কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র পদের উপনির্বাচন আগামী ৯ মার্চ। গতকাল বুধবার তফসিল ঘোষণার পরই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার জানান দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের ১১ নেতা। তাঁদের মধ্যে ছয়জনই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী। এ ছাড়া বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতা ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

গত ১৩ ডিসেম্বর মারা যান কুসিক মেয়র আরফানুল হক। পরে ১৮ ডিসেম্বর মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল মেয়র হাবিবুর আল-আমিন সাদী।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি, বাছাই ১৫ তারিখ, আপিল নিষ্পত্তি ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাহারের অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম সেলিম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ খোকন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ নূরুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসীন বাহার সূচনা, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ ও আদর্শ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল।

এ ছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমা, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কবিরুল ইসলাম শিকদার, কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ডা. আজম খান নোমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য আনিছুর রহমান মিঠু মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দুইবারের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

২০১১ সালের ১০ জুলাই যাত্রা শুরু হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের। ২০১২ সালে প্রথম এবং ২০১৭ সালে দ্বিতীয় সিটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা সাক্কু। 

সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৫ জুন কুসিকের তৃতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক মেয়র নির্বাচিত হন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় সাক্কু ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কায়সারকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি। এখনো তাঁদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।

সাক্কু বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আমার প্রস্তুতি আছে। আমি সব সময় মাঠে আছি। দল আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি দলের সঙ্গে আছি।’

মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাহমুদ তানিম বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৭ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছি। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। আমি ১০ বছর আগেই সিটি নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। ওই সময়ে নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিষয়টি দেখবেন বলেছিলেন। এবার মনোনয়ন পাব বলে প্রত্যাশা করি।’

মনোনয়নপ্রত্যাশী সেলিম বলেন, ‘১৯৬৬ সাল থেকে দল করে আসছি। কখনো দল পরিবর্তন করিনি। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপির মতামত নিয়ে সিটির উপনির্বাচনে নেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইব।’