আ.লীগের প্রধান বাধা ‘বিদ্রোহী’

বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ০৫: ৫২
আপডেট : ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৯

তৃতীয় ধাপে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আগামী ২৮ নভেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাতটিতেই দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগ নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এতে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। আর অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর অভিযোগ, চকরিয়ায় তাঁদের বিজয়ের প্রধান বাধা দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এ ছাড়াও কিছু ইউনিয়নে নেতারা প্রকাশ্যে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করছেন, কিছু ইউনিয়নে তা করছেন গোপনে। তবে এমন পরিস্থিতিতেও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের নীরব ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলায় দলের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তবে এতে অনেকেই সাড়া দেননি। তা ছাড়া তিনটি ইউপিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী (লাঙ্গল) ও দুটিতে ইসলামী আন্দোলনের (হাতপাখা) প্রার্থী রয়েছে। বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও ছয়টি ইউপিতে দলটির নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

লক্ষ্যারচর ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মহিউদ্দিন মো. আওরঙ্গজেব বুলেট। এখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সাইকুল ইসলাম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ছেন।

কাকারা ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত ওসমানের ওপরই আস্থা রেখেছে দল। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন সাহাব উদ্দিন ও মোহাম্মদ ইছমত ই ইলাহী নামের দুই আওয়ামী লীগ নেতা। এই ইউনিয়নে বিএনপির কোনো নেতা প্রার্থী হননি।

কোনাখালীতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জাফর আলম ছিদ্দিকী। তবে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদারুল হক সিকদার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

পূর্ব বড়ভেওলায় ইউপিতে দলটির প্রার্থী ফারহানা আফরিন মুন্না। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ছেন ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামরুজ্জামান সোহেল।

বদরখালীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন নুরে হোছাইন আরিফ। এ ইউপিতে দলটির মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানার সহসভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বিদ্রোহী হিসেবে লড়ছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন বিএনপিনেতা আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির।

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বহিষ্কার, আবিষ্কার বলতে কিছুই নেই। ভোটারদের সম্মান রক্ষার্থে প্রার্থী হয়েছি।’ মাঠপর্যায়ে জনমত যাচাই না করেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

পশ্চিম বড়ভেওলায় বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এবারও নৌকার প্রার্থী। মনোনয়ন না পেয়ে এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট রবিউল এহেছান লিটন। এ ইউপিতেও বিএনপির কোনো নেতা লড়ছেন না।

কৈয়ারবিলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জন্নাতুল বকেয়া। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আফজল উর রহমান চৌধুরী। তবে আগের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে করে জয়ী চেয়ারম্যান মক্কি ইকবাল এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন নির্বাচনী মাঠে।

তবে ভেওলা মানিকচর, সাহারবিল ও ঢেমুশিয়ায় কোনো আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হননি। তবে এসব ইউপিতে লড়াইয়ে রয়েছেন বিএনপির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেউই দলের প্রার্থীর বিরোধিতা করলে, দলে আর স্থান হবে না।’ এমনকি কোনো নেতা যদি দলের বিপক্ষে কাজ করেন তাঁদেরও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত