তেঁতুলিয়ায় ফুটেছে টিউলিপ

হোসেন রায়হান, পঞ্চগড়
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ২২
Thumbnail image

শুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার পাদদেশে উত্তরের শীতপ্রধান সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ফুটেছে রূপলাবণ্যে ভরা টিউলিপ। শীতপ্রধান দেশের এই ফুল বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চাষ করছেন ক্ষুদ্র চাষিরা। এই জেলায় কয়েক মাসজুড়ে শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে বলে টিউলিপ চাষের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষ করা সম্ভব।

টিউলিপ মূলত বর্ষজীবী ও শীতপ্রধান দেশের বসন্তকালীন ফুল। বিশ্বে প্রায় দেড় শ প্রজাতির টিউলিপ ফুল দেখা যায়। অনিন্দ্যসুন্দর এই ফুল ন্যূনতম ১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। শীতকালে বাংলাদেশে এই ফুল চাষের সম্ভাবনার কথা আগেই জানা গিয়েছিল। তবে এবারই পরীক্ষামূলকভাবে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এই ফুলের চাষ করা হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন।

উপজেলার দর্জিপাড়া ও সারিয়ালজোত গ্রামে গত ১ জানুয়ারি ৪০ শতক জমিতে ছয় প্রজাতির ৪০ হাজার টিউলিপের বীজ রোপণ করেন আট চাষি। এরই মধ্যে টিউলিপ ফোটা শুরু হয়েছে বাগানে। এতে চাষিদের মুখেও ফুটেছে হাসি। তাঁরা আশা করছেন, সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারলে লাভবান হবেন। সারিয়ালজোত গ্রামের আয়শা আক্তার বলেন, ‘টিউলিপ ফোটা নিয়ে খুব আশঙ্কায় ছিলাম। আমি পাঁচ শতক জমিতে পাঁচ হাজার চারা লাগিয়েছি। ইএসডিও সহযোগিতা করেছে। ফুল ফোটায় আমি অভিভূত। লাভের মুখ দেখলে আগামী মৌসুমে আরও বেশি করে টিউলিপ চাষ করব।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২৫ থেকে ২৮ দিনের মাথায় ফুল ফোটার কথা থাকলেও তেঁতুলিয়ায় ২৩ দিনের মাথায় টিউলিপ ফোটা শুরু করেছে। অনেকেই এখন তেঁতুলিয়ায় যাচ্ছেন বাগানভরা টিউলিপের সৌন্দর্য দেখতে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ আল আমিন বলেন, ‘আমি শুনেই ছুটে এসেছি দেখতে। আমি বিস্মিত। তেঁতুলিয়ায় টিউলিপ দেখব কখনো ভাবিনি।’

ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, টিউলিপ ঠান্ডার দেশের ফুল। যেখানে যত বেশি ঠান্ডা, সেখানে এই ফুল ভালো ফোটে। শীতকালে তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। তাই এখানে পরীক্ষামূলক টিউলিপ চাষের পরিকল্পনা করা হয়। সুইজারল্যান্ড থেকে টিউলিপের বীজ কিনে এনেছেন তাঁরা। প্রতিটি বীজ প্রায় ৬৫ টাকায় কেনা হয়েছে। প্রথমবারেই ফুল ফোটায় তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে তেঁতুলিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষ সম্ভব। মূলত ক্ষুদ্র চাষিদের সহযোগিতা এবং পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্য তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা টিউলিপ বাজারজাত করতে উদ্যোগ নিয়েছি। কিছু ফুল ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ক্ষুদ্র চাষিদের মাধ্যমে টিউলিপ চাষ করে তেঁতুলিয়ায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত