শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা
গাইবান্ধা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরের গ্রাম দাড়িয়াপুর। প্রত্যন্ত এই গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ একটি নাটকের দল চালাচ্ছেন। নাম সারথি থিয়েটার। তাঁদের কেউ ভ্যানচালক, কেউ জেলে, কেউ কৃষক, কেউ অবসরপ্রাপ্ত কেরানি, কেউ শিক্ষার্থী। তাঁরা এখন গ্রামের উঠানে উঠানে পালাগান করছেন। সন্ধ্যা নামার পর নিভৃত গ্রামে সুর উঠছে পালাগানের। শিকড়ের ঘ্রাণে তাতে বুঁদ হয়ে থাকছেন খেটে খাওয়া মানুষ, আর তাঁদের সন্তান, বউ-ঝি, পড়শিরা।
সারথির দলপ্রধান জুলফিকার চঞ্চল। নতুন পালা নামানোর চিন্তা তাঁর মাথায়। একদিন গেলেন ঢাকার তরুণ পালাকার সায়িক সিদ্দিকীর কাছে। সায়িকও রাজি। বায়না কিছুই নয়। যাওয়া-আসার খরচ দিলেই চলবে।
সেই শুরু। সায়িক ঢাকার মঞ্চে করেছেন নিজেদের গল্প। পালায় এনেছেন শেক্সপিয়ারকেও। এবার নিলেন সেলিম আল দীনের ‘যৈবতী কন্যার মন’। নাম দেওয়া হলো ‘কালিন্দীর গীত’। পাণ্ডুলিপি শেষ। এবার পালা ওঠানোর পর্ব। সায়িক নগরের জীবন ছেঁকে দুই কি তিন দিন বের করে ছোটেন গাইবান্ধায়। ওদিকে ভ্যানচালক একটু সময় বাঁচিয়ে, শিক্ষক তাঁর প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ রেখে ছুটে আসেন পালার আসরে। ধীরে ধীরে কালিন্দীর গীতের চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে মহড়াকক্ষে।
এই করে করে এল শ্রাবণ। অঝোর বরষার মধ্যেই ঠিক হলো, কালিন্দীর গীত আসবে দর্শক সমুখে। টানা পাঁচ দিনের আয়োজনের নাম হলো কালিন্দীর গীত পালার পঞ্চবাসর। ৯ আগস্ট হলো প্রথম বাসর। ধীরে ধীরে পাড়ি দিল পঞ্চনিশি। শ্রাবণের ধারা বয়ে চলে। তাতে আটকায় না বাসরসজ্জা।
এককালে পালাকারেরা হ্যাজাক বাতির আলোয়, বাড়ির উঠানে রাতভর গাইতেন। ঠিক হলো কালিন্দীর গীতও হবে সেভাবে। গাওয়া হবে পাঁচ বাড়ির উঠানে। যেই ভাবা সেই কাজ। গাইবান্ধার পাঁচটি বাড়িতে হলো অভিনয়। দর্শকও উপচে পড়া। পালা বলেই শুধু প্রবীণদের ভিড় হলো, এমনটি নয়। সন্ধ্যা হতেই দেখা গেল, তরুণ-তরুণীরাও হাজির সদলবলে।
সায়িক জানান, পঞ্চবাসর উৎসর্গ করা হয়েছে বাংলা নাটকের পাঁচ কীর্তিমতীকে—বিনোদিনী দাসী, তৃপ্তি মিত্র, ফেরদৌসী মজুমদার ও শিমূল ইউসুফ; আর তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হলেন সারথিরই প্রথম নারী নাট্যকর্মী মমতা রানী চাকী।
পালাপ্রধান চঞ্চল বলেন, পালা নিয়ে কোনো ধরনের প্রচার থাকে না। কেবল যাঁর উঠানে আসর বসবে, তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। অভিনয়শিল্পীরা সন্ধ্যার আগে নিজেরাই ত্রিপল বিছিয়ে অভিনয়ের জায়গা করে নেন। সন্ধ্যা হতেই দর্শকসমাগম শুরু। বেশির ভাগই নারী। টেলিভিশনে হিন্দি সিরিয়ালে অভ্যস্ত নারীরা এক নতুন বিনোদনের মুখোমুখি। যার সঙ্গে শিকড়ের টান। পালা শেষে দর্শক ও অভিনয়শিল্পীর ভেদ যেন উড়ে যায়, এক পরিবার হয়ে ওঠেন।
শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? চঞ্চল জানান, করোনার সময় সবকিছু বন্ধ। তখন নাট্যকর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক বিতরণ করা হতো। সুযোগ পেলেই একটু পারফর্ম করতেন। তাতে ব্যাপক সাড়া মেলে। সেই অনুপ্রেরণায় উঠানে পালার পরিকল্পনা।
চঞ্চলের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন নতুন সন্ধ্যার। মাসজুড়ে শ্রাবণধারা কাঁচা মাটির পথ একেবারে থকথকে করে দিয়েছে। কাদাপানি পার হয়েই পৌঁছাতে হবে বাড়ির উঠানে। রাতে বসবে কালিন্দীর গীতের ষষ্ঠ আসর। এভাবে বাংলা নাটক নগরের
খোলস থেকে বেরিয়ে ঘুরবে উঠানের পর উঠান।
গাইবান্ধা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরের গ্রাম দাড়িয়াপুর। প্রত্যন্ত এই গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ একটি নাটকের দল চালাচ্ছেন। নাম সারথি থিয়েটার। তাঁদের কেউ ভ্যানচালক, কেউ জেলে, কেউ কৃষক, কেউ অবসরপ্রাপ্ত কেরানি, কেউ শিক্ষার্থী। তাঁরা এখন গ্রামের উঠানে উঠানে পালাগান করছেন। সন্ধ্যা নামার পর নিভৃত গ্রামে সুর উঠছে পালাগানের। শিকড়ের ঘ্রাণে তাতে বুঁদ হয়ে থাকছেন খেটে খাওয়া মানুষ, আর তাঁদের সন্তান, বউ-ঝি, পড়শিরা।
সারথির দলপ্রধান জুলফিকার চঞ্চল। নতুন পালা নামানোর চিন্তা তাঁর মাথায়। একদিন গেলেন ঢাকার তরুণ পালাকার সায়িক সিদ্দিকীর কাছে। সায়িকও রাজি। বায়না কিছুই নয়। যাওয়া-আসার খরচ দিলেই চলবে।
সেই শুরু। সায়িক ঢাকার মঞ্চে করেছেন নিজেদের গল্প। পালায় এনেছেন শেক্সপিয়ারকেও। এবার নিলেন সেলিম আল দীনের ‘যৈবতী কন্যার মন’। নাম দেওয়া হলো ‘কালিন্দীর গীত’। পাণ্ডুলিপি শেষ। এবার পালা ওঠানোর পর্ব। সায়িক নগরের জীবন ছেঁকে দুই কি তিন দিন বের করে ছোটেন গাইবান্ধায়। ওদিকে ভ্যানচালক একটু সময় বাঁচিয়ে, শিক্ষক তাঁর প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ রেখে ছুটে আসেন পালার আসরে। ধীরে ধীরে কালিন্দীর গীতের চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে মহড়াকক্ষে।
এই করে করে এল শ্রাবণ। অঝোর বরষার মধ্যেই ঠিক হলো, কালিন্দীর গীত আসবে দর্শক সমুখে। টানা পাঁচ দিনের আয়োজনের নাম হলো কালিন্দীর গীত পালার পঞ্চবাসর। ৯ আগস্ট হলো প্রথম বাসর। ধীরে ধীরে পাড়ি দিল পঞ্চনিশি। শ্রাবণের ধারা বয়ে চলে। তাতে আটকায় না বাসরসজ্জা।
এককালে পালাকারেরা হ্যাজাক বাতির আলোয়, বাড়ির উঠানে রাতভর গাইতেন। ঠিক হলো কালিন্দীর গীতও হবে সেভাবে। গাওয়া হবে পাঁচ বাড়ির উঠানে। যেই ভাবা সেই কাজ। গাইবান্ধার পাঁচটি বাড়িতে হলো অভিনয়। দর্শকও উপচে পড়া। পালা বলেই শুধু প্রবীণদের ভিড় হলো, এমনটি নয়। সন্ধ্যা হতেই দেখা গেল, তরুণ-তরুণীরাও হাজির সদলবলে।
সায়িক জানান, পঞ্চবাসর উৎসর্গ করা হয়েছে বাংলা নাটকের পাঁচ কীর্তিমতীকে—বিনোদিনী দাসী, তৃপ্তি মিত্র, ফেরদৌসী মজুমদার ও শিমূল ইউসুফ; আর তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হলেন সারথিরই প্রথম নারী নাট্যকর্মী মমতা রানী চাকী।
পালাপ্রধান চঞ্চল বলেন, পালা নিয়ে কোনো ধরনের প্রচার থাকে না। কেবল যাঁর উঠানে আসর বসবে, তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। অভিনয়শিল্পীরা সন্ধ্যার আগে নিজেরাই ত্রিপল বিছিয়ে অভিনয়ের জায়গা করে নেন। সন্ধ্যা হতেই দর্শকসমাগম শুরু। বেশির ভাগই নারী। টেলিভিশনে হিন্দি সিরিয়ালে অভ্যস্ত নারীরা এক নতুন বিনোদনের মুখোমুখি। যার সঙ্গে শিকড়ের টান। পালা শেষে দর্শক ও অভিনয়শিল্পীর ভেদ যেন উড়ে যায়, এক পরিবার হয়ে ওঠেন।
শুরুটা কীভাবে হয়েছিল? চঞ্চল জানান, করোনার সময় সবকিছু বন্ধ। তখন নাট্যকর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাস্ক বিতরণ করা হতো। সুযোগ পেলেই একটু পারফর্ম করতেন। তাতে ব্যাপক সাড়া মেলে। সেই অনুপ্রেরণায় উঠানে পালার পরিকল্পনা।
চঞ্চলের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন নতুন সন্ধ্যার। মাসজুড়ে শ্রাবণধারা কাঁচা মাটির পথ একেবারে থকথকে করে দিয়েছে। কাদাপানি পার হয়েই পৌঁছাতে হবে বাড়ির উঠানে। রাতে বসবে কালিন্দীর গীতের ষষ্ঠ আসর। এভাবে বাংলা নাটক নগরের
খোলস থেকে বেরিয়ে ঘুরবে উঠানের পর উঠান।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে