জ্বলতর হতে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিন্দি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রভাবও যুক্ত হয়েছে।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাহাত্তরের পর থেকেই দিন দিন বাংলা ভাষার চেতনা হ্রাস পেয়েছে। আমরা বইমেলা করছি, কিন্তু বাংলা ভাষার প্রসার করছি না। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ না বাড়লে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অন্য সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না।’
সিদ্ধেশ্বরী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা আজমি ফারজানা প্রেমা বলেন, ‘আমরা এখনো ঠিকভাবে বাংলা ভাষাটাই বলতে পারছি না। আমরা যাঁরা পড়ালেখা করছি, তাঁরা ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে জগাখিচুড়িভাবে কথা বলি। দিন দিন এটা বাড়ছেই। অন্য সব বাদই দিলাম। একজন রোমানীয় নারী একটি টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে আমাদের বেশ লজ্জা দিয়েছিলেন।’
একটি বেসরকারি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল কোম্পানিতে কর্মরত মিল্টন ঢালি মনে করেন, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এটাই বাংলা ভাষার চেতনা। এই তরুণ বলেন, ‘আমাদের বেসরকারি কোম্পানিগুলোতে এখন ইংরেজির ব্যবহার দেদার। ইংরেজি ব্যবহার করুক, কিন্তু প্রথম ভাষা হিসেবে বাংলা থাকা উচিত।’
আরেকটি বেসরকারি কোম্পানিতে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন শিকড় হক চৌধুরী। তিনি ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করেছেন। বাংলা ভাষার চেতনা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা বেশ খারাপ। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের জন্য রক্ত পর্যন্ত দিয়েছে বাঙালি। সেই চেতনায় পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। এমনকি স্বাধীনতার চেতনায়ও ভাষা আন্দোলনের প্রভাব আছে। শিকড় হক চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আজকের তরুণেরা এই চেতনায় এখন কি রাস্তায় নামবে? আমার মনে হয় না। তাদের মধ্যে এই বিষয়টা এখন কাজই করে না। কারণ, আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব একেবারেই নাই।’
বেসরকারি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করা ফারহান আলী প্রতিবছরই অমর একুশে বইমেলায় হাজির হন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের ওভার স্মার্ট (অতি চৌকস) বানাতে গিয়ে নিজেদের সংস্কৃতিকেই অবজ্ঞা করছি। ভাষার ক্ষেত্রেও তা-ই।’
প্রাবন্ধিক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের চেতনা একটা অব্যাহত লড়াই। ভাষা আন্দোলন একটা জাতির মুক্তির পথ খুলে দিল। এই দায়িত্ব একটা জাতীয় বিষয়। অবশ্যই সরকার ও প্রশাসনের দিক থেকে একটা বড় বিষয়। সেখানের সিদ্ধান্তগুলো খুব প্রভাব তৈরি করে। একুশে ফেব্রুয়ারি এলে সবাই একটু নড়েচড়ে বসে। এরপর সবাই আবার থিতিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আত্মোপলব্ধি ও আত্মজাগরণ দরকার।’
বরাবরের মতোই অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে আজ ১ ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য আত্মোৎসর্গের স্মৃতি অম্লান রাখতেই প্রতিবছর আয়োজন করা হয় এই মেলার। মেলা হয়ে উঠেছে প্রাণের বন্ধন। কিন্তু যে চেতনা ঘিরে মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগ, তা কি কেবল মেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে? সামাজিক-সাংস্কৃতিকভাবে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশ কতটুকু এগিয়েছে—সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কয়েক বছর ধরে।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলা ভাষার ব্যবহার ও প্রসার নিয়ে কেউই সন্তুষ্ট নন। তাঁদের মতে, বাংলা ভাষার ব্যবহার এবং ভাষা সংগ্রামকেন্দ্রিক আন্দোলনের চেতনা দিন দিন স্তিমিত হয়ে আসছে। কেবল বইমেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে সেই চেতনা।
সংস্কৃতিজনদের মতে, গত শতকের ষাটের দশকে পাকিস্তানি সামরিক সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় একুশে উদ্যাপনের পরিধি বাড়তে থাকে। উনসত্তর থেকে একাত্তর সাল পর্যন্ত বাড়তে থাকে এর মাত্রাও। কালে কালে তা এক অবশ্যপালনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একুশে উদ্যাপন এবং তার সঙ্গে সৃজনশীলতার সম্পর্কও গড়ে ওঠে, বিশেষ করে অমর একুশে বইমেলা শুরু হওয়ার পর থেকে। পরবর্তী সময়ে, বিশেষত আশির দশকের গোড়ার দিকে প্রভাতফেরির স্থান দখল করে পশ্চিমা নিয়ম। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন গণনা শুরু হয় আগের রাত ১২টার পর থেকে। সর্বস্তরে মাতৃভাষা চালু করার যে বার্তা দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনকে বেগবান করেছিল, তার রং ধূসর হয়ে ইংরেজির রং উজ্জ্বলতর হতে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হিন্দি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রভাবও যুক্ত হয়েছে।
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাহাত্তরের পর থেকেই দিন দিন বাংলা ভাষার চেতনা হ্রাস পেয়েছে। আমরা বইমেলা করছি, কিন্তু বাংলা ভাষার প্রসার করছি না। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ না বাড়লে মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অন্য সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না।’
সিদ্ধেশ্বরী কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা আজমি ফারজানা প্রেমা বলেন, ‘আমরা এখনো ঠিকভাবে বাংলা ভাষাটাই বলতে পারছি না। আমরা যাঁরা পড়ালেখা করছি, তাঁরা ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে জগাখিচুড়িভাবে কথা বলি। দিন দিন এটা বাড়ছেই। অন্য সব বাদই দিলাম। একজন রোমানীয় নারী একটি টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে আমাদের বেশ লজ্জা দিয়েছিলেন।’
একটি বেসরকারি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল কোম্পানিতে কর্মরত মিল্টন ঢালি মনে করেন, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এটাই বাংলা ভাষার চেতনা। এই তরুণ বলেন, ‘আমাদের বেসরকারি কোম্পানিগুলোতে এখন ইংরেজির ব্যবহার দেদার। ইংরেজি ব্যবহার করুক, কিন্তু প্রথম ভাষা হিসেবে বাংলা থাকা উচিত।’
আরেকটি বেসরকারি কোম্পানিতে ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন শিকড় হক চৌধুরী। তিনি ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করেছেন। বাংলা ভাষার চেতনা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা বেশ খারাপ। তাঁর মতে, ভাষা আন্দোলনের জন্য রক্ত পর্যন্ত দিয়েছে বাঙালি। সেই চেতনায় পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। এমনকি স্বাধীনতার চেতনায়ও ভাষা আন্দোলনের প্রভাব আছে। শিকড় হক চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আজকের তরুণেরা এই চেতনায় এখন কি রাস্তায় নামবে? আমার মনে হয় না। তাদের মধ্যে এই বিষয়টা এখন কাজই করে না। কারণ, আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব একেবারেই নাই।’
বেসরকারি প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করা ফারহান আলী প্রতিবছরই অমর একুশে বইমেলায় হাজির হন। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের ওভার স্মার্ট (অতি চৌকস) বানাতে গিয়ে নিজেদের সংস্কৃতিকেই অবজ্ঞা করছি। ভাষার ক্ষেত্রেও তা-ই।’
প্রাবন্ধিক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের চেতনা একটা অব্যাহত লড়াই। ভাষা আন্দোলন একটা জাতির মুক্তির পথ খুলে দিল। এই দায়িত্ব একটা জাতীয় বিষয়। অবশ্যই সরকার ও প্রশাসনের দিক থেকে একটা বড় বিষয়। সেখানের সিদ্ধান্তগুলো খুব প্রভাব তৈরি করে। একুশে ফেব্রুয়ারি এলে সবাই একটু নড়েচড়ে বসে। এরপর সবাই আবার থিতিয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আত্মোপলব্ধি ও আত্মজাগরণ দরকার।’
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে